শীতকালে স্নানের নাম শুনলেই গায়ে জ্বর! তাই স্নান ছাড়াই দিব্যি রয়েছেন কেউ কেউ। বাড়ির লোক, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীরা সেসব শুনে নাক সিঁটকোচ্ছেন। কিন্তু এক ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, স্নান না করলেই নাকি আয়ু বাড়ে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা কী বলছেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বেজায় ঠান্ডা! এর মধ্যে গায়ে জল ঢালা! উরে বাবা, শুনলেই যেন গায়ে কাঁটা দেয়। তাই ভরসা পারফিউম, স্নান ছাড়া দিব্যি কাটছে ৩-৪ দিন। এদিকে বাড়ির লোক এই অনাচার মানতে চাইছে না কিছুতেই। উঠতে বসতে কথা শুনতে হচ্ছে। ভরা ঠান্ডায় এমন পরিস্থিতিতে যারা রয়েছেন, তাঁদের জন্য সুখবর। সম্প্রতি এক ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, স্নান ছাড়া দিন কাটালে আয়ু বাড়তে পারে।
ব্যাপারটা ঠিক কী?
তাহলে খুলেই বলা যাক। স্নান করলে যেমন শরীর পরিস্কার হয়, সেইসঙ্গে মেলে মানসিক শান্তিও। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা স্নান না করলে, কাজে মন বসাতে পারেন না। বিশেষ করে যাঁদের ধর্মাচরণে প্রবল আস্থা, স্নান ছাড়া একটা দিনও কাটানোর কথা ভাবতে পারেন না তাঁরা। তাই বলে কি সবাই শীতকালে স্নান করবে? কভি নেহি! চুলোয় যাক সুস্বাস্থ্য, দুর্গন্ধ দূর করবে সাধের পারফিউম, তবু এই ঠাণ্ডায় জলে গা ভেজানো চলবে না। শীতকালে এমন পণ অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সমস্যা অনেক। অন্যরা বাঁকা চোখে দেখবেন। কেউ কেউ পাশে বসতে চাইবেন না। সবমিলিয়ে শোচনীয় পরিস্থিতি। তবে এই মুশকিল আসান হবে শীঘ্রই। কারণটাও নাকি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক। সম্প্রতি এক ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, যারা নিয়মিত স্নান করেন না তাঁদের আয়ু বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল। হিসাব করে বলা হয়েছে নিয়মিত স্নান না করলে প্রায় ৩৪% সম্ভাবনা থাকে আয়ুবৃদ্ধির। স্বাভাবিক ভাবেই এই নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়। পক্ষে বিপক্ষে দুই রকমের যুক্তিই সামনে আসছে। আয়ু বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, নিয়মিত স্নান করলে ত্বকের ক্ষতি হয়। একইসঙ্গে জল যদি বেজায় ঠান্ডা হয় তাহলেও তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি ঝুঁকি রয়েছে হৃদরোগেরও। তাই স্নান এড়িয়ে গেলেই মুশকিল আসান। এমনটা অভ্যেস করে নিলে তো কথাই নেই!
কিন্তু সত্যিই কী তাই?
এই প্রশ্ন করা হয়েছিল চিকিৎসকদের। সেখানে অবশ্য তাঁরা এক সুরেই গেয়েছেন। প্রায় সকলেরই বক্তব্য স্নান না করা মোটেও ভালো অভ্যেস নয়। দীর্ঘদিন স্নান না করলে ত্বকে যে পরিমান ময়লা জমে, তা নানা রোগের কারণ হতে পারে। কিন্তু শীতকালে স্নানের জন্য যে তাপমাত্রা জনিত সমস্যা হয়, তার সমাধান? চিকিৎসকদের কথায়, প্রয়োজনে সামান্য গরম জল মিশিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা করে স্নান করতে হবে। স্নানের পর ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। জল জমে থাকলে বিপদের সম্ভাবনা থাকবেই। কিন্তু তার জন্য স্নান না করা মোটেও ভালো অভ্যেস হতে পারে না এমনটাই দাবি চিকিৎসকদের। একইসঙ্গে আয়ু বাড়ার যে ব্যাখ্যা নেটদুনিয়ায় ভাইরাল, সেটিও মানতে চাননি চিকিৎসকদের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর নেপথ্যেও কোনও পোক্ত বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। তবে চিকিৎসকরা যাই বলুন, মনে প্রাণে আয়ু বাড়ার থিওরিই মেনে নিয়েছেন অনেকে। এতদিন স্নান না করে নানা কথা শুনতে হত, এবার তাঁরাও পালটা যুক্তি দিচ্ছেন। এভাবেই শীতের কয়েক সপ্তাহ কাটিয়ে দিতে পারলেই, কেল্লাফতে!