নায়ক সিনেমার কথা মনে আছে? একটা দিন যদি কেউ সরকারের দায়িত্ব পালন করেন, আহলে ঠিক কী কী ঘটতে পারে তাই-ই উঠে এসেছিল সেই সিনেমায়। একই রকম একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল বলি-বাদশা শাহরুখ খানকে। এক দিন যদি তিনি দেশ চালানোর ভার পান, তাহলে কী কী করবেন? উত্তরে ঠিক কী বলেছিলেন সুপারস্টার? আসুন শুনে নিই।
কখনও ধুন্ধুমার অ্যাকশন। কখনও রোম্যান্টিক হিরো। কখনও আবার নায়ক নয়, খলনায়ক। দীর্ঘ ৩০ বছরের অভিনয় জীবনে কত চরিত্রেই না ধরা দিয়েছেন শাহরুখ। কিন্তু এসবের বদলে তিনি যদি দেশের রাজা হতেন? তখনও পর্দার ‘হিরো’ হয়ে গণতান্ত্রিক দেশের জনগণকে নির্বাচনের পাঠ শেখাতেন শাহরুখ? বোধহয় না। কারণ তিনি রাজা হলে, এমন অনেক কিছুই আগেভাগে করে ফেলতেন, সেসব কথা বলার সুযোগই আসত না। না তাঁকে বলতে হত, না তাঁর মতো অন্য কাউকে বলতে হত।
আরও শুনুন: মন্দিরের জল্পনাই কি সত্যি? প্রাচীন মসজিদ থেকে সরস্বতী মূর্তি উদ্ধার ঘিরে তোলপাড় মধ্যপ্রদেশ
শাহরুখ বোধহয় প্রথম থেকেই খানিক আলাদা। হিরো হলেও তিনি ক্যামেরার সামনে অঝোরে কাঁদতে পারেন। তথাকথিত পৌরুষের সংজ্ঞা তাঁর ক্ষেত্রে খাটে না। নারীকে পনয় করে তুলে ধরা ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে বসেও তাঁর ছবি নারী অভিনেত্রীকে যথেষ্ট গুরুত্বই দিতে চেয়েছে। অন্যদিকে তিনি স্রেফ ক্যামেরার সামনে অন্যের লেখা ডায়লগ বলেই হাততালি কুড়োন না। ব্যক্তিগত পরিসরেও তিনি এমন কিছু মন্তব্য করেন, যা পর্দা কাঁপানো সংলাপের চেয়ে অনেক বেশি প্রশংসনীয়। সেই শাহরুখকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, একদিনের জন্য তিনি যদি দেশের রাজা হওয়ার সুযোগ পান তাহলে কী করতেন?
উত্তরে দেশজুড়ে চলা নানা অরাজকতার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শাহরুখ। তাঁর দাবি, ক্ষমতা থাকলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সমস্তকিছু বন্ধ করে দেখাতেন। অভিনেতার কথায়, যারা সাম্প্রদায়িক হিংসার কারণ তাদের ‘সাফাই’ করবেন তিনি। যারা দেশদ্রোহী, বোমা বিস্ফোরণ কিংবা দাঙ্গা বাধে যাদের কারণে তাদের এই সমাজ থেকে নির্মূল করে দেবেন তিনি। শুধু তাই-ই নয়। এরপর তিনি আঙুল তোলেন রাজনৈতিক নেতাদের দিকে। অভিনেতার দাবি, একদিনের জন্য তিনি ক্ষমতার শীর্ষে থাকা সেইসব নেতাদের সাধারণ মানুষের জায়গায় নামিয়ে আনবেন। শাহরুখের কথায়, এঁরা উপরতলার মানুষ হয়ে নীচে থাকা সাধারণকে দেখেন। একদিনের জন্য তাদের সেই জায়গায় দেখতে চান তিনি। অভিনেতার দাবি, উপর থেকে নীচের দিকে তাকানো সহজ। তাই তিনি চান, একদিনের জন্য ওই উপরতলার মানুষরা নীচে এসে দেখুন এখানে পরিস্থিতি ঠিক কেমন।
আরও শুনুন: কে আছ Jawan, হও আগুয়ান! শাহরুখ দেখালেন যোদ্ধা দেশের নারীরাই
বিগত কয়েক বছরে আমরা যে শাহরুখকে পর্দায় দেখছি, তার পক্ষে এমন উত্তর দেওয়া বড় ব্যাপার নয়। তাই ভিডিওর উত্তরগুলো যে এরকম হবে তা হয়তো অনেকেই আগে থেকে আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু যে সময় দাঁড়িয়ে শাহরুখ এই কথাগুলো বলেছেন, তখন জওয়ান বা পাঠান-এর কোনও অস্তিত্ব নেই। এমনকি কবীর খান-এর সঙ্গেও কারও পরিচয় হয়নি। এঁদের মাধ্যমে পর্দায় যে শাহরুখকে আমরা দেখেছি তিনি দেশের সুলতান হলে এই ধরনের উত্তর দিতেই পারেন। কিন্তু ব্যক্তি শাহরুখও যে বরাবরই একই ধারনায় বিশ্বাসী তা হয়তো অনেকেরই অজানা। ব্যক্তি আর তারকার মিশেলে সেই অন্য শাহরুখকেই যেন এখন চিনছেন সকলে।