শীতকালে ঝুঁকি বাড়ে হৃদরোগের। এমনটা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাই। নেপথ্যে বিশেষ কারণও রয়েছে। তবে আগেভাগে বুঝে নিলে সাবধান হওয়াই যায়। ঠিক কী করতে হবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
দুয়ারে হাজির শীতকাল! কমলালেবু আর মোয়ার গন্ধ মেখে ব্যালকনিতে খেলা বেড়াচ্ছে মিঠে রোদ। শীতকাল নিয়ে কতই না উন্মাদনা, আনন্দ! কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়, ঠাণ্ডায় শরীরের যত্ন না নিলে, বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঋতুতেই হৃদরোগের আশঙ্কা সবথেকে বেশি থাকে।
কথায় আছে, বিপদ বলে কয়ে আসে না! শরীর খারাপের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না বললেই চলে। সাধারণত বড় কোনও রোগ আগেভাগে জানিয়েই আসে। সেক্ষেত্রে সাবধান হলে বিপদ এড়ানো সম্ভব। হৃদরোগের কথাই ধরা যাক। এ দেশে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা নেহাতই কম নেই। সবসময় যে আগেভাগে বোঝা যাবে তাও না, কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু শেষ হয়ে যেতেই পারে। সমীক্ষা বলছে, শীতকালেই হৃদরোগের ঝুঁকি সর্বাধিক। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রায় ৫৩% বেশি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এমনটা হয়? প্রাথমিক কারণ অবশ্যই তাপমাত্রা কমে যাওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে ২% ঝুঁকি বাড়ে হৃদরোগের। তাপমাত্রার কারণেই এইসময় রক্তচাপ বেশি থাকে। শরীরের রক্তবাহী নালী সংকুচিত হওয়ার জেরেই এমন সমস্যা। বিশেষ করে যেখানে বরফ পড়ে, সেইসব জায়গায় হৃদরোগের আশঙ্কা সবথেকে বেশি। সাবধান হওয়ার উপায়ও রয়েছে।
প্রথমেই পোশাকের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ফ্যাশনের দেখাতে গিয়ে অনেকেই শীতকালে তেমন মোটা জামাকাপড় পরেন না। এতে সমস্যা বাড়বে বই, কমবে না! শরীরের তাপমাত্রা প্রয়োজনের চাইতে বেশি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তার প্রভাব পড়ে হার্টের উপর। তাই প্রয়োজন মতো গরম জামাকাপড় পরলে সমস্যা নেই। একইসঙ্গে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে। এমনিতেই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। শীতকালেও তা ভুললে চলবে না। খুব বেশি প্রয়োজন নেই, নিয়মিত এক ঘণ্টা ঘাম ঝড়ানোই যথেষ্ট। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবার খেলে সমস্যা হবেই, তাই শীতকালে এই দিকটাও খেয়াল রাখা একান্তভাবে প্রয়োজন। বিশেষ করে, তরুণদের আলাদাভাবে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে এই প্রজন্মের সবথেকে বেশি মাথাব্যথার কারণ যেটি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হল মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। তার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অ্যালকোহলের আশ্রয় নেন অনেকেই। শীতের সন্ধেয় জমে ওঠে মদ্যপানের আসর। কিন্তু এর ফলে শরীরে যে হরমোনগত পরিবর্তন হয়, তা সরাসরি হৃদরোগের কারণ হতে পারে। তাই আগে থেকে সতর্ক হয়া একান্ত প্রয়োজন। মোটের উপর বদল আনতে হবে জীবনযাত্রায়। তাহলেই হৃদরোগের মতো বিপদ এড়ানো সম্ভব, দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।