করোনার রুখতে বড়দের জন্য় আছে টিকা। কিন্তু ছোটদের, বিশেষত সদ্য়োজাতদের সুরক্ষাকবচ কী? অনেক মায়ের মনেই এই প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করছে। নতুন এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, এখানেও নির্বিকল্প হল মাতৃদুগ্ধ। শিশু স্তন্যপান করলেই তার শরীরে ঢুকতে পারে কোভিড অ্যান্টিবডি। তবে সেক্ষেত্রে, মাকে অবশ্যই একটা কাজ করতে হবে। কী সেই কাজ? আসুন বিস্তারিত শুনে নেওয়া যাক।
শিশুদের কাছে মাতৃদুগ্ধ অমৃতসমান। এ কেবল কথার কথা বা চিরকালীন বিশ্বাস নয়। পুষ্টি থেকে রোগ প্রতিরোধের যাবতীয় উপাদান শিশু পায় মাতৃদুগ্ধেই। এ কথা বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে প্রমাণিত সত্য। দেখা যাচ্ছে, কোভিড প্রতিরোধেও এর বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, মা যদি ভ্যাকসিন নিয়ে থাকেন, তবে স্তনদুগ্ধের মাধ্য়মেই কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি পেতে পারে সদ্য়োজাত।
আরও শুনুন – ওমিক্রনের প্রভাবে শরীর মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল! নিজেকে চাঙ্গা রাখবেন কীভাবে?
নতুন এই সমীক্ষা করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ম্য়াসাচুসেটস আমহার্স্টের একদল গবেষক। তাঁদের সমীক্ষার ফলাফল ও সিদ্ধান্ত একটি বিখ্য়াত জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার পরই আশার আলো দেখছে বিশ্ব। শিশুদের কোভিড প্রতিরোধ নিয়ে এতদিন চিন্তায় ছিলেন অভিভাবকরা। কেননা না আছে ওষুধ, না আছে টিকা। গবেষকরা এক্ষেত্রে অনেকটাই নিশ্চিন্ত করলেন বিশ্বকে।
আরও শুনুন – করোনা রোগীকে সামলাতে ব্যস্ত? সংক্রমণ রুখতে সতর্ক থাকুন নিজেও
প্রায় তিরিশ জন মা এই পরীক্ষায় শামিল হন। তাঁদের বেশিরভাগই আবার স্বাস্থ্যকর্মী। এঁরা প্রত্য়েকেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এঁদের স্তনদুগ্ধের নমুনা সংগ্রহ করা হয় তিন দফায়। ভ্য়াকসিন নেওয়ার আগে , প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর। প্রতি ক্ষেত্রেই, ভ্যাকসিন নেওয়ার নির্দিষ্ট দিন পরেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। দেখা যায়, ভ্য়াকসিন নেওয়ার পর প্রত্যেকের স্তনদুগ্ধেই প্রয়োজনীয় অ্য়ান্টিবডির দেখা মিলছে। এই মায়েদের সন্তান অর্থাৎ শিশুদের মলের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। সত্যিই শিশুদের শরীর সেই অ্যান্টিবডি পাচ্ছে কি-না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হন পরীক্ষকরা। সবরকম পরীক্ষা করার পরই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা। তাঁরা বলছেন, ভ্য়াকসিন নেওার পর যে যে মা অসুস্থ হয়েছিলেন, তাঁদের স্তনদুগ্ধে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। তাঁরা নিজেরা অসুস্থ হলেও, আখেরে তাঁদের সন্তানদের জন্য় উপকারই হয়েছে তাতে। দেখা যাচ্ছে, মাতৃদুগ্ধ পান করে এমন দেড় মাস বয়সি শিশু থেকে ২৩ মাস বয়সি শিশুদের শরীরে এই অ্যান্টিবডি থাকছে। SARS-COV-2 এর যে প্রোটিন স্পাইক তা তো এই অ্যান্টিবডি ভেঙে দিচ্ছেই, পাশাপাশি অন্য ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রেও তা সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। অর্থাৎ, মাতৃদুগদ্ধের মাধ্যমেই যে কোভিডকালে শিশুরা সুরক্ষা পাচ্ছে, তা একরকম নিশ্চিত।
বাকি অংশ শুনে নিন।