পর্ন ভিডিও নারীকে কার্যত পণ্য হিসেবে তুলে ধরে, এমনটাই মনে করেন অনেকে। কিন্তু পর্ন ছবির জগতে প্রায় কুড়ি বছর ধরে কাজ করার পর অন্য কথাই বলেন এই মহিলা। পুরুষের মতো নারীরও শারীরিক চাহিদা থাকে, আর সেই বিষয়টিকেই পর্ন ছবি মান্যতা দেয় বলে মনে করেন তিনি। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দিনের পর দিন ধরে পর্ন ভিডিওকে এমনভাবেই দেখে আসা হয়েছে, যেন তা কেবল পুরুষদের কাছেই উপভোগ্য। কিন্তু এই কথাকেই অস্বীকার করছেন পর্ন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কুড়ি বছর ধরে যুক্ত এরিকা লাস্ট। তাঁর সাফ কথা, কেবল পুরুষ নন, পর্ন ছবি দেখে একইভাবে উত্তেজিত হতে পারেন মেয়েরাও। বিশেষ করে অল্প বয়সে যখন যৌনতা নিয়ে সম্ভব-অসম্ভব অনেকরকম ধারণা থাকে, সেই সময়ে পর্ন ছবি রীতিমতো সাহায্য করতে পারে। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এমনটাই বলছেন এরিকা।
আরও শুনুন: শরীরে পোশাক প্রায় নেই, অনেকের সামনেই ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়, কী অভিজ্ঞতা ভূমির?
এরিকা যে কথা বলছেন, সেই একই কথা বলে থাকেন পর্ন-গবেষকরাও। তাঁদের গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, কেবল পুরুষ নয়, পর্ন দেখতে রীতিমতো পছন্দ করেন অনেক মেয়েও। পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে পর্নোগ্রাফির দর্শকদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মেয়ে। তিনজন মহিলার মধ্যে একজন প্রতি সপ্তাহে পর্ন দেখেন। এবং এই সাইটগুলিতে একজন কতক্ষণ সময় থাকছেন, সে বিচার করলেও দেখা যাবে মহিলারা এগিয়ে আছেন পুরুষদের তুলনায়। আসলে পুরুষের মতো মেয়েদেরও যে মানসিক ও শারীরিক উভয় চাহিদাই রয়েছে, এবং প্রাকৃতিকভাবেই তা থাকার কথাও, সে কথা অস্বীকার করার জো নেই। যদিও সমাজের প্রচলিত ধারণায় মেয়েদের চাহিদার বিষয়টি অনেক সময়ই উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে। তাই অনেক পুরুষই মনে করেন, মেয়েদের পর্ন দেখার কারণ তাঁদের সঙ্গীরা। তিনি এই জাতীয় ভিডিও দেখছেন হয় সঙ্গীর দাবিতে, অথবা সঙ্গীকে কীভাবে খুশি করা যায় তা ভেবে। কিন্তু মেয়েরাও যে মানুষ, তাদের সমস্ত কাজের কেন্দ্রে যে কোনও পুরুষ দাঁড়িয়ে থাকে না, এবং পুরুষের মতো মেয়েদেরও নিজস্ব প্রবৃত্তি-ইচ্ছে-অনিচ্ছে-আনন্দ রয়েছে, তাঁদের পর্ন দেখার প্রবণতাকে খতিয়ে দেখলে সে কথাই স্পষ্ট হয়ে যায়। আর সেই কথাটিই আরও একবার তুলে ধরলেন এরিকা।
আরও শুনুন: নগ্নতাই যখন পেশা, কেমন কাটে ন্যুড মডেলদের দিন?
বছর পঁয়তাল্লিশের এরিকা অবশ্য পর্ন অভিনেত্রী নন। তিনি পর্ন ফিল্ম পরিচালনা করেন। ফিল্মমেকিং নিয়ে পড়াশোনা করার পর একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ শুরু করেন তিনি। সেই সময়ে একটি এরোটিক শর্ট ফিল্ম বানানোর বরাত পান তিনি। আর সেখান থেকেই এরিকার কেরিয়ারের মোড় ঘোরে। পুরুষরা কীভাবে নারীশরীরকে দেখছে, সে কথা মাথায় রেখে নয়, উলটে মেয়েদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়েই পর্ন ছবি বানান এরিকা। আর পর্ন কেবল পুরুষরাই উপভোগ করেন, এই বাঁধাধরা ভাবনাকেও তিনি ভেঙে দিতে চান এইভাবেই।