বলিউড জানে তিনি মিঃ পারফেকশনিস্ট। কিন্তু এই তকমা তো আর এমনি এমনি মেলেনি! তা ছবির জন্য কী কী করে থাকেন আমির খান? শোনা যাক সেরকমই দু-একটা ঘটনা।
আমির খান মানেই স্পেশাল কিছু। বলিউডের মেইনস্ট্রিম ছবিতে দীর্ঘদিন হিরোর ভূমিকায় মাতিয়ে রেখেছেন। আর তার সঙ্গেই মিশিয়ে দিয়েছেন মেথড অ্যাক্টিং-এর নানা পন্থা। দিনে দিনে ইন্ডাস্ট্রি বুঝেছে, আমির অন্য ধাতুতে গড়া অভিনেতা। অতএব তাঁর নামই হয়ে গিয়েছে ‘মিঃ পারফেকশনিস্ট’। তবে শুধু একটার পর একটা শট দিয়ে যাওয়া নয়। পারফরমেন্সকে আরও নিখুঁত করার জন্য কিছু অভিনব কাজও তিনি করেছেন।
আরও শুনুন: কোনও পোশাকই পছন্দ নয় পরিচালকের, শেষমেশ জ্যাকির গেঞ্জি পরেই শুটিং উর্মিলার
যেমন ‘গুলাম’ ছবিটির কথাই ধরা যাক। আমিরের কেরিয়ারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য সিনেমা এটি। ছবির ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে আছে ধুন্ধুমার অ্যাকশন। নায়ককেই সেই দায়িত্ব নিয়ে সিনেমাকে বক্স অফিসে সফল করে তুলতে হবে। দক্ষ অভিনেতা আমির তাই চেষ্টার কসুর করেননি। প্রায় ১২ দিন ধরে শ্যুটিং হবে এই ক্ল্যাইম্যাক্সের, এমনটাই ঠিক হয়েছিল। অ্যাকশন দৃশ্যে নায়কের শরীরে ধুলো-ময়লা, নোংরা, রক্তের ছিটে লেগে থাকবে এমনটাই দস্তুর। মেক-আপ আর্টিস্টরাই তা যত্ন নিয়ে করে দিতে পারতেন। কিন্তু আমির তো আমিরই! তিনি ঠিক করলেন কন্টিনিউটি যাতে একটুও নষ্ট না হয়, সেই কারণে এই ১২ দিন তিনি স্নান করবেন না। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। জানা যায়, যতদিন ওই শ্যুটিং চলেছিল ততদিন স্নান করেননি তিনি। সাধে কি আর তাঁকে বলে মিঃ পারফেকশনিস্ট!
আরও শুনুন: জীবিত ব্যক্তি হিন্দু, মৃত্যুর পর পালটে গেল ধর্ম! শুনে নিন বলিউডের ‘ভুল’-এর গল্প
আবার অভিনেতা সারমান যোশি শুনিয়েছিলেন আর-এক গল্প। ‘থ্রি-ইডিয়টস’ ছবির সেই আইকনিক দৃশ্যটির কথা মনে করুন। যেখানে তিন পড়ুয়া – ফারহান, রাজু আর র্যাঞ্চো মদ্যপান করে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। মাধবন, সারমান আর আমির পর্দায় ফুটিয়ে তুলবেন এই দৃশ্য। দৃশ্যটি যাতে নিখুঁত হয়, সেই কারণে আমিরই পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, ছবির খাতিরে অভিনেতাদেরও সামান্য মদ্যপান করা উচিত। আমির আর সারমানই শুরু করেছিলেন। মাধবন বরং বিষয়টি নিয়ে একটু দ্বিধায় ছিলেন। কিন্তু সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে তিনিও একই পথ ধরেন। হিন্দি সিনেমার দর্শক মাত্রই জানেন, দৃশ্যটি কতখানি নিখুঁত ভাবে দক্ষতার সঙ্গে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন তিন পোড় খাওয়া অভিনেতা।
অবশ্য মজার বিষয় হল, আমির নিজে এই পারফেকশনিস্ট তকমায় বিশ্বাস করেন না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ইমপারফেকশনের ভিতর যে সৌন্দর্য আছে, সেটাই তাঁর ভালো লাগে। তাঁর ধারণা, এই তকমা সংবাদমাধ্যম তাঁকে দিয়েছে বটে, তবে তিনি তার যোগ্য নন। বেশ কিছু সিনেমা তিনি করেছিলেন, যা বাণিজ্যসফল হয়নি, সেই কারণেই এমন তকমা জুটেছে বলে আমিরের বিশ্বাস। তবু ‘বাজি’-তে মহিলা সাজা থেকে ‘গজনি’র দ্বৈত চরিত্র, কিংবা ‘লগান’ ছবির ভুবন হয়ে আমির বুঝিয়ে দিয়েছেন চিত্রনাট্যের চরিত্র হয়ে উঠতে পারফেকশন আসলে কতটা জরুরি।