ভারতীয় হয়ে পাকিস্তান নিয়ে ছবি করবেন কেন? ‘হীরামান্ডি’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে এমনই তোপের মুখে পড়লেন সঞ্জয় লীলা বনশালি। যৌনকর্মীদের পাক বাজার হীরামান্ডিকে ক্যামেরায় ধরতেই আক্রমণ ধেয়ে এসেছে বলি পরিচালকের দিকে। শুনে নেওয়া যাক।
বলা হয়, শিল্পের কোনও কাঁটাতার হয় না। যে কোনও দেশের শিল্পকে যেমন যে কোনও দেশের দর্শক উপভোগ করতে পারেন, একইভাবে যে কোনও দেশের শিল্পী তাঁর ক্যানভাসে ধরতে পারেন স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে যে কোনও বিষয়কে। কিন্তু তেমনটা করতে গিয়েই আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন খ্যাতনামা বলি পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালি। জানা যায়, পাকিস্তানে ‘হীরামান্ডি’ নামে যৌনকর্মীদের এক বাজার ছিল। তা নিয়েই একটি ওয়েব সিরিজ নিয়ে এসেছেন বনশালি। কিন্তু একজন ভারতীয় পরিচালক পাকিস্তানের কোনও বিষয় নিয়ে ছবি করছেন কেন, এই অভিযোগেই সরব পাক দুনিয়ার একাংশ।
আরও শুনুন:
পুনম, মৃত্যু নয় ট্রেন্ডে বিকোল! মৃতদের সম্মান রক্ষা হল কি?
জানা যায়, হীরামান্ডি আসলে উর্দু শব্দ। এর আক্ষরিক অর্থ হিরের বাজার। পাকিস্তানের লাহোরে এই নামেই একটি বাজার বসিয়েছিলেন হীরা সিং-এর ছেলে ধিয়ান সিং ডোগরা। মূলত শস্যের বাজার হলেও, ক্রমে ক্রমে এখানে আসর জাঁকিয়ে বসেন বাইজি ও বারবণিতারা। বিশেষ করে ১৫-১৬ শতকে মুঘল আমলে এই বাজারের আরও রমরমা বাড়ে। আফগানিস্তান ও উজবেকিস্তান থেকে নারীদের নিয়ে আসা হত এই বাইজিদের বাজারে। দিনের বেলায় যা ছিল জিনিসপত্রের বাজার, রাতে রূপ বদলে যেত তারই। এই অঞ্চলে এখনও যৌনকর্মীদের ঘাঁটি রয়েছে বলেই শোনা যায়, যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার রমরমা কমে গিয়েছে অনেকটাই।
আরও শুনুন:
ডিপফেক থেকে বাঁচবেন কীভাবে? তরুণীদের পরামর্শ দিচ্ছেন খোদ সানি লিওন
আসলে ১৪ বছর আগে এই হীরামান্ডি নিয়ে বনশালিকে ছবি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মইন বেগ। দীর্ঘদিন ধরে চিত্রনাট্যটি পড়ে থাকার পর, অবশেষে ওয়েব সিরিজ হিসেবে তা আলোর মুখ দেখতে চলেছে। কিন্তু তার আগেই পাক নাগরিকদের তোপের মুখে পড়লেন বনশালি। তাঁদের দাবি, ভারতীয়দের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখানো হবে পাকিস্তানকে। যার ফলে আসলে পাকিস্তানকে নিচু নজরে দেখবেন দর্শকেরা। পাকিস্তানের নিজস্ব গল্পকে দুনিয়ার কাছে বিক্রি করতে চাইছেন বনশালি, এই অভিযোগেও তোপ দেগেছেন কেউ কেউ। পাকিস্তানে কেউ এমন কাজ করলে ফতোয়া জারি করা হত বলেও দাবি তাঁদের একাংশের। সব মিলিয়ে মুক্তির আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিল বনশালির নয়া ছবি।