ঘুম মানুষের জন্মগত অধিকার। কিন্তু অধিকার ফলাতে গিয়ে যদি ওজন বাড়ে? ভয়ে বেশি ঘুমোতে নারাজ বহু স্বাস্থ্য সচেতন। এদিকে ঘুম কম হলেও যে বিপদ কিছুমাত্র কম নয় সে খেয়াল নেই। আদৌ ঘুমোলে ওজন বাড়ে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
একজন সুস্থ স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। একথা চিকিতসকরাই বলেন। কম ঘুমের এক নয়, একাধিক খারাপ দিক। তবে সেই নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। বরং বেশি ঘুমোলে পৃথিবী রসাতলে যাবে এমনটাই ধারণা অনেকের।
আরও শুনুন: সমীক্ষা বলছে দেশের ৮৩ শতাংশ যুবই বেকার, মোদি বলছেন…
নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য অনেকেই নানা কসরত করে থাকেন। কেউ নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। কেউ আবার খাওয়া ঘুম, সবেতেই নিয়মের গণ্ডি বেঁধে রেখেছেন। এতটুকু এদিক ওদিক হওয়ার জো নেই। এক্ষেত্রে ঘুমের উপর নজরদারী সবথেকে বেশি। ভুল করেও বেশি ঘুমিয়ে নিলে বিপদ। পরদিনই বেজায় বাড়বে ওজন। এই ভয় অনেকেরই। কিন্তু বাস্তবে এমনটা হওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়। বরং ঘুম কম হলেই ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকে বলেন বেশি ঘুমোলে বুদ্ধি মোটা হয়ে যা। আদতে এই ব্যাখ্যাও সম্পূর্ণ ভুল। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম এমনিতেই শরীর নিতে চায় না। তাই চাইলেই কেউ জোর করে ঘুমোতে পারবেন এমনটা হয় না। অনেক সময় অজান্তেই ঘুমের ঘাটতি থেকে যায়। একদিন বেশি ঘুমানো মানে সেই ঘাটতি পূরণ। তাই নিয়ম মেনে আট ঘণ্টা ঘুমের পরামর্শই দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কাজের প্রয়োজনে অনেকেই সে সুযোগ পান না। কিংবা ইনসমনিয়ার মতো রোগ থাকলেও ঘুমের সমস্যা হতে পারে। এর থেকে ওজন বাড়াও অস্বাভাবিক নয়।
আরও শুনুন: গান্ধীদের বিঁধতে গান্ধীই অস্ত্র! ‘বাপু’র জন্য কেন এত আক্ষেপ মোদির?
আসলে, ঘুম ঠিক হলে মন মেজাজ বেশ ফুরফুরে থাকে। যে কোনও কাজে আলাদা রকমের এনার্জি পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম ঠিক না হলে হলে মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি লোভ জন্মায়। যা ওজন বাড়ানোর অন্যতম কারণ। মিডনাইট ক্রেভিং আজকের দুনিয়ায় খুবই চেনা শব্দ। বিশেষ করে যুবসমাজের কাছে। ঘুমের সময় অর্থাৎ রাত জেগে কাজ করতে বসলেই মিষ্টি, আইসক্রিম কিংবা এই জাতীয় খাবারের প্রতি অজানা এক টান তৈরি হয়। লোভের বশে অনেকে খেয়েও নেন। কিন্তু এতেই ওজন বাড়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যেতে পারে। পাশাপাশি ঘুম ঠিক হলে শরীরে মেটাবলিজম ঠিক থাকে। হজম হয় দ্রুত। হলে মেদ জমার সম্ভাবনা কম। এমনটাও অনেকে দাবি করেন, ঘুমের সময় কিছুটা হলেও ক্যালোরি ক্ষয় হয়। সুতরাং ঘুমালে ওজন বাড়বে একথা কোনওভাবেই সত্যি হতে পারে না। তবে অতিরিক্ত ঘুম মেজাজ বিগড়ে দিতে পারে। কোনও কাজে মন বসছে না এই পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। একইভাবে কম ঘুমের সমস্যাও খানিকটা এরকম। সুতরাং শরীর সুস্থ স্বভাবিক রাখতে কম বা বেশি নয়, সঠিক মাত্রায় ঘুমই প্রয়োজন।