হস্তমৈথুন কিংবা নিয়মিত যৌনতা! শারীরিক সক্ষমতা থাকলে তা করাই যায়। তবে, তাতে কি দিনে দিনে কমে যায় বীর্য! ঘাটতি হয় বীর্যের পরিমাণে! অনেকের মনেই আছে এ প্রশ্ন। উত্তরে কী বলছে গবেষণা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
হস্তমৈথুন নিয়ে আমাদের মনে নানা ধারণার আলো-ছায়া। ব্যাপারটার মধ্যে খানিক গোপনীয়তা আছে। আর তাই অনেকেই হস্তমৈথুনের কথা স্বীকার করতে লজ্জা পান। তার উপর ছড়াছড়ি ভুল ধারণার। তবে বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এই অভ্যাসকে খাটো করে দেখেন না। বরং হস্তমৈথুনের ভালো দিকও তুলে ধরেন তাঁরা।
আরও শুনুন: সময়ের অভাবে যৌনতার স্বাদ ভুলেছেন, শরীরের কী ক্ষতি হচ্ছে জানেন?
অনেক পুরুষই ভেবে থাকেন যে, হস্তমৈথুনের কারণেই বোধহয়য় দ্রুত বীর্যপাতের সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের নিশ্চিতই কিছু খারাপ দিক আছে। তবে প্রিম্যাচিওর ইজেকুলেশনের ক্ষেত্রে সহায় হতে পারে হস্তমৈথুনের অভ্যাস। অর্গ্যাজমকে দীর্ঘ করার অনেকরকম উপায় আছে, তার মধ্যে এটি একটি। বলা হয় যে, হস্তমৈথুনের সময় অর্গ্যাজমের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়ে কেউ পুরো প্রক্রিয়াটিই থামিয়ে দিতে হবে। এই অভ্যাসের দরুণ মস্তিষ্কের কাছে বার্তা পৌঁছায়। অর্গ্যাজমের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে। এর ফলে সঙ্গম প্রক্রিয়াও দীর্ঘ হয়। অর্থাৎ সঙ্গমে সহায়ক হয়ে ওঠে হস্তমৈথুন।
তবে, সেই সঙ্গেই চলে আসে আর-একটি প্রশ্ন। নিয়মিত যাঁরা হস্তমৈথুন করেন, তাঁদের বীর্যের পরিমাণ কি দিনে দিনে কমতে থাকে? প্রশ্নটা অবশ্য শুধু হস্তমৈথুনেই সীমাবদ্ধ নয়। নিয়মিত যাঁরা যৌনতায় রত হন, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন প্রযোজ্য। এক্ষেত্রেও একটি প্রচলিত ধারণা কাজ করে। তা হল, নিয়মিত যৌনতায় কমে যায় বীর্যের পরিমাণ। কিংবা কমজোরি হয় শুক্রাণু। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গবেষণা করেছিল ‘ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ হিউম্যান রিপ্রোডাকশন এবং এমব্রায়োলজি’ নামক এক সংস্থা। সেখানকার বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারণা সঠিক নয়। যাঁরা প্রায় প্রতিদিন যৌনতায় লিপ্ত হন, বা বীর্যক্ষরণ যাঁদের নৈমিত্তিক, তাঁদের বীর্যের গুণগত মানে ক্ষতি হয় না। বরং দেখা যায়, যাঁরা নিয়মিত অর্গ্যাজম উপভোগ করেন, দিন সাতেক পরে তাঁদের ‘সিমেন কোয়ালিটি’ অনেক ভালো হয়। বরং যাঁরা নিয়মিত চূড়ান্ত সুখ থেকে নিজেদের বঞ্চিত রাখেন, তাঁরাই এই নিরিখে পিছিয়ে থাকেন।
আরও শুনুন: তৃপ্তির আগেই শেষ যৌনতা! সময় বাড়াতে কার্যকর হতে পারে হস্তমৈথুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দম্পতিদের সন্তানধারণের ক্ষেত্রে সামান্য সমস্যা দেখা যায়, তাঁদের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এই ফলাফল। বীর্যের পরিমাণ এবং শুক্রাণুর মান দুইয়েরই উন্নতি হবে যদি নিয়মিত যৌনতার অভ্যাস জারি থাকে। শুক্রাণুর ডিএনএ ড্যামেজ হওয়ার দরুণ যে ক্ষতি হয়, তা এর ফলে রদ হয়। অর্গ্যাজমই বরং তা জোরদার করে তুলতে পারে। ফলত ফার্টিলিটির সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যায়। নিয়মতি যৌনতা তাই ক্ষতিকর অভ্যাস নয়, বরং জরুরিই।