যৌনতা শেষে প্রস্রাব বা মূত্রত্যাগ। অনেকের কাছে এটা একটা অভ্যাস। কেউ কেউ আবার ভাবেন, অবাঞ্ছিত প্রেগন্যান্সি আটকাতেও তা কার্যকরী? সেই ধারণা কতখানি সঠিক? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
যৌনতার আনন্দ তৃপ্তি উপভোগ এক জিনিস। আর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সিদ্ধান্ত আর এক জিনিস। যৌনতায় লিপ্ত হচ্ছেন মানেই যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা হতে চাইছেন, তা তো নয়। আর তাই অনেকেই এই ক্ষেত্রে নানা সাবধানতা অবলম্বন করেন। তবে অনেক সময়ই এমন মুহূর্ত আসে যে, যখন যৌনতায় সাবধানতার বিষয়গুলি মাথায় রাখা সম্ভব হয় না। অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ রুখতে অবশ্য অন্যান্য উপায়ও আছে। তবে, এই একই ব্যাপারে একটা ধারণা অনেকেরই থাকে; তা হল, সঙ্গম শেষেই যদি প্রস্রাব হয় তবে শুক্রাণু যোনিপথ থেকে বেরিয়ে যায়। তাতে কমে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সম্ভাবনা। সে ধারণা কতটা ঠিক, তা জানার আগে জেনে নেওয়া যাক, আদৌ এই অভ্যাসের গুরুত্ব আছে কি-না।
আরও শুনুন: রোজ হস্তমৈথুনে দিনে দিনে কমে বীর্য! নাকি উলটো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন…
সঙ্গম শেষে প্রস্রাব বা মূত্রত্যাগ যে একেবারে অর্থহীন অভ্যাস, তা কিন্তু বলা যায় না। পুরুষ-নারী দুজনের ক্ষেত্রেই তা কার্যকর। তবে, মূলত তা সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রে। ব্যাকটিরিয়া ঘটিত যে সংক্রমণ সঙ্গমের দরুন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়, তা খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই অভ্যাস। যদিও চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এটাই কিন্তু একমাত্র পদ্ধতি নয়। আর এর ফলেই যে সংক্রমণের দুয়ার একেবারে বন্ধ হবে, তা-ও নয়। ফলে, এক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। সাধারণ ভাবে মনে করা হয়, সঙ্গমের ৩০ মিনিটের মধ্যে প্রস্রাব করলে এই সংক্রমণের ঝুঁকি খানিকটা কমে। বিশেষত মহিলারা, যাঁরা ইউটিআই-এর শিকার তাঁদের ক্ষেত্রে এতে বরং উপকারই হবে। এমনকী যাঁরা ভুক্তভোগী নন, তাঁদেরও উপকার বই ক্ষতি হবে না।
আরও শুনুন: শুকনো লাগছে স্তন! অন্তর্বাসের কারণেই কি সমস্যা, নাকি নেপথ্যে অন্য কারণ?
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে সঙ্গম শেষে প্রস্রাবের অভ্যাস একেবারে খারাপ নয়। এবার আসা যাক গর্ভধারণ সংক্রান্ত ধারণার বিষয়টিতে। সঙ্গম শেষে মূত্রত্যাগ করলেই কোনও ভাবেই শুক্রাণুর বেরিয়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ এই অভ্যাস কোনও ভাবেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। সাধারণ ভাবে যৌনাঙ্গের গঠন সম্বন্ধে আমাদের ধারণা ঝাপসা হওয়ার কারণেই এই রকম ধারণার জন্ম। কিন্তু শুক্রাণুর গমনপথ আর মূত্র নিঃসরণের পথ কোনও ভাবেই এক নয়। ফলত, সঙ্গম শেষে মূত্রত্যাগ প্রেগন্যান্সি রোধে সহায়ক হয় না। যদি কেউ অন্তঃসত্ত্বা হতে না চান, তবে সঙ্গমের সময় বা তার পরে জরুরি সতর্কতা নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। এমনটাই মনে করিয়ে দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।