রাত বলে যাই যাই! কিন্তু খিদে আর যায় না। ডিনার সারা। এমন সময় খিদের ডাক আর ফ্রিজের দিকে ছুটে যাওয়া। যাকে বলে ‘লেট নাইট ক্রেভিং’। মিঠে বদভ্যেসই বটে, তবে যা ইচ্ছে তা-ই কি খাওয়া যায়! স্বাস্থ্যের কথাটাও তো একটু খেয়াল রাখতে হবে। তা একটু ফ্রিজ, খাবার টেবিল ঘেঁটে বরং দেখা যাক, কী কী খাওয়া যেতে পারে।
মিষ্টি ছাড়া সৃষ্টি অন্ধকার! আর সেই অন্ধকারে পছন্দের মিষ্টি মুখে পুরে যাকে বলে স্বর্গীয় স্বাদ আস্বাদন! তাও অনেক রাতে। মন একবার খাই-খাই করলে আর পালাই কোথায়! এদিকে নিজের ঘরের মধ্যেই রয়েছে চুরির ভাঁড়ার। মাঝে মাঝেই গিয়ে সেই ভাণ্ডারকে খুলে নাড়াচাড়া করে দেখা। নতুন কোনও মহামূল্যবান খুঁজে পাওয়া যায় কি-না! না না। সোনা-দানা হিরে-জহরত নয়। কিন্তু তার চেয়েও দামী। কী ভাবছেন? কীসের কথা বলছি? আর কিছু না, বাড়ির রসদদার ফ্রিজের কথাই বলছি। সারাদিন তার দিকে হাত তো বাড়াতেই হয়। এমনকী বাদ যায় না রাতও। ওজন বাড়ার টেনশন মাথায় এলে মনের মধ্যে একটু কুণ্ঠা জাগে বটে, কিন্তু জিভের খিদে যে কোনও ভাবেই সামলানোর নয়!
এমন খিদের কথা কারোরই অজানা নয়। রাত্তিরে ভরপেট খেয়েদেয়ে ঘুমের আয়োজন করছেন। হঠাৎ মনে হল কেমন যেন খিদে খিদে ভাব! অথচ খিদে তো এখন পাওয়ার কথা নয়। এ আসলে মনের খিদে। অতএব গুটিগুটি পায়ে হাঁটা দেওয়া বাড়ির ফ্রিজের দিকে। হাতের সামনে মিষ্টি বা যা পেলেন, তা দিয়েই আবার একচোট খাওয়া-দাওয়া। তবে যেন তৃপ্তি আসে।
তবে এ কি নেহাতই খিদের বাতিক? না-ও হতে পারে। এই হঠাৎ পাওয়া খিদের কারণ আছে বলেই মনে করেন অনেকে। সারাদিনের কাজের চাপে হয়তো আপনার ঠিকমতো খাওয়াই হয়নি। রাতে এসে ক্লান্ত শরীরে কোনোমতে চাট্টি মুখে দিয়েই বিছানায়। তার দরুনই রাতের বেলা ফের খাই-খাই বাতিক।
তা, খিদেয় অস্থির হয়ে গেলে করবেনটা কী? হাতের সামনে যা পাবেন তা-ই কি খাবেন? যতই হোক মিঠে বদভ্যেস, তবু স্বাস্থ্যরক্ষার কথাটি মাথায় রাখতে হবে তো! অতএব মনের খিদে হোক বা সত্যি, হাবিজাবি না খাওয়াই ভালো। বরং ড্রাই ফ্রুট বা চিজ কিউব থাকলে মুখে পুরে দেওয়া যেতেই পারে। অনেকেই চানাচুর বা ভাজাভুজি খেতে ভালোবাসেন। তবে শরীর বুঝে খাওয়াই ভালো। তবে, এরকম রাতবিরেতে খাওয়ার অভ্যেস থাকলে সল্টেড বাদাম রাখতে পারেন হাতের কাছে। ফ্রিজে না থাকলেও আলুর চিপস বা আলুর স্যালাড বা ছোটখাটো স্যান্ডুইচ কিন্তু বেশ কাজের। আর কিছু না থাকলে, ফ্রিজে তো আইসক্রিম থাকবেই। তা দিয়েও কাজ চালাতে পারেন। কিংবা ডার্ক চকোলেটের স্বাদে সেদিনের মতো খিদেকে আলবিদা জানাতে পারেন। আর একটু স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখলে, কয়েক টুকরো আপেল বরং খেয়ে নিন। সঙ্গে একটু পিনাট বাটার থাকলে আর কথাই নেই।
তাহলে স্বাদ আর সাধের সঙ্গে কোনও আপস আর নয়। মিঠে বদভ্যাসটি বহাল তবিয়তে বজায় রাখার হদিশ তো আপনি এতক্ষণে পেয়েই গিয়েছেন।