তাঁর এক হাতের ওজন ‘ঢাই কিলো’। মাথাও গরম সবসময়েই। হিন্দি সিনেমার সেই অ্যাকশন হিরো সানি দেওল অযৌক্তিক কিছু দেখলেই রেগে যান। কিন্তু অফস্ক্রিনে রাগ হলে কী করেন নায়ক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক সেই গল্পই।
সিলভেস্টার স্ট্যালোন ওরফে র্যাম্বোকে দেখে শক্তপোক্ত ‘বডি’ বানিয়েছেন তিনি। এদিকে কোনও অন্যায় দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায় তাঁর। মেজাজ আর চেহারার এহেন যুগলবন্দিতে প্রতিপক্ষের তো ত্রাহি ত্রাহি দশা। তিনি আর কেউ নন, খোদ সানি দেওল। কিন্তু জানেন কি, শুধু অন স্ক্রিন নয়, অফ স্ক্রিনেও তাঁর রাগের বহিঃপ্রকাশে দাঁতকপাটি লাগার জোগাড় হত সিনেমার কো-স্টার থেকে ডিরেক্টর সকলের। অফ স্ক্রিনে তো সাজিয়ে লেখা ডায়লগ থাকে না, থাকে না মারপিটের স্টান্টও। সিনেমার সেটে রেগে গিয়ে একবার সানি কী করেছিলেন, সেই গল্পই বলি তাহলে।
আরও শুনুন: অভিনেত্রী নয়নতারার ‘সারোগেসি মাতৃত্ব’ নিয়ে সংশয়, তদন্ত… কেন সারোগেসির সূত্রে আসতে পারে আইনি বিপাক?
শাহরুখ তখন বলিউডে নতুন। এ কথা তো সকলেরই জানা যে, রোম্যান্টিক হিরো হতে তিনি একেবারেই চাননি। ডর সিনেমার নেগেটিভ রোল তাই খুবই মনঃপূত হয়েছিল তাঁর। আর উল্টোদিকে সানি তখন বেশ নামী হিরো। ততদিনে ঘায়েল, চালবাজ, ত্রিদেভ, দামিনীর মতো বেশ কয়েকটি হিট সিনেমা করে রীতিমতো পায়ের নিচের মাটি শক্ত করে নিয়েছেন। ডরের রোম্যান্টিক হিরো হিসেবে তাঁর তেমন কোনও ডায়লগ নেই বটে। তবে, এই সিনেমার শুটিং চলাকালীন এক অফ স্ক্রিন ঘটনা সিনেমার সমস্ত ক্রু মেম্বারদের মনে সানির প্রতি একরকম ‘ডর’ এনে দিয়েছিল, বলাই যায়।
আসলে ‘ডর’ সিনেমার শেষটা কিছুতেই পছন্দ হচ্ছিল না সানি দেওলের। কোনও লজিকেই তিনি দুদিনের পুঁচকে ছোঁড়া শাহরুখের কাছে হারতে রাজি নন। সিনেমায় একজন মেরিন কম্যান্ডো সুনীলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সানি। আর সিনেমার শেষে কিনা সেই শক্ত সবল মেদহীন চেহারার কম্যান্ডোকে সামনে থেকে ছুরি মেরে শেষ করে ফেলবে শাহরুখের মতো একজন পাগলাটে প্রেমিক! আর কম্যান্ডো তাঁকে আটকাতে পারবেন না! এখানেই আপত্তি তুলেছিলেন সানি। ডিরেক্টর যশ চোপড়ার কাছে বারবার অভিযোগ করছিলেন যে এই সিনটা কোনও যুক্তিতেই দাঁড়াচ্ছে না। শাহরুখ পেছন থেকে এসে ছুরি মারলে, তাও কিছুটা যুক্তিগ্রাহ্য হতে পারে। কিন্তু ডিরেক্টর যশ চোপড়া, বলিউডের দ্য রোম্যান্টিক কিং মেকার, কবেই বা তাঁর সিনেমায় যুক্তি দিয়ে ভালবাসাকে বেঁধেছেন? এক্ষেত্রেও তাই তিনি সানির যুক্তি মানতে চাননি।
আরও শুনুন: সৈনিকের পেশা বদলে হলেন পর্ন তারকা, কিন্তু স্তন প্রতিস্থাপনের জন্য কী করলেন অভিনেত্রী?
তিনি যেমনটা ভেবেছেন তেমনটাই শ্যুটিং হল। কিন্তু এদিকে সানি তো গেলেন বেজায় খেপে। ডিরেক্টর যশ চোপড়া মুরুব্বি মানুষ। তাঁর ওপর রাগ না ঝেড়ে ফেলার জন্য নিজেকে অনেক কষ্টে সংবরণ করে সানি নিজের জিনসের পকেটে হাত ঢুকিয়ে ফেললেন। আর এরপরই ঘটে যায় সেই অঘটন। নিজের অজান্তেই রাগের চোটে জিন্স প্যান্টের পকেট থেকে শুরু করে পুরো জিন্সই ছিঁড়ে ফেলেন সানি। গোটা সেট আক্ষরিক অর্থেই ‘হাঁ’ হয়ে যায় সানির কাণ্ড দেখে। সানির মাথা ঠান্ডা হয়ে গেলেও, শ্যুটিংয়ের বাকি দিনগুলোয় পরিচালক যশ চোপড়া, কো-স্টার শাহরুখ থেকে শুরু করে সিনেমার সমস্ত ক্রু মেম্বাররা পর্যন্ত তটস্থ থাকতেন। বলা তো যায় না, র্যাম্বোর ফ্যান কখন যে কী করে বসেন!