দেশ জুড়ে ফের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে মারণ ভাইরাস করোনা। প্রতিদিনি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আপাতত কড়া বিধিনিষেধের পথেই হাঁটছে প্রশাসন। একাধিক সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে ফের শুরু ওয়ার্ক ফ্রম হোমের রুটিন। কিন্তু হঠাৎ রুটিন বদলে কাজে মন বসাতে কি সমস্যা হচ্ছে আপনার? কীভাবে সামলাবেন এই সমস্যা?
রুটিন যখন বদলেছে, নিজেকে তো খানিক বদলাতে হবেই। না হলেই সমস্যা পেয়ে বসবে আপনাকে। আগে কাজের জায়গা আর বাড়ির মধ্যে একটা স্পষ্ট স্থানিক ভেদাভেদ বজায় ছিল। ওয়ার্ক ফ্রম হোম প্রথমেই সেই সীমানাটা ঘেঁটে দেয়। একে তো এক্ষেত্রে কাজের নির্দিষ্ট সময় মেনটেন করা বেশ মুশকিল। তার উপরে একই জায়গায় খাওয়া, ঘুম, গল্পগুজব, টিভি দেখা, আবার অফিসও… এত বিভিন্নরকম কাজ সামলাতে গিয়ে সেই সেই কাজের জন্য নির্দিষ্ট মাইন্ডসেটে চট করে পৌঁছে যেতেও বেশ অসুবিধা হয়। সুতরাং ছোট ছোট কিছু নিয়ম ঠিক করে নিন, যা আপনাকে কাজে মন বসাতে সাহায্য করবে।
আরও শুনুন: করোনা রোগীকে সামলাতে ব্যস্ত? সংক্রমণ রুখতে সতর্ক থাকুন নিজেও
প্রথমেই পার্সোনাল স্পেস আর ওয়ার্কস্পেসের মধ্যে একটা স্পষ্ট দেওয়াল তুলুন। মানে, যে বিছানায় ঘুমোচ্ছেন, ঘুম থেকে উঠে সেখানেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়বেন না। তাতে যেমন কাজে মন বসাতে সমস্যা হবে, আবার কাজের শেষে ব্যক্তিগত জীবনেও ফিরতে পারবেন না সহজে। বাড়িতে যদি কোনও একটি ঘর আলাদাভাবে অফিস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে সবথেকে ভাল। অফিসের সময় ছাড়া সে ঘরে ঘুরতে যাওয়ার মোটেও দরকার নেই। অফিসের রুটিন মেনেই সে ঘরে গিয়ে কাজে বসুন। বাড়িতে রয়েছেন বলেই সময়ের হিসেব যদি গুলিয়ে ফেলেন, তাতে শরীর মন দুয়েরই ক্ষতি।
আরও শুনুন: মা ভ্যাকসিন নিলে মাতৃদুগ্ধেই কোভিডের অ্যান্টিবডি পাবে শিশু, জানালেন গবেষকরা
যদি আলাদা ঘর না পান, তাহলেও কুছ পরোয়া নেই। ঘরের কোনও একটি অংশকে আলাদাভাবে কাজের জন্য নির্দিষ্ট করে নিন। সেখানে একটা টেবল সাজিয়ে নিতে পারেন ওয়ার্কস্টেশন হিসেবে। কাজের জন্য সবসময় প্রয়োজন হয় এমন জিনিসপত্র সেখানেই গুছিয়ে রাখুন। ল্যাপটপ-মোবাইলের চার্জার, হেডফোন, এগুলি সারাক্ষণ দরকার হয়, কিন্তু তার জড়িয়ে পাকিয়ে থাকলে জায়গা নষ্ট হয় যেমন, তেমনই সব জিনিস অগোছালো থাকলে কিন্তু মনও বিক্ষিপ্ত হয়ে যেতে পারে। অথচ সুন্দর ডেস্ক অর্গ্যানাইজারে কাজের জিনিসগুলি সাজানো থাকলে কাজের মধ্যেও আপনার দেখতে ভাল লাগবে।
বাড়িতে পরে থাকা শর্টস কিংবা ড্রেসিং গাউন পরেই কাজে বসে পড়েন অনেকে। খানিক তাড়াহুড়োর কারণে, খানিক আলস্যে। কিন্তু এর ফলে আপনার মনও যে সেই আলস্য থেকে বেরোতে পারবে না। বাড়িতে থাকলেই বা কি, অফিসে যাচ্ছেন মনে করে নিজেকে সামান্য সাজিয়ে নিন না। নিজেরই নিজেকে ভাল লাগবে। কাজ করার জন্যেও মিলবে বাড়তি এনার্জি।
কাজে মন বসানোর জন্য চোখের আরামের দিকেও কিন্তু খেয়াল রাখা দরকার। কাজের টেবলের সামনে একটা জানলা থাকলে যেমন পর্যাপ্ত আলো পাওয়া যায়, তেমনই মনও হয়ে ওঠে তরতাজা। সামনে যদি দেওয়াল থাকে, সেখানে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন প্রিয় কোনও ছবি। টেবলে একটা শৌখিন ডেট ক্যালেন্ডার, কিংবা সুন্দর পেপারওয়েট, কিংবা একটা ছোট্ট গাছ থাকলেও মন ভাল হতে বাধ্য।
এ তো গেল বাইরের দিক। মনে মনেও গুছিয়ে নিন নিজেকে। কাজে বসে প্রথমেই লিস্ট বানিয়ে ফেলুন, কী কী কাজ সেরে ফেলতে হবে, আর কীভাবে এগোবেন। দেখবেন, আস্তে আস্তে সব কাজই মনের মতো করে গুছিয়ে নিতে পারছেন আপনি।