কাঁচা অবস্থায় সবুজ, আর পেকে গেলে হলুদ। সাধারণভাবে এই দুই রঙের কলাই বাজারে দেখা যায়। কিন্তু লাল রঙের কলার কথা শুনেছেন কখনও? না, একেবারেই লাল রং করা কলা নয়। প্রাকৃতিক ভাবেই উৎপন্ন হয় এই অদ্ভুত দর্শন কলা। খেতে কেমন? খাদ্যগুণই বা কী রয়েছে এতে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সস্তায় পুষ্টিকর ফল হিসেবে কলা-র জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিনের জলখাবারের তালিকাতেও অনেকেই এই ফল রাখেন। সাধারণত সবুজ বা হলুদ রঙের কলা-ই দেখে থাকি আমরা। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্য আমেরিকায় লাল রঙের খোসাযুক্ত কলা দেখা যায়। কোনও বাইরের রং নয়। প্রাকৃতিক ভাবেই নাকি ওইসব অঞ্চলে জন্ম নেয় এই লাল রঙের কলা বা রেড ব্যানানা।
আরও শুনুন: কন্ডোম, লিপস্টিক বা চকোলেট, সবই নাকি আমিষ! জানেন কি?
তবে দেখতে ‘কলা’ হলেও এর স্বাদ কিন্তু ঠিক সাধারণ কলার মতো না। এই ধরনের কলা নাকি খেতে কিছুটা হলেও আমের মতো। আবার অনেকের মতে, এই কলায় লাল রাস্পবেরির স্বাদ পাওয়া যায়। সম্পূর্ণভাবে পেকে যাওয়া রেড ব্যানানা সাধারণ হলুদ রঙের কলার তুলনায় নাকি বেশি মিষ্টিও হয়। তবে ভেতরের অংশ উভয় ক্ষেত্রেই দেখতে প্রায় একই।
এবার আসা যাক খাদ্যগুণের কথায়। একটি সাধারণ ওজনের রেড ব্যানানায় প্রায় ২৩-২৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ভিটামিন উপাদানেও সমৃদ্ধ এই কলা। ফলত, শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে এই রেড ব্যানানা। সেই তালিকায় প্রথমেই বলতে হয় কিডনি স্টোনের কথা। চিকিৎসকদের মতে কিডনিতে পাথর জমলে পটাশিয়াম সাইট্রেটের দ্বারা তা নির্মুল করা সম্ভব। যার অন্যতম উৎস এই লাল রঙের কলা। তাই কিডনি স্টোনের অন্যতম ওষুধ হিসেবে এই রেড ব্যানানা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক চিকিৎসকই। এরপর বলতে হয় হিমোগ্লোবিন বা লোহিত রক্ত কণিকার কথা। রক্তে এই কণিকার অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন রোগের শিকার হতে পারেন যে কেউ। কিন্তু বিভিন্ন ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর রেড ব্যানানা নাকি সেই হিমগ্লোবিনের চাহিদাও মেটাতে পারে। ফলত নিয়মিত লাল কলা খেলে দেহে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতিও তৈরি হয় না। একইসঙ্গে এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলি ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ফলে তৈরি হওয়া অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। ফলে এই কলা ধূমপানের অভ্যাস ছাড়াতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনকি মানুষের দেহের, প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলির অন্যতম উৎস হিসেবে এই কলা, চুল ও চোখের যত্নও নিয়ে থাকে।
আরও শুনুন: সহায় সারোগেসি! ক্যানসার আক্রান্ত বান্ধবীকে মাতৃত্বের স্বাদ দিলেন মহিলা
যদিও রেড ব্যানানার উপকারিতার তালিকা এখানেই শেষ নয়। লাল কলার যাবতীয় খাদ্যগুণের বেশ কিছুটা থাকে এর খোসার মধ্যে। তাই অনেক জায়গায় এই কলার খোসাগুলি শুকিয়ে এক বিশেষ ধরনের চা বানানো হয়। সেই চা খেলেও বহু উপকার পাওয়া যায়। ওজন কমাতে, দেহে পুষ্টির জোগান দিতে, রূপচর্চায়, এমনকি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এর প্রয়োজনীয়তা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। বলা বাহুল্য, হলুদ খোসাযুক্ত পাকা কলার তুলনায় এই রেড ব্যানানার গুণ ও মানবদেহে এর প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই বেশি।