মশালা-বিনোদনের কড়া ককটেলের ভিতরই সোচ্চারে বলে ফেলা সামাজিক কথা। শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’ সিনেমার এই বিশেষ দিক নিয়ে এখন সর্বত্র চর্চা। তার মধ্যেই ভেসে এল ডাঃ কাফিল খানের ধন্যবাদ। চিকিৎসায় দুর্নীতির প্রসঙ্গ যে ছবিতে উঠে এসছে, তা জেনেই ছবির নির্মাতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। আসুন শুনে নেওয়া যাক, এই নিয়ে তিনি আর কী বলেছেন।
বাজিমাত করেছেন ‘বাজিগর’। বিনোদনের মোড়কেই এই মুহূর্তে দেশ এবং দশের জন্য জরুরি কথাগুলি বলে ফেলেছেন বিক্রম রাঠোর ওরফে আজাদ ওরফে শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan)। কী বলেছেন তিনি? বলেছেন কৃষিঋণের ভারে দেশের অসংখ্য কৃষকের আত্মহত্যার কথা, বলেছেন সিস্টেম কীভাবে পুঁজিপতিদের ঋণ মকুব করে দেয় নিমেষে, সে কথাও। শাহরুখের ক্রুসেড অবশ্য এখানেই আটকে থাকেনি। অস্ত্র কারবারীদের কুকীর্তি যেমন তিনি তুলে ধরেছেন, পরিবেশ বিপন্ন করে কারখানা স্থাপন এবং সেই হেতু মানুষের মৃত্যু-যন্ত্রণার কথা সোচ্চারে বলছেন দেশের সুপারস্টার। নাচা-গানা বিনোদন, প্রেম-ভালোবাসার আবেগঘন দৃশ্যের মধ্যে নিজেকে বন্দি না রেখে, সময়ের প্রয়োজনেই সামাজিক ইস্যুগুলো নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছে তাঁর চরিত্র। আর সেই প্রসঙ্গেই উঠে এসেছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে দুর্নীতির কথাও।
আরও শুনুন: শাহরুখ মানেই হারানো স্বদেশ, নিরুদ্দেশের উদ্দেশে আমাদের ব্যক্তিগত ঘোষণা
ছবিতে সানিয়া মালহোত্রা এক চিকিৎসকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যাঁর হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়। বহু শিশুর জীবন তখন বিপন্ন। ছবির চিকিৎসক উচ্চ মহলে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার করে বলতে থাকেন। এমনকী নিজেও অক্সিজেন জোগাড়ে বেরোন। কিন্তু শেষরক্ষা হয় না। একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়। আর দায় গিয়ে পড়ে ওই চিকিৎসকের উপরেই। সোজা কথা বলতে গেলে, সিস্টেম এই চিকিৎসকের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে নিজের দোষ ঢাকে। যার জন্য চিকিৎসকের ঠাঁই হয় গরাদের উপারে। ছবির আজাদ বা বিক্রম রাঠোর কীভাবে সেই সত্যি সামনে আনে, সে আলাদা প্রসঙ্গ। তবে, এই ঘটনা স্পষ্টতই মনে করিয়ে দিয়েছে ডাঃ কাফিল খানের কথা।
আরও শুনুন: পর্দায় একইসঙ্গে জোয়ান ও বৃদ্ধ শাহরুখ! শুটিং-এর চ্যালেঞ্জ ফাঁস করলেন অন্য SRK
গোরক্ষপুরের এক হাসপাতালের সেই ঘটনা বছর কয়েক আগে ছিল সংবাদের শিরোনামে। একই রকম অক্সিজেন সংকট, ডাঃ কাফিল খানের নিজের চেষ্টায় অক্সিজেন সংগ্রহ, আর তারপর তাঁরই জেলে যাওয়া। সারা দেশই আন্দোলিত হয়েছিল সেই ঘটনায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও মেইনস্ট্রিম ছবিতে সে ঘটনার রেশ দেখা যায়নি। যা অবলীলায় করে দেখাল শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’। চিনিয়ে দিল চিকিৎসা ক্ষেত্রের দুষ্টচক্রকে। আর তার জন্যি ছবির নির্মাতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডাঃ কাফিল খান।
তিনি জানিয়েছেন, ছবিটি তাঁর দেখা হয়নি ঠিকই, তবে বহু পরিচিত মানুষ তাঁকে মেসেজ করে ছবির কথা জানিয়েছেন। ছবির ঘটনা ও বাস্তবের সঙ্গে অনেকটা যে ফারাক আছে, তা তিনিও জানেন। ছবিতে ন্যায় মিললেও, বাস্তবে এখনও তাঁরা সুবিচারের অপেক্ষায়। তবে এরকম একটা জ্বলন্ত সামাজিক ইস্যু যে শেষমেশ ছবিতে উঠে এসেছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছে, তার জন্যই শাহরুখ খান ও পরিচালক অ্যাটলিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
मैंने जवान #Javan देखी तो नहीं पर लोगो ने फ़ोन मेसेज कर कह रहे आपकी याद आयी 🙏🏾
फ़िल्मी दुनिया और असली ज़िंदगी में बहुत फ़र्क़ होता है
जवान में गुनहगार स्वास्थ मंत्री वैगैरह को सजा मिल जाती है
पर यहाँ तो मुझे और उन 81 परिवार आज भी इंसाफ़ के लिए भटक रहे 😢🤲🏾
शुक्रिया @iamsrk जनाब… pic.twitter.com/YmeAzbunSX— Dr Kafeel Khan (@drkafeelkhan) September 9, 2023
নিজের জীবনের ঘটনা নিয়ে তিনি একটি বইও লিখেছিলেন। যাতে সকলের কাছে ঘটনার সত্য স্পষ্ট হয়। একসময় যা ছিল সংবাদের শিরোনামে, এখন তাই-ই বিস্মৃতির অন্তরালে। তবে, ‘জওয়ান’ যেন সেই বিস্মৃতির ধুলো সরিয়েই আবার ফিরিয়ে এনেছে সামাজিক ক্ষতগুলিকে। দর্শক যেমন শাহ্রুখ খানকে সেলিব্রেট করছেন, তেমনই এই জ্বলন্ত প্রশ্নের মুখেও পড়ছেন। তাতে কি ভাবনা-চিন্তা বদলাবে! সে অবশ্য আলাদা প্রশ্ন। তবে, মাস এন্টারটেইমেন্টকে মাধ্যম করেও যে সামাজিক বিষয়ে সোচ্চার হওয়া যায়, শাহরুখে জওয়ান যেন তা চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিয়েছে।