এসআরকে অর্থাৎ শাহরুখ খান। নাম তো সকলেই শুনেছেন। কিন্তু এসআরকে মানে যদি হত শেখর রাধা কৃষ্ণ! অর্থাৎ শাহরুখ খান যদি ইসলাম ধর্মাবলম্বী না হয়ে হিন্দু হতেন! তাহলে কি কিছু বদলাত? একবার এ প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন কিং খান। দিয়েছিলেন মোক্ষম জবাবও। আসুন শুনে নিই।
হিন্দু না তিনি মুসলমান! ভক্তরা অবশ্য সে হিসাব করেন না। তাঁরা জানেন, তাঁদের আছেন শাহরুখ খান। যে নামে ঢেউ ওঠে আট থেকে আশির মনে। এবং তা-ও কয়েক দশক জুড়ে। পর্দার নায়ক থেকে, কিং অফ রোমান্স থেকে তিনি যে ভারতিয় জনজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িয়ে ওঠা একজন মানুষ হয়ে উঠলেন, তা তো এমনি এমনি নয়। খানিকটা তাঁর অভিনীত চরিত্রদের দৌলতে হয়েছে। আর অনেকটা হয়েছে তাঁর নিজের জন্যই। জাত-পাত-ধর্ম-সম্প্রদায়ের বাইরে বেরিয়ে ভালবাসার মানুষ হয়ে উঠেছেন শাহরুখ খান।
আরও শুনুন: তাঁর জন্যই চাকরিতে ইস্তফা! ফ্যানের চাকরির জন্য তরুণীর বসের কাছে কাতর আবেদন শাহরুখের
তবে তাঁর ধর্মপরিচয় তো অস্বীকার করা যায় না। তিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী। এবং তা তিনি পালন করেন নিষ্ঠার সঙ্গে। এ নিয়ে কম বিতর্কের মুখেও তো পড়তে হয় না তাঁকে। এই তো কিছুদিন আগের কথা। লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণের সময় সুরসম্রাজ্ঞীকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন কিং খান। রীতি মেনেই দোয়া করেছিলেন। সেই ভঙ্গি দেখে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছিল অযথা বিতর্কে। তাতে অবশ্য তিনি নিজে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। আসলে কখনই নিজের ধর্মপরিচয়ে নিজেকে আটকে রাখতে চাননি শাহরুখ। বরং ধর্মের সীমানা পেরিয়ে মানুষের যে ভালবাসার একটা দেশ আছে, সম্পর্কের একটা সুস্থ পরিবেশ আছে, সে কথাই তিনি বারংবার বলতে চেয়েছেন নিজে। এবং তাঁর চরিত্রদের মাধ্যমেও।
আরও শুনুন: মেয়েদের নখের আঁচড়ে অপ্রস্তুত বডিগার্ড, তড়িঘড়ি কী ব্যবস্থা নেন শাহরুখ?
তবু প্রশ্নের মুখে তো পড়তেই হয়। একবার খোদ শাহরুখকে জিজ্ঞসা করা হয়েছিল, তিনি নিজে হিন্দু হলে কি কিছু বদলাত? অর্থাৎ শাহরুখ খান না হয়ে তিনি যদি হতেন শেখর কৃষ্ণ? শুনে মৃদু হাসেন শাহরুখ। তারপর শেখর আর কৃষ্ণর মাঝে জুড়ে দেন রাধা শব্দটি অর্থাৎ শেখর রাধা কৃষ্ণ। তাহলে সংক্ষিপ্ত হয়ে নাম দাঁড়াচ্ছে সেই এস আর কে। অর্থাৎ শাহরুখ খানের বদলে এসআরকে যদি হতেন শেখর রাধা কৃষ্ণ, তাহলে কি কোনও ফারাক হত তাঁর জীবনে? তাঁর প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়ার ধরনে কি কোনও বদল হত? এই প্রশ্নের মুখেই শাহরুখ জানিয়েছিলেন, তিনি বিষয়টিকে এভাবে কখনও ভাবেনই না। ভারতবর্ষের মতো দেশের নাগরিক তিনি। যেখানে বহুত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সকলের ধর্মানিভূতিকে সম্মান জানানো হয়। আর তাই শাহরুখ বলেছিলেন, কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের সূত্রে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা তিনি কখনই করেননি। না তাঁর কাজে, না তাঁর ব্যক্তিজীবনে।
আরও শুনুন: তাঁর জন্য প্রেমের সিনেমা চলে না, তাহলে? খোলসা করলেন খোদ শাহরুখ
আর সবার উপরে তিনি একজন শিল্পী। শিল্পীরা তো সবসময়ই চান এ সীমানা পেরিয়ে একটা বৃহত্তর ভূমিতে গিয়ে দাঁড়াতে। দিলীপ কুমারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কিংবদন্তি অভিনেতার নাম দিলীপ কুমার না ইউসুফ খান তাতে কিছু ফারাক হয় না। তিনি যে একজন শিল্পী সেই পরিচয়ই মুখ্য হয়ে থাকে। তাঁর নিজের ক্ষেত্রেও তা সত্যি বলেই জানিয়েছিলেন শাহরুক। আর তাই স্বভাবসিদ্ধ রসিকতায় বলেছিলেন, শাহরুখ খান কিংবা শেখর রাধা কৃষ্ণ যে নামেই তাঁকে ডাকা হোক না কেন, তিনি একইরকম ভালবাসার মানুষ হয়ে থাকবেন। ভালবাসার সুঘ্রাণ শুধু নামের কারণে তাঁর কাছ থেকে মিলিয়ে যাবে না কোনওদিনই।