সম্প্রতি ‘কাশ্মীর ফাইলস’-এর উদ্দেশে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন ইফি-র জুরি বোর্ডের প্রধান নাদাভ ল্যাপিড। যে মন্তব্যের জেরে বিতর্ক শুরু হয়েছে একাধিক মহলে। কিন্তু কে এই নাদাভ ল্যাপিড? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সম্প্রতি ইফি তথা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া-র মঞ্চ থেকে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-কে তুলোধোনা করেছেন এই চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি চেয়ারম্যান নাদাভ ল্যাপিড। এই ছবিকে ‘অশ্লীল’ এবং ‘একপেশে’ বলে বিঁধেছেন তিনি। এমনকি ইফি-র মতো শৈল্পিক প্রতিযোগিতার মঞ্চে এহেন ছবির কীভাবে জায়গা হতে পারে, তা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন ইজরায়েলের এই পরিচালক। যাঁর মন্তব্যের জেরে ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে এই বিতর্কিত ছবিটি। এমনকি এই মন্তব্যের প্রভাবে ভারত-ইজরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্কে যাতে কোনও আঁচ না লাগে, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে ইজরায়েল। টুইট করে ভারতের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি নিজের দেশের এই পরিচালককে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত নায়োর গিলন।
আরও শুনুন: হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ, আমির-কিয়ারার বিজ্ঞাপনকে তোপ বিবেক অগ্নিহোত্রীর
কিন্তু কে এই নাদাভ ল্যাপিড? আসুন, চিনে নেওয়া যাক তাঁকে।
ইফি-র জুরি বোর্ডের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়া থেকেই বুঝে নেওয়া যায়, ফিল্মের দুনিয়ায় নাদাভ ল্যাপিডের অবস্থান ঠিক কোথায়। বস্তুত ইজরায়েলের এই পরিচালক সারা বিশ্বের ফিল্মবোদ্ধাদের কাছেই রীতিমতো পরিচিত নাম। ১৯৭৫ সালে ইজরায়েলেই তাঁর জন্ম, দর্শন ও সাহিত্য নিয়ে প্রথমে তেল আভিভ ইউনিভার্সিটি এবং পরে প্যারিসে পড়াশোনা করেছেন তিনি। প্রথম ছবি ‘পোলিসম্যান’-এর জন্যই ২০১১ সালের লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে স্পেশ্যাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পান এই পরিচালক। ২০১৯-এ বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে গোল্ডেন বিয়ার-ও যায় তাঁরই হাতে। ২০১৪ সালে কানের ‘ক্রিটিকস উইক’ বিভাগেও জায়গা করে নেয় তাঁর ছবি। ২০১৬-তে খোদ কান উৎসবেই ‘ক্রিটিকস উইক’ বিভাগের জুরি পর্যন্ত হয়েছিলেন নাদাভ ল্যাপিড।
আরও শুনুন: ‘নেইল ফাইলস’ বানাতে চান, ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবিকে নিয়ে বেজায় ঠাট্টা টুইঙ্কলের
রাষ্ট্রের শাসন, নিপীড়ন, প্রোপাগান্ডার বিষয়ে বরাবরই সরব নাদাভ। বর্তমানে যে ছবিটি নিয়ে তিনি কাজ করছেন, তার কেন্দ্র প্যালেস্তাইনের এক তরুণ, ইজরায়েলের এক সৈনিককে চড় মারার অপরাধে ২০১৭ সালে যাকে জেলে যেতে হয়। নাদাভ নিজেও ইহুদি পরিবারের সন্তান, ফলে নাৎসি শাসনে ইহুদি গণহত্যার বিষয়টি নিয়েও তিনি অবহিত। এদিকে কাশ্মীর ফাইলস ছবির মূল বিষয় কাশ্মীর থেকে হিন্দু পণ্ডিতদের ঘরছাড়া হওয়ার ঘটনা। বিশ্বরাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট সচেতন নাদাভ এই ছবিকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে চিহ্নিত করার ফলে তাই নড়েচড়ে বসেছেন সিনে-দুনিয়ার একাংশ। যদিও এই ছবিকে কটাক্ষ করায় ইহুদি গণহত্যার প্রসঙ্গ তুলে পরিচালককে বিঁধেছেন অনুপম খের। তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিবেক অগ্নিহোত্রীও। আবার নাদাভকে খোলাখুলিই সমর্থন জানিয়েছেন স্বরা ভাস্কর। সব মিলিয়ে এই মন্তব্যের জেরে বিতর্কের শিরোনামে উঠে এসেছেন নাদাভ ল্যাপিড।