ফের বিশ্ব জুড়ে ভয়াল আকার নিচ্ছে করোনা। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে কড়াকড়ি। করোনা রুখতে সমস্ত রকম সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে, এসব এতদিনে জেনেই গিয়েছি আমরা। তবে এমন ভাইরাসের সঙ্গে যুঝতে সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োজন মজবুত ইমিউনিটি সিস্টেমেরও। কী ভাবে বাড়াবেন ইমিউনিটি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। শুনে নিন।
করোনার এ বারের স্ট্রেন, অর্থাৎ ওমিক্রন যেন আরও ভয়ঙ্কর। মারণ না হলেও সাংঘাতিক সংক্রামক এই ভাইরাসটি সোজা গিয়ে আঘাত হানছে ইমিউনিটি সিস্টেমের উপরে। তাই প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো। আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম আসলে সমস্ত ধরনের রোগজীবাণু বহনকারী কোষগুলির সঙ্গে লড়ে। এবং শরীরকে তাদের হাত থেকে বাঁচায়। তবে এমন কোনও খাবারদাবার বা পথ্য নেই, যা করোনা রুখতে বা আটকাতে পারে। কিন্তু এমন কিছু খাবার দাবার আছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
আরও শুনুন: সংক্রমণ রুখতে কোন ধরনের মাস্ক সবথেকে কার্যকরী? জেনে রাখুন খুঁটিনাটি
এই ধরনের খাবারের তালিকার একেবারে উপরের দিকে রয়েছে সাইট্রাসযুক্ত খাবার, যাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। সর্দিকাশির সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে এই ভিটামিনটি। রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ বাড়াতেও সহায়তা করে এটি, যা রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়ায়। আঙুর, কমলালেবু, তেঁতুল, বিভিন্ন ধরনের লেবু, পেয়ারা, পালং শাক এমনকি লঙ্কাতেও থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। আবার হাতের কাছেই মেলে পাকা পেঁপে, তাতে প্রচুর ভিটামিন সি তো থাকেই, এছাড়াও পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ পাওয়া যায়। পেঁপের রয়েছে হজম করানোর শক্তিও। খাবারের তালিকায় একে জুড়তে তাই ভুলবেন না। কেননা এই সময় হজমজনিত বা অন্য কোনও সমস্যায় কাবু না হয়ে পড়াই ভালো। মোদ্দা কথা যে কোনও ফল সবজি, যেখানে ভিটামিন সি মেলে, তা এখন খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আরও শুনুন: অযথা ভয় নয়, সংকটকালে জরুরি নিজের কর্তব্য বোঝা, ঠিক কী করবেন?
ব্রকোলি খেতে হয়তো অনেকেই তেমন পছন্দ করেন না, তবে এই সবজিটির রয়েছে বিশেষ গুণ। ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ এবং ‘ই’ থাকার সঙ্গে সঙ্গে এতে থাকে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা ইমিউনিটি বাড়াতে খুবই সহায়ক। রসুন ও আদা, রান্নাঘরের এই দুই জিনিসের জুড়ি মেলা ভার। অনাক্রম্যতা শক্তি বাড়াতেও এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। গলার সমস্যায় কাজ দেয় আদা। আর এই কোভিড পর্বে আমাদের শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গা কিন্তু গলাই। দীর্ঘমেয়াদী যন্ত্রণা কমাতেও কাজে দেয় আদা। পাশাপাশি, রোজকার খাবারের মেনুতে রাখুন দই। তবে মিষ্টি বা অন্যান্য ফ্লেভারের দইয়ের তুলনায় অনেক বেশি কাজের সাধারণ টক দই। টক দইও আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমন্ডসের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই ও সি। পাশাপাশি বেশ কিছু শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা অনাক্রম্যতা শক্তি বাড়াতে কাজে লাগে। একজন প্রাপ্তবয়স্কের শরীরে প্রতিদিন অন্তত ১৫ গ্রাম ভিটামিন ই লাগেই, যা সরবরাহ করতে পারে অর্ধেক কাপ আমন্ড একাই। হলুদের কিন্তু রয়েছে হাজার রকম গুণ। হলুদে থাকে কারকিউমিন বলে এক ধরনের যৌগ যা ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। চা খেতে পছন্দ করেন নিশ্চয়ই। দুধ চা বা সাধারণ লিকারের তুলনায় গ্রিন টি কিন্তু শরীরের পক্ষে বেশ উপকারী। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা বাড়ায় ইমিউনিটি। এল-থিয়েনাইন নামে এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়ায়।
আরও শুনুন: সংক্রমণ রুখতে কোন ধরনের মাস্ক সবথেকে কার্যকরী? জেনে রাখুন খুঁটিনাটি
করোনার সময়ে আমাদের শরীরের প্রয়োজন প্রোটিনের শক্তি। তাই ডিম বা মাংস খান নিয়ম করে, যাতে আছে প্রচুর ভিটামিন বি-সিক্স। যা আমাদের লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। তবে এ সময় বেশি গুরুপাক খাবার না খাওয়াই ভালো। তাই মাছ-মাংস, যা-ই খাবেন, তা হালকা করে রেঁধে খাওয়াই ভাল। আজকাল বিশেষজ্ঞরা সামুদ্রিক প্রোটিনের উপরেও জোর দিচ্ছেন। কাঁকড়া, অয়েস্টার, লবস্টার- এসবে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা, যা ইমিউন সিস্টেমের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
বাকি অংশ শুনে নিন।