চায়ের সঙ্গে ‘টা’ না হলে, ঠিক যেন জমে না। তেলেভাজা, বিস্কুট কিছু একটা চাই। কিন্তু জানেন কি, চায়ের সঙ্গে এইসব খাবার খেলেই মারাত্মক শরীর খারাপ হতে পারে। তালিকায় লেবুও রয়েছে উপরের দিকেই। তাহলে লিকার চায়ে লেবু মিশিয়ে খাওয়াও কি ক্ষতিকর? কী জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা? আসুন শুনে নিই।
‘এক কাপ চা, খাস্তা লেরো সকালটা শুরু’… সিনেমার গানে সকাল শুরুর এর থেকে ভালো উপায় আর হয় না! কিন্তু এসব সিনেমা আর গানেই বোধহয় সত্যি। কারণ বাস্তবে চায়ের সঙ্গে যা খুশি খেলেই শরীর বিগড়োতে বাধ্য। বিশেষজ্ঞদের মত অন্তত তেমনটাই।
আরও শুনুন: প্রাতরাশে একসঙ্গে খাচ্ছেন কলা আর কমলালেবু, মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো?
এমনিতে চায়ের বিভিন্ন রকমফের রয়েছে। তবে প্রচলিত বলতে, দুধ চা আর লিকার চা। যার মধ্যে লিকার চা খাওয়াই শরীরের পক্ষে ভালো বলে দাবি করে বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তার মদ্যে লেবু মেশালেই হতে পারে গন্ডগোল। ভাবছেন তো, লিকার চা মানেই তাতে লেবু মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে? কিন্তু এই অভ্যেস শরীরের জন্য একেবারেই উপকারি নয় বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। কারণ লেবুর মধ্যে যে অ্যাসিড থাকে, তা চা পাতার সঙ্গে মিশে বিক্রিয়্যা ঘটায়। শরীর অনেক সময় সেই বিক্রিয়া সহ্য করতে পারে না। তাই লেবু চায়ে উপকারের বদলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে কেউ যদি দিনে স্বাদের কথা ভেবে দিনে একবার এই চা খান তাহলে তেমন অসুবিধার কিছু নেই। বারবার লেবু মেশানো চা না খাওয়াই ভালো। এবার আসা যাক, ‘টা’-এর প্রসঙ্গে। এক্ষেত্রে সবথেকে বেশি প্রচলিত বিস্কুট। নোনতা, মিষ্টি, ঝাল হরেক স্বাদের বিস্কুট দিয়ে চা খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে অনেকের। কেউ কেউ প্রায় স্বাদহীন ক্রিমক্যাকারও খান। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমাণ মতো বিস্কুট খেলে বিশেষ ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে চায়ের সঙ্গে তেলেভাজা এড়িয়ে চলাই ভালো। দুধ চায়ের সঙ্গে তো একেবারেই না। বিশেষ করে,বেসনে ডুবিয়ে ভাজা কোনও খাবার, তা যতই মুখোরোচক হোক, চায়ের সঙ্গে খেলেই অ্যাসিড হতে পারে।
আরও শুনুন: ঠান্ডা পড়তেই এড়িয়ে যাচ্ছেন দই, ক্ষতি করছেন না তো?
এছাড়া চায়ের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়াই উচিত নয়। কারণ চা পাতার সঙ্গে হলুদ গেলে তা ঠিকমতো হজম নাও হতে পারে। ফলে সেই একইরকমের পেটের সমস্যা দেখা দেবে। তাই চা পানের সময় বা চায়ের মধ্যে হলুদ মেশানো এড়িয়ে চলতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। তালিকায় এরপরেই রয়েছে কাঁচা সবজি। দুধ চা হোক বা লিকার এর সঙ্গে কাঁচা সবজি খাওয়াও উচিত না। মানে, পেঁয়াজ, শশা, গাজরের মতো জিনিস যা স্যালাড হিসেবে অনেকেই মুড়িতে মিশিয়ে খান, সেটিও চায়ের সঙ্গে সরাসরি না খাওয়াই ভালো। তবে সবথেকে বেশি সমস্যা হতে পারে ঠাণ্ডা জল খেলে। কারণ চা মানেই তা গরম গরম খেতে হবে। এর সঙ্গে একেবারে আলাদা তাপমাত্রার কোনও পানীয় খেলে শরীর বিগড়োতে বাধ্য। হজমের সমস্যা তো হবেই, সেইসঙ্গে আরও নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে ঠাণ্ডা গরম একইসঙ্গে খেলে। তাই সকালের চা হোক বা বিকেলের, একটা-দুটো বিস্কুট কিংবা মুড়ি সহযোগে খাওয়াই সবথেকে ভালো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। মাঝে মধ্যে স্বাদ বদল হতেই পারে, তবে তা মাত্রাতিরিক্ত হলেই বিপদ।