আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। বছর ঘুরে আবার ঘরে ফিরবেন উমা। ফের আলোয় আলোয় সাজবে শহর। যা দেখার জন্য সারারাত জাগতেও আপত্তি নেই অনেকেরই। কিন্তু পায়ে হেঁটে উত্তর থেকে দক্ষিণ সবটা ঘোরা অসম্ভব। তাই গাড়িই ভরসা। কিন্তু যাঁদের মোশান সিকনেশ রয়েছে? তাঁরা কীভাবে ঠাকুর দেখবেন? আসুন শুনে নিই।
অনেকের কাছেই পুজো মানে প্যান্ডেল হপিং। সারারাত জেগে গোটা কলকাতা ঘুরে ফেলতে হবে। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবে পেটপুজো। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও এই আনন্দে সামিল হতে পারেন না কেউ কেউ। কারণ পায়ে হেঁটে সবটা ঘোরা সম্ভব নয়। এদিকে গাড়িতে উঠলেই শুরু হবে অস্বস্তি। বমি বমি ভাব, সেইসঙ্গে মাথা ঘোরা। সবমিলিয়ে গোটা পুজোটাই মাটি। কিন্তু কয়েকটা সহজ কাজ করলেই এই সমস্যা মিটতে পারে।
আরও শুনুন: স্বপ্নাদেশে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার, ৪৫০ বছর ধরে বাগবাজারের হালদারবাড়িতে পুজো কষ্টিপাথরের দুর্গার
ডাক্তারির ভাষায় একে বলে ‘মোশন সিকনেস’। গাড়িতে উঠলেই যে সমস্যা হবে তা নয়। তবে পাহাড়ি রাস্তায় কিংবা গাড়ি যেদিকে চলছে তার উলটো দিকে মুখে করে বসলে সমস্যা হতে পারে। আসলে, গাড়ি চললেও ভিতরে যারা থাকেন তাঁরা স্থির অবস্থাতেই থাকেন। এক্ষেত্রে যাঁদের মোশন সিকনেস রয়েছে তাঁদের মধ্যে অদ্ভুত এক অস্বস্তি কাজ করে। পাহাড়ি রাস্তায় এমনিতেই অনেক বাঁক, তাই সেক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেশি হয়। পুজোর সময় এই সমস্যার জেরে অনেকে গাড়িতে উঠতেই ভয় পান। একে ভিড়, তার মধ্যে জ্যাম। সুতরাং শরীর খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে সেই সমস্যা কাটাবেন?
আরও শুনুন: Durga Puja 2023: চাইনিজ-মোগলাই নয়, নিখাদ বাঙালি খাবারেই হোক পুজোয় পেটপুজো
অনেকেই মনে করেন এই সমস্যা, মানসিক। তবে তা একেবারেই নয়। তাই এর হাত থেকে রেহাই পেতে প্রথমেই কিছু ওষুধের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে একবার কোনও চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ওষুধের নাম জেনে নিন। তবে মাথায় রাখতে হবে, গাড়িতে ওঠার অন্তত ২ ঘণ্টা আগে সেই ওষুধ খেয়ে নেওয়ার কথা। কারণ এইধরনের ওষুধ কাজ করা শুরু করে দেরিতে। তাই অস্বস্তি শুরু হওয়ার পর ওষুধ খেয়ে কাজ হবে না। এছাড়া মাথায় রাখতে হবে গাড়িতে কোন দিকে বসছেন সেই দিকের কথাও। মোশন সিকনেস থাকলে গাড়ি যেদিকে চলছে তার উলটো দিকে না বসাই ভালো। যে কোনও গাড়িতে ওঠার আগেই এই ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে। গাড়ির সব জানলা খুলে রাখুন। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে এসি চালাবেন না। ভিতরে হাওয়া চলাচল করলে সমস্যা অনেকটাই কমবে। এছাড়া গাড়ি চলতে শুরু করলে মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। কিংবা কোনও বই পড়লেও রীতিমতো সমস্যা হতে পারে। সবথেকে ভালো হয় যদি অন্যদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাতে পারেন। কিংবা গান শুনলেও সমস্যা অনেকটাই কমতে পারে। একইসঙ্গে যাঁদের এই ধরনের সমস্যা আছে তাঁরা ভারী খাবার খেয়ে গাড়িতে উঠবেন না। মদ্যপানও এড়িয়ে যাওয়াই মঙ্গলের। তবে জল খেতে পারেন। তবুও যদি সমস্যা হয় তাহলে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অপেক্ষা করুন। সিটের মধ্যে শোওয়ার ব্যবস্থা থাকলে অবশ্যই কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। তবে পুজোর ভিড়ে সে সুযোগ মেলা ভার। তাই একসঙ্গে দল বেঁধে ঘুরতে বেরোন। সেক্ষেত্রে গাড়ির মধ্যে অন্যদের সঙ্গে গল্প করার সুযোগ থাকলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে গাড়ির কোন দিকে বসছেন সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। তবুও আগে থেকেই নিশ্চিন্ত থাকতে একটা ওষুধ খেয়ে নিন। আর মনে করে জল খান নিয়মিত। ব্যাস তাহলেই প্যান্ডেল হপিং-এ কোনও সমস্যাই হবে না।