চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শ দিতে বেশিরভাগ মানুষই ভারি ভালোবাসেন। কিন্তু তেমনটা করতে গিয়েই সম্প্রতি বিতর্কে জড়ালেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
পেশায় অভিনেত্রী, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় রোগভোগ নিয়ে পরামর্শ দিতে গিয়েছিলেন সামান্থা রুথ প্রভু। ভাইরাল জ্বরের মোকাবিলা করার জন্য কী করা যেতে পারে, সে কথাই জানিয়েছিলেন তিনি। আর তার জেরেই বিতর্কে জড়ালেন দক্ষিণী তারকা। আগুপিছু না ভেবে এহেন পরামর্শ দেওয়ার জন্য অভিনেত্রীর কারাদণ্ড হওয়া উচিত, এমন কথাও শুনতে হল তাঁকে। কিন্তু আসলে হলটা কী?
আরও শুনুন: যৌনকর্মী, কিন্তু ‘ভালো মেয়ে’! দর্শকের খিদে মেটাতে যে পথে হেঁটেছে বলিউড
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি পোস্ট করেন সামান্থা। সাধারণত ভাইরাল ফিভারের ক্ষেত্রে যে ওষুধ দেন চিকিৎসকেরা, তার বদলে এক বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বনের কথা বলেন তিনি। ওই পোস্টে নিজের একটি ছবি দিয়েছিলেন নায়িকা, যেখানে দেখা যাচ্ছিল তাঁর নাক ও মুখ নেবুলাইজারে ঢাকা। তাতে হাইড্রোজেন পারক্সাইড ও পরিশ্রুত জলের মিশ্রণ রয়েছে। আর তারকার বাতলে দেওয়া সেই উপায় দেখেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এক চিকিৎসক।
সামান্থার এই পরামর্শ চোখে পড়েছিল ডাক্তার সিরিয়াক অ্যাবি ফিলিপস-এর। তারকাকে চিকিৎসার ব্যাপারে ‘অশিক্ষিত’ বলে কটাক্ষ করে তিনি সাফ জানিয়েছেন, হাইড্রোজেন পারক্সাইড আদৌ সবার ব্যবহারের জন্য ভালো নয়। এহেন পদ্ধতি এভাবে খোলাখুলি সকলকে ব্যবহার করতে বলার জন্য তারকার জরিমানা ও কারাদণ্ডের দাবি পর্যন্ত তুলেছেন তিনি। একইভাবে ব্যাডমিন্টন তারকা জ্বালা গাট্টাও রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, একজন তারকাকে হাজার হাজার মানুষ অনুসরণ করেন, তাঁর কথা শোনেন। হ্যাঁ, তিনি ভালো ভেবেই পরামর্শ দিয়েছেন তা ঠিক, কিন্তু যদি কারও ক্ষেত্রে ওষুধ কাজ না করে, কোনও বিপদ ঘটে, তার দায় কি তিনি নেবেন!
আরও শুনুন:
এক চড়ে মুখের একপাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়, তবু অভিনয় ছাড়েননি এই নায়িকা
এমনিতেই দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষই কারও অসুখের খবর শুনলেই পরামর্শ দিতে ভারি ভালোবাসেন। সে চিকিৎসা বিষয়ে তাঁর কোনও প্রথাগত শিক্ষা থাক বা না থাক। তিনি কবে ওই জাতীয় কোন রোগীকে কাছ থেকে দেখেছেন, কিংবা নিজে কী রোগের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, সেখানে কী ওষুধপত্র কাজে লেগেছিল, তার দীর্ঘ বর্ণনা দিতে শুরু করেন এই মানুষেরা। একইসঙ্গে রোগীকে বিশেষজ্ঞের মতোই পরামর্শ দেন, এখন ঠিক কী কী করা উচিত তাঁর। কিন্তু কথা হল, প্রত্যেক মানুষের শরীরের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে। সেই হিসেবে কার উপরে কোন ওষুধ কাজ করবে, আবার একই ওষুধ কার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, তা বুঝে নেন চিকিৎসকেরা। রোগীর কেস হিস্ট্রি দেখে, ড্রাগ অ্যালার্জির কথা মাথায় রেখেই তাঁরা ওষুধ দেন। সাধারণ মানুষের পক্ষে তেমনটা করা আদৌ সম্ভব নয়। ফলে পরোপকারের কথা ভেবে তাঁরা পরামর্শ দিলেও, শেষমেশ সেই পরামর্শ আদতে বড় ক্ষতি করতে পারে অসুস্থ মানুষটির। একইভাবে, চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে যে কারও কথা শুনে ওষুধ খাওয়া বা কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগে রোগী এবং তাঁর পরিজনদেরও সবকিছু খতিয়ে দেখা উচিত। সামান্থার এই বিতর্ক আরও একবার সে কথা বুঝিয়ে দিল।