স্তন ক্যানসার। তবে কোনও মহিলার নয়, পুরুষের। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। অস্তিত্ব রয়েছে এমন রোগেরও। বিরল হলেও একইভাবে প্রাণঘাতী। তাই সতর্কতা আশু প্রয়োজন। ঠিক কীভাবে বোঝা যায় এই রোগ? আক্রান্ত হন কোন বয়সের পুরুষরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
স্তন ক্যানসার! একটা নির্দিষ্ট বয়স পেরিয়ে গেলে প্রায় প্রত্যেক মহিলারই এই নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত। তবে, কেবল মহিলা নয়, পুরুষদেরও এই বিষয়ে একইভাবে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা বলছে, বিরল হলেও পুরুষের স্তন ক্যানসার বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
:আরও শুনুন:
শাড়ি পরতে ভালোবাসেন! সাজগোজের অজান্তে ‘পেটিকোট ক্যানসার’ ডেকে আনছেন না তো?
ক্যানসার মাত্রই মারণব্যাধী। বর্তমানে একথা বলা যায় না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে ধরা পড়া ক্যানসারও সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। বিখ্যাত ক্রিকেটার যুবরাজ সিং থেকে শুরু করে একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী রয়েছেন, যাদের ক্যানসার বিজয়ের কাহিনি সকলকে মুগ্ধ করে। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে এই রোগ হতে পারে। তবে মহিলাদেহের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ অঙ্গের ক্যানসার, পুরুষদের হওয়া সম্ভব নয়। এই যেমন জরায়ু ক্যানসার। ঠিক সেরকম প্রস্টেট ক্যানসারও মহিলাদের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু স্তন ক্যানসার? মোটের উপর সকলেই প্রায় মনে করেন, এই রোগও কেবলমাত্র মহিলাদের হতে পারে। কিন্তু না, পুরুষরাও একইভাবে এই রোগের শিকার হতে পারেন। বিশেষ করে যাদের বয়স ৬০ পেরিয়েছে। আসলে, পুরুষের দেহে স্তনগ্রন্থি মহিলাদের মতো উন্নত নয়। তবে তার অস্তিত্বই নেই এমনটা ভাবা ভুল। আর সেখানেই ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপসর্গ বা লক্ষ্যণ মহিলাদের মতোই। তবে পুরুষের ক্ষেত্রে এই রোগ নির্ধারণ আরও খানিকটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, কারণ এমন কিছু হতে পারে, সেটাই বিশ্বাস করেন না অনেকে।
:আরও শুনুন:
‘স্তনকে কমলালেবু বলতে হবে কেন?’ ক্যানসার সচেতনতার বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি ডাক্তারেরই
অথচ, গবেষণা বলছে এই রোগের প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। মার্কিন মুলুকে চলতি বছরের শেষে অন্তত আড়াই হাজার পুরুষ আক্রান্ত হতে পারেন স্তন ক্যানসারে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু এখনও সব জায়গায় এ বিষয়ে সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না, তাই আক্রান্তের সংখ্যাও আরও অনেকটা বেশি হওয়ার আশঙ্কা চিকিৎসকদের। প্রথমে বুঝে গেলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। কিন্তু দেরিতে বুঝলে মহাবিপদ। এক্ষেত্রে শরীর থেকে স্তন বাদ দেওয়াও কঠিন। কারণ সেই অনুন্নত স্তন গ্রন্থী। সেক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমেই বিষয়টা নিরাময় করতে হয়। রোগের কারণও আলাদা কিছু নয়। মানে অতিরিক্ত মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন কিংবা অতিরিক্ত মেদ ক্যানসার ডেকে আনতে পারে। আরও একটা সমস্যা হল এই রোগ শরীরে বাসা বেঁধেছে তা রোগী নিজেও ঠিকমতো বুঝতে পারেন না প্রথমে। কারণ চরমে না পৌঁছলে ব্যথা হয় না। বড়জোর স্তনের কাছে ফোলা টিউমরের অতো অংশ দেখা যেতে পারে। কিংবা পুরুষ স্তনগ্রন্থী থেকে কিছু রসজাতীয় নিঃসৃত হতে পারে। এমন কিছু বুঝলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ক্যানসারের যাবতীয় সচেতনতা কর্মসূচিতে একটা কথাই বারে বারে বলা হয়, যে আগেভাগে বুঝতে পারলে এই রোগ সারানো সম্ভব। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। সচেতন থাকলেই নিজেকে সুস্থ রাখা যাবে। তাই বয়স বাড়লে জীবনযাপনের পদ্ধতি বদলের পাশাপাশি নিয়মিত এই ধরনের রোগ শরীরে বাসা বাঁধল কি না, তা পরীক্ষা করাও একান্ত জরুরি।