কেমন আছ গো তোমরা? আমায় ভুলে যাওনি তো! আমি তোমাদের সিনেপিসি। সিনেমা নিয়ে গল্প করতে ভালোবাসি, তাই থেকে থেকেই তোমাদের কাছে চলে আসি। হ্যাঁ এবার বেশ ক-দিন পরে এলাম। কেন জানো তো? আসলে একটা মনের মতো সিনেমা খুঁজছিলাম, যেটা নিয়ে প্রাণের সুখে দুটো কতা বলা যায়। তা হাতড়াতে হাতড়াতে পেয়েও গেলাম একটা সিনেমার মতো সিনেমা। অতনু ঘোষের বিনিসুতোয়। আজ সেই নিয়েই একটু গল্প করি।
বিনিসুতোয় বাঁধা পড়ে আমাদের জীবন
জড়িয়ে যায় তার ভিতরে কে যে কখন
কে তার খবর রাখে!
কোনটা যে গল্পের ঘর, আর কোনটা বাইরে
কার ভিতরে কে থাকে, কে আসে, কে যায়
তার কি হিসেব থাকে!
এ জীবন ক্লান্ত বড়ো, এ জীবন বড়ো নিঃসঙ্গ
এ জীবন চায় গল্পের ছায়া, গল্পের আদরজল
প্রতিদিন বেঁচে থেকে এ জীবন খোঁজে তাই
বেঁচে থাকার মানে আর এই গল্পের সম্বল।
ভাবছ তো, সিনেপিসির হঠাৎ এমন কবি কবি ভাব হল কেন? আরে সেরকম কিছু না। আসলে একটা ভালো সিনেমা দেখলে কী হয় জানো তো, কথার পিঠে কথা এসে বসে। ভাবনারা এসে হাত ধরে ভাবনার। তখন এরকম কিছু কথাই ঘনিয়ে ওঠে মনে।
আর, আমি তো আবার মনের কথা তোমাদের না বলে থাকতে পারি না। তাই বলেই ফেললুম কথাগুলো।
তা যে সিনেমা দেখে এত কথা, সেটার কথা বলি। পরিচালক অতনু ঘোষের ছবি ‘বিনিসুতোয়’ দেখে সত্যিই মনটা ভারী খুশি খুশি হয়ে উঠেছে গো। আসলে আজকাল মোবাইল হাতড়ে হাড়ড়ে যা দেখি, সব যেন নামেই সিনেমা। কী যেন একতা নেই নেই ভাব তার সারা গায়ে। কোথাও যেন ছবিগুলো হয়ে উঠতেও হয়ে উঠে না। ওই তরকারি পোড়া লেগে যাওয়ার মতো ব্যাপার আর কি! তাই তোমাদের সিনেপিসির মন যে খারাপ থাকে, সে তো তোমরা জানোই। কিন্তু, আজ সত্যি বলছি, মনটা ভালো হয়েছে।
আরও শুনুন: MiMi দেখে Cineপিসি কাকে পোস্তর বড়া খাওয়াতে চান জানেন?
‘বিনিসুতোয়’ ছবির গল্পটা আমি কিন্তু বলব না। যেটা বলব, সেটা হল, এ আসলে গল্পের ঘরদোর। মানে, এই আমাদের ঘরের কথাই ধরো না কেন! ঘরের ভিতর আবার ঘর। কোথাও একচিলতে বারান্দা। মনখারাপ হলে আমরা এক জায়গা থেকে আর-এক জায়গায় যাই। আমাদের জীবনেও, জানো তো, ঠিক তেমনটাই হয়। এই যে আমাদের জীবনখানা, এটাকে যদি একখানা গল্প ধরো, তব দেখবে, একটা গল্পের ভিতর আমরা বাস করছি প্রতিদিন। তাতে ক্লান্তি নেমে আসে এক সময়। টানা গরমের ভিতর থাকতে থাকতে যেমন বৃষ্টির জন্য প্রাণ আইঢাই করে, তেমনই এক গল্প থেকে আর-এক গল্পের ভিতর ঢুকে পড়তে ইচ্ছে করে আমাদের। যে জীবন একাকীত্বের ভারে ক্লান্ত, সে হঠাৎ এমন করেই আর এক জীবনের ভিতর ঢুকে পড়ে যেন একটু মুক্তির শিস দিয়ে ওঠে। এই যে একটা আলো-আঁধারি খেলা, এই যে সম্ভব-অসম্ভের দোলাচল, এইটেই কী যে চমৎকার ধরা পড়েছে অতনুর সিনেমায়, যে কী বলব! আমি তো পরিচালককে প্রথমেই তিনটে পোস্তর বড়া খাওয়াব এই জন্য।
আরও শুনুন: Hungama 2 দেখে খোশমেজাজে Cineপিসি বলল…
আর দুজনকেও পোস্তর বড়া খাওয়াব ঠিক করেছি। তাঁরা হলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী আর জয়া আহসান। এই যে জীবন আর গল্পের একে অন্যের ভিতর ঢুকে পড়া আবার বেরিয়ে আসা – এই চমৎকার ব্যাপারটা তাঁরা কী অনবদ্য অভিনয়েই না ফুটিয়ে তুলেছেন। শুধু চোখের ভাষায় তাঁরা যে কথা বলে উঠতে পারেন পর্দায়, তার তুলনা নেই।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।