মহেন্দ্র সোনির সাম্প্রতিক টুইট জল্পনা উসকে দিল টলিপাড়ায়। তা আরও জোরদার হল অভিনেত্রী চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যে। টলিউডের একের পর এক অভিনেতার বলিউডে পা রাখার পিছনে কারণ কী? কেবল ভাল কাজের অফার? নাকি টলিউডের বঞ্চনার গল্পও মিশে রয়েছে তাতে? উত্তর খুঁজছেন বাংলা সিনেমার দর্শক।
কয়েকদিন আগে একটি টুইট করেছেন প্রযোজক মহেন্দ্র সোনি। লিখেছেন, ‘‘পুরো টলিউড মুম্বই চলে যাচ্ছে। ভাবছি আমরাও শিফট করে যাই।’’ টুইটে তিনি ট্যাগ করেছেন একাধিক অভিনেতা এবং পরিচালককেও। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, আবির চট্টোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের পাশাপাশি সেই তালিকায় রয়েছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, বিরসা দাশগুপ্ত, দেবালয় ভট্টাচার্যের মতো পরিচালকেরাও। তবে এখানেই থামেননি মহেন্দ্র সোনি। কমেন্টে আরও অনেকের নামই যোগ করেছেন তিনি, মূল টুইটের ট্যাগে যাঁদের নাম বাদ পড়ে গিয়েছিল। সেই তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, টোটা রায়চৌধুরী, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় কিংবা পাওলি দামের মতো পরিণত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যেমন মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করতে চাইছেন, তেমনই সেখানে পা রাখছেন রুক্মিণী মৈত্র, অনিন্দিতা বোসের মতো নবাগতারাও। মুম্বাইয়ে এত চেনা মুখের ভিড় দেখে তিনি যে শঙ্কিত, সে কথাও গোপন করেননি মহেন্দ্র সোনি।
আরও শুনুন: পুরুষ নয়, ছবির সকল কলাকুশলীই মহিলা… প্রযোজক হয়েই চমক রিচা চাড্ডার
আর এই টুইটের জবাবেই চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘তুমি পাত্তা দিলে না, তাই এই অবস্থা।’ হয়তো নিছক মজার ছলেই এ কথা বলেছেন অভিনেত্রী। নাকি তার আড়ালেই লুকিয়ে থাকছে টলিপাড়ার গোপন কাহিনিও? যেখানে কান পাতলেই শোনা যায় অনেক শক্তিশালী অভিনেতাকেই সেভাবে ব্যবহার করেনি বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কাজ পাওয়ার প্রসঙ্গে টলিউডের রাজনীতির দিকে ইঙ্গিত করেছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তও। ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের দৌলতে টোটা এখন জনপ্রিয়। এমনকী সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ওয়েব সিরিজের ফেলুদাও তিনি। ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘C/O Sir’-এর মতো অন্যরকম সিনেমার মূল চরিত্রে ভাবা হচ্ছে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কথা। অথচ একসময় লাইমলাইট থেকে বেশ দূরেই ছিলেন এঁরা। এমনকী ঋতুপর্ণ ঘোষ থেকে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকেরা যাঁর ওপরে নিশ্চিন্তে ভরসা করেছেন, সেই যীশু সেনগুপ্তও ছিলেন এই দলে। অথচ আজ করন জোহরের ব্যানারে অভিনয় করছেন চূর্ণী। সুজয় ঘোষের ‘কহানি’তে নজর কেড়েছিলেন শাশ্বত ও পরমব্রত। আপাতত মুম্বাইতে নিয়মিত পাড়ি জমাচ্ছেন পরমব্রত, যিশু, শাশ্বত, টোটা, স্বস্তিকা-রা। যে বিরসা দাশগুপ্ত দীর্ঘদিন প্রযোজক পাননি বলে শোনা যায়, ‘মাফিয়া’ ওয়েব সিরিজ়টি পরিচালনার পর হিন্দিতে একাধিক অফার পেয়েছেন তিনি। সুতরাং, যতই ভাল কাজ, বেশি পারিশ্রমিকের যুক্তি থাকুক, অন্যরকম গন্ধটাও কিন্তু এখানে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও শুনুন: নগ্ন হয়েছিলেন যাঁর ছবিতে, সেই Anurag Kashyap-কেই কৃতজ্ঞতা জানালেন Kubbra Sait
তবে সামগ্রিক ভাবে বাঙালি প্রতিভা যদি বলিউডে গিয়ে নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দেয়, তাতে আখেরে লাভ হবে বাংলারই।