অপেক্ষা প্রায় শেষ বললেই চলে। আকাশে বাতাসে ম ম করছে পুজো পুজো গন্ধ। ইতিমধ্যেই ঠাকুর দেখাও শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু সেই আনন্দে শরীরের কথা ভুলছেন না তো? ঠাকুর দেখতে বেরিয়েও যে কোনও সময় হতে পারে বিভিন্ন সংক্রমণ। যার জেরে মাটি হতে পারে পুজোর আনন্দ। সেসব ঠেকিয়ে, কীভাবে সুস্থ থাকবেন? আসুন শুনে নিই।
টানা দু-বছর মহামারী কেড়ে নিয়েছিল যাবতীয় আনন্দ। তবে গতবছর থেকে বেশ কিছুটা ভয় কেটেছে। মুখে মাস্ক পরে হলেও ঠাকুর দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকেই। তবে এবার আর সেইসবের বালাই নেই বললেই চলে। সরকারি ভাবে মাস্ক পড়ার নিয়মও উঠেছে বহু আগেই। তাই নিশ্চিন্তে সারারাত জেগে ঠাকুর দেখার প্ল্যান বানাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু করোনা ছাড়াও এমন অনেক কিছুই রয়েছে, যা খুব সহজেই ছড়াতে পারে সংক্রমণ। অসাবধানতার জেরে, একবার তার কবলে পরলেই সব শেষ। পুজোর আগেই মাটি হবে সব আনন্দ।
আরও শুনুন: মহালয়ার পর টানা ৯ দিনের উদযাপন, নবরাত্রি ব্রত পালনে কী ফল মেলে জানেন?
পুজোর সময় এমনিতেই আবহাওয়ায় বেশ পরিবর্তন দেখা যায়। সকাল থেকেই রোদ, বেলা বাড়লে তার তীব্রতা বাড়বে আরও। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরম। কিন্তু সন্ধ্যে নামলেই একেবারে উলটোটা। গরমও কমতে শুরু করে ধীরে ধীরে। একেবারে ভোর রাতে তো রীতিমতো ঠাণ্ডা। অনেকসময় ভোরবেলা শিশিরও পড়ে এই সময়। তাই সাবধান না হলে ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা প্রবল। আসলে সেও তো একপ্রকার সংক্রমণই। এছাড়া হতে পারে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জির সমস্যাও। পুজোর আগেই হোক বা পরে, এইধরনের সমস্যা হলে ভুগতে হবে ভালোমতোই। ওষুধ খেলে কাজ হয়তো হবে, এইভাবে পুজোটাও উতরে দিতে পারেন। কিন্তু তারপর? পুজো শেষ হলেই তো আবার অফিস। তখন অসুস্থ থাকলে চলবে কীভাবে! তাই আগে থেকেই সাবধান হওয়া ভালো।
ঠিক কী কী করলে সংক্রমণ আটকানো সম্ভব?
আরও শুনুন: পুজোর মরশুমে হঠাৎ মাইগ্রেনের ব্যথায় জেরবার, কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
এক্ষেত্রে প্রথমেই বলতে হয় হাত ধোয়ার কথা। কিছু খাওয়ার আগে তো বটেই, এমনিতেও কিছুক্ষণ ছাড়া হাত ধুয়ে নেওয়ার অভ্যাস করুন। বিশেষত বাইরে বেরোলে। অজান্তেই কখন চোখে মুখে হাত দেবেন, তার হিসেব নেই। তাই হাত থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। প্রয়োজনে স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখুন। তবে জল দিয়ে হাত ধুলেও চলবে। এরপর অবশ্যই মাস্ক। করোনাবিধি উঠে যাওয়ায়, অনেকেই চিরতরে মাস্ক পরা ছেড়েছেন। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পরে গেলে লাভ আপনারই। তবে নিতান্তই অসুবিধা হলে, ভিড়ে ঢোকার সময় পরিষ্কার রুমাল দিয়ে নাক্মুখ ঢেকে রাখুন। এভাবেও অনেকটাই বিপদ এড়ানো সম্ভব। পাশাপাশি চেষ্টা করুন অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে যেতে। প্রয়োজনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, ভিড় কিছুটা কমলে মণ্ডপের ভিতরে যান। তবে অতিরিক্ত ভিড়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে বিপদের সম্ভাবনা প্রবল। তবে স্রেফ ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা নয়, এর থেকে হতে পারে পেটের সমস্যাও। সেক্ষেত্রে সবার আগে নজর দিন খাওয়া-দাওয়ার দিকে। পুজোর সময় অনেকেই দু-বেলা বাইরে খাওয়ার প্ল্যান রাখেন। কিন্তু রোজ এমনটা করলে পেটের সমস্যা হতে বাধ্য। সেক্ষেত্রে একবেলা বাইরে খেলে অন্যবেলায় হালকা কিছু খান। সারারাত জেগে ঠাকুর দেখতে হলে, ডিনারে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। একইসঙ্গে মাথায় রাখুন পর্যাপ্ত জল খাওয়ার বিষয়টাও। কোনওভাবেই শরীরে জলের অভাব যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। এছাড়া বাড়ি ফিরেও সবার আগে বাথরুমে যান। ভালভাবে স্নান সেরে তবেই বিছানায় উঠবেন। নাহলে বাড়ির জীবাণু ঘরের ভিতরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এইসব নিয়ম মেনে নিশ্চিন্তে ঠাকুর দেখুন। কোনওভাবে সংক্রমণ হলেও সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ খেয়ে নিন। তাহলেই আর চিন্তার কিছু থাকবে না।