শীত এলেই বাঙালির প্লেটে ভাত ছেড়ে রুটির আনাগোনা। বিশেষ করে রাতের খাবারে। গরম গরম রুটির সঙ্গে যে কোনও তরকারী মানিয়ে যায়। সঙ্গে নলেন গুড় হলে জমে ক্ষীর! কিন্তু গরম রুটি কি ক্যানসারের কারণ হতে পারে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শীতে চাই গরম রুটি! এই আবদার আট থেকে আশি অনেকের, কিন্তু এতে যদি লুকিয়ে থাকে ক্যানসারের বীজ? তাহলে নিশ্চয় আশঙ্কায় ভুগবেন কেউ কেউ। বিশেষ করে, শীত এলেই যারা ভাত ছেড়ে রুটিতে ফিরে যান। অনেকে ভাবেন, ভাতের বদলে রুটি খেলে প্রভাব পড়বে ওজনেও। তাতেও অবশ্য, ক্যানসারের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
প্রথমেই জানতে হবে, কেন রুটির সঙ্গে ক্যানসারের নাম জুড়ছে?
সহজ করে বললে, সরাসরি আগুনে সেঁকা খাবার হিসেবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরাসরি আগুনে সেঁকা যে কোনও খাবারেই বিশেষ কিছু ক্যেমিকাল জমতে পারে। যা ভবিষ্যতে ক্যানসারের সম্ভাবনা হয়ে ওঠে। এই ক্যেমিকালের তালিকায় এমন অনেক কিছুই রয়েছে, যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ। তালিকায় কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-ওক্সাইড আরও অনেক কিছু রয়েছে। এদিকে, স্বাদের টানে খাবারের সঙ্গে মিশে থাকা সেইসব সকলে খেয়ে চলেছেন। এর আগেও এই ধরনের খাবার নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেই তালিকায় রুটির নাম জোড়া কি আদৌ সঙ্গত?
এককালে রুটি সরাসরি গ্যাসের আগুনে সেঁকা হত না। কাঠের উনুনে রান্না হত, তাতে ক্ষতির সম্ভাবনাও কম ছিল। বর্তমানে গ্যাস আভেন ছাড়া রান্নার কথা ভাবাই যায় না! সেক্ষেত্রে রুটি তৈরিতেও ভরসা সেই গ্যাস স্টোভ। এখানেই রুটির মধ্যে ক্যানসারের কারণ হতে পারে এমন কিছু মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা আগুনে সেঁকা রুটিকে ক্যানসারের কারক হিসেবে চিহ্নিত করতে চান না। কারণ, ক্যানসারের বীজ জন্মাতে যে ন্যূনতম সময় প্রয়োজন, তার অনেক আগেই রুটি আগুন থেকে তুলে নেওয়া হয়। কেউ যদি অতিরিক্ত পোড়া রুটি খান, তার ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। তবে সাধারণ হাতরুটি, যা আদৌ সেই অর্থে পোড়েনি, তা খেলে ক্যানসার হওয়ার ভয় নেই। তবু বিষয়টা নিয়ে যখন চর্চা শুরু হয়েছে, তখন রুটি তৈরির বিশেষ পদ্ধতিও উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমেই বলা হচ্ছে, গোল রুটি যেন পর্যাপ্ত সময় ধরে সেঁকা হয়। অর্থাৎ রুটি গ্যাসের আগুনে দেওয়ার আগে ভালো করে চাটু বা তাওয়াতে সেঁকে নেওয়া। ঠিকমতো সেঁকে নিলে অনেক সময় আগুনে দেওয়ার দরকার ও পড়ে না। এই ধরনের রুটি খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ। তবে স্বাদের কারণে অল্প সময়ের জন্য আগুনে রুটি ওলট পালট করেই নেই সকলে, তাতে আর যাই হোক ক্যানসারের ভয় নেই। কিন্তু রুটি ছাড়াও যেসব খাবার সরাসরি গ্যাসের আগুনে পোড়ানো হচ্ছে, এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে হচ্ছে, তাতে অজান্তেই মিশে থাকতে পারে ক্যানসারের বীজ। এই ধরনের খাবার খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া নিতান্তই প্রয়োজন।