সদ্যই শেষ হয়েছে পুজোর ছুটি। কিন্তু তার রেশ এখনও যায়নি। টানা কয়েকদিনের হই হুল্লোড় ভুলে কাজে বা পড়ায় মন বসছে না অনেকেরই। সেইসঙ্গে গোল বেঁধেছে পেটও। লাগামছাড়া ভুরিভোজের জেরে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। তবে বাড়িতেই মিলতে পারে সুরাহা। ঠিক কী করবেন? আসুন শুনে নিই।
প্রথমে দুর্গাপুজো, তারপর লক্ষ্মী। টানা কয়েকদিন রাতজেগে ঠাকুর দেখা, তারপর লক্ষ্মীপুজোয় ভরপেট মিষ্টি, মুড়কি, নাড়ু। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে বিরিয়ানি, পিজ্জা, কোল্ড ড্রিংক্স সবই। তবে সেই দেদার খাওয়াদাওয়ার ফল ভুগতে হচ্ছে এখন। কারও রীতিমতো পেট খারাপ, তো কারও একলাফে বেড়েছে ওজন। এদিকে লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে সঙ্গে সব ছুটিও শেষ। এবার পুরনো রুটিনে না ফিরে আর উপায় নেই। এক্ষেত্রে রোজের রুটিনে যোগ করুন কয়েকটা বিশেষ খাবার, রাখতে পারেন কিছু বিশেষ পানীয়ও। আর তাতেই কাজ হবে ম্যাজিকের মতো। যেমন কমবে ওজন, তেমনই দ্রুত চাঙ্গা হবে শরীর।
আরও শুনুন: দীর্ঘ পুরুষাঙ্গ মানেই চরম সুখের চাবিকাঠি! কী বলছেন মহিলারা?
দুর্গাপুজোর পর শরীর খারাপ কোনও নতুন ব্যাপার নয়। একদিকে এই সময়টায় সিজন চেঞ্জের, ফলে একটু অসাবধান হলেই ঠাণ্ডা লাগা। অন্যদিকে অতিরিক্ত বাইরের খাবার খেয়ে পেটের গন্ডগোল। সব মিলিয়ে পুজোর পর কার্যত বেহাল অবস্থা হয় অনেকেরই। এক্ষেত্রে রীতিমতো কার্যকর হতে পারে কিছু সাধারণ পানীয়। যা আপনার শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করবে। তালিকায় প্রথমেই রয়েছে লেবু আর আদা মেশানো জল। এমনিতেই সকালে উঠে গরম জলে লেবু দিয়ে খেলে তা ডিটক্স হিসেবে কাজ করে। তবে আরও ভালো ফল পেতে এর সঙ্গে মিশিয়ে দিন আদার কুচি। এতে মেদও ঝরবে দ্রুত আর শরীরও সুস্থ থাকবে। একইভাবে শসা আর পুদিনার পানীয়তেও হতে পারে দারুন কাজ। রাতে ঘুমানোর আগে এক বোতল জলে কয়েক টুকরো শসা দিন। সেইসঙ্গে মিশিয়ে দিন পুদিনা পাতা। তারপর রাতভর তা ভেজার জন্য রেখে দিন। সকালে উঠে সেই জল খেলেই কাজ হবে। এক্ষেত্রে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে সবথেকে বেশি কাজ হবে দারচিনি এবং মধুর মিশ্রণে তৈরি পানীয়তে। দারচিনি একইসঙ্গে অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদানে সমৃদ্ধ। অন্যদিকে মধুর রয়েছে নানা ভেষজ গুণ। তাই এই দুয়ের জুটিতে কাজ হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই। তবে এই পানীয় বিশেষভাবে প্রস্তুত করতে হয়। প্রথমে এক কাপ জল নিন। তার মধ্যে মিশিয়ে দিন দারচিনি এবং মধু। তারপর সেই জল বেশ কিছুক্ষণ ধরে ফোটান। এরপর ঠাণ্ডা করে ছেঁকে নিন। তারপর সেই জল খেতে পারেন। এতে একদিকে যেমন ডিটক্সের কাজ হবে, তেমনই দ্রুত ঝরবে ওজন। তবে এতো গেল পানীয়ের কথা। এবার আসা যাক কিছু খাবারের প্রসঙ্গে। পেট ঠাণ্ডা করতে যথেষ্ট কাজ দেয় টক দই। তাই খাবারের তালিকায় অবশ্যই দই রাখতে পারেন। একইসঙ্গে এর জেরে ওজনও ঝরবে। এছাড়া বেশি করে ফল খেতে পারেন। ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর সব উপাদান রয়েছে একাধিক ফলে। একইসঙ্গে এগুলি হজমশক্তিও বাড়ায়। তা ছাড়া শরীরের যাবতীয় দূষিত পদার্থ শোষণ করে নেয় ফল। খেয়াল রাখে চুল এবং ত্বকেরও। তাই ফল খেলে কাজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্টই। এছাড়া নিয়ম করে রসুন খান। যা লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া রসুন কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
আরও শুনুন: বাথরুমের গোপন অভ্যাসেই মিলবে ব্যক্তিত্বের পরিচয়, জানেন কীভাবে?
তবে বেলাগাম খাওয়া দাওয়ায় রাশ না টানলে কোনওভাবেই সমস্যা মিটবে না। তাই পুজো শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চেষ্টা করুন বাইরের খাবার একেবারে কমিয়ে দেওয়ার। অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও স্রেফ বাড়ির হালকা খাবারেই দিন কাটান। তবে আরও একটা সমস্যা হতে পারে, তা হল ক্লান্তির। সেক্ষেত্রে সকালে উঠে কাঠবাদাম, খেজুর, কলা এইসব খেতে পারেন। ব্রেকফাস্টে অবশ্যই ডিম রাখুন। এইভাবে কয়েকদিন কাটাতে পারলেই শরীর চাঙ্গা হবে ফের।