নারীবাদের জন্যই নাকি গোল্লায় যাচ্ছে সমাজ। আসলে ঘর সামলানো, সন্তান লালনপালন করাই নারীর কাজ। এমনটাই মনে করেন নোরা ফতেহি। এবার তারকার কথার পালটা জবাব দিলেন আরেক অভিনেত্রী রিচা চাড্ডা। কী বললেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
সমাজকে রসাতলে পাঠাচ্ছে নারীবাদই। কারণ নারীবাদে বিশ্বাসের দরুনই মেয়েরা নিজেকে অবলম্বন করে বাঁচতে চাইছে, এমনকি এ কথাও বলতে পারছে যে কোনও পুরুষকেই আর প্রয়োজন নেই তাদের। আর সে ভাবনাই নাকি সমাজের পক্ষে সর্বনাশের, সম্প্রতি এমন কথাই খোলাখুলি বলে বসেছিলেন বলি তারকা নোরা ফতেহি। সে মন্তব্যের জেরে বিতর্কও কম হয়নি। এবার সে কথারই মোক্ষম জবাব ছুড়লেন আরেক বলি তারকা, রিচা চাড্ডা।
আরও শুনুন:
‘আঙুল ঠিক জায়গায় দিন’, অভিনেত্রীর হস্তমৈথুনের দৃশ্য ঘুরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচনী প্রচারও
মেয়েদের একার জোরে বাঁচা নিয়েই সম্প্রতি আপত্তি জানিয়েছিলেন নোরা ফতেহি। তাঁর সাফ দাবি, মেয়েরা বাইরে বেরিয়ে কাজকর্ম করতে পারে বটে, তবে তা একটা সীমাতেই থেমে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে ঘরের মধ্যে নারী ও পুরুষের সেই ভূমিকাই পালন করা উচিত, যা সমাজ বেঁধে দিয়েছে। অর্থাৎ পুরুষ সেখানে হবে উপার্জনকারী, সংসারের চাহিদা মেটানোর আর্থিক দায়িত্ব থাকবে তারই, উলটোদিকে ঘর সামলানো আর স্বামী-সন্তানের দেখভাল করার যাবতীয় দায়িত্ব বর্তাবে একা নারীর উপরে। বিয়ে করা এবং মা হওয়া সেখানে নারীর অবশ্য কর্তব্য। যারা এমনটা ভাবতে নারাজ, তাদের উদ্দেশে কড়া আক্রমণ শানিয়ে নোরার বক্তব্য ছিল, নারীবাদই আসলে অন্যভাবে ভাবতে শেখায়, আর তার জেরেই সমাজ রসাতলে যাচ্ছে।
আরও শুনুন:
‘যাহ্, অন্তর্বাসের কথাই ভুলে গেছি!’ চোখ টিপে মশকরায় উত্তাপ বাড়ালেন গায়িকা
এমনিতে মেয়েরা তাদের জীবন কীভাবে বাঁচবে, তা ঠিক করার এজেন্সি তাদের হাতে দিতে নারাজ সমাজের একটা বড় অংশ। যে কোনও পরিণতবয়স্ক মানুষের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে, অথচ মেয়েদের যেন কখনোই বড় হতে নেই। তারা কী বলবে, কীভাবে চলবে, কী করবে, সবটারই গাইডলাইন বেঁধে দিতে হবে। নোরার কথাতেও শোনা গিয়েছিল তেমনই নির্দেশের সুর। এবার সেই মন্তব্যকে সপাটে উড়িয়ে দিয়েই রিচা চাড্ডা জানালেন, মহিলাদের কী করা উচিত বা কী করা উচিত নয়, তা বলে দেওয়াকে মোটেও সমর্থন করেন না তিনি। শুধু তাই নয়, নোরা যে ভাবনাকে নারীবাদ বলে নাকচ করছেন, তিনি নিজেও যে এক অর্থে সেই ভাবনার শরিক, তা দেখিয়ে দিয়েছেন রিচা। ব্যঙ্গের সুরে তিনি বলেছেন, নারীবাদের ভালো ব্যাপার হল, এই মতাদর্শ তাদেরও গ্রহণ করে, যারা নারীবাদের সুবিধা নেয় কিন্তু নিজেদের নারীবাদী বলতে চায় না। এখনকার দিনে কোনও নারী যে তাঁর ইচ্ছেমতো বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে পারছেন, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাচ্ছেন, ইচ্ছেমতো পোশাক পরতে পারছেন, পেশা বাছতে পারছেন, এর কোনোটাই তো আগে সহজ ছিল না। নারীবাদ মেয়েদের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করেছে বলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। কিছু মানুষ মনে করেছিলেন যে মেয়েদের ভূমিকা কেবল ঘরে নয়, তাদের বাইরে যাওয়ার অধিকারও রয়েছে, তাই আজকের মেয়েদের পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ সুগম হয়েছে। অর্থাৎ নাম না করেই রিচা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, নোরা নিজে যে জীবন যাপন করেন, তাও নারীর অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ লড়াইয়ের ফলশ্রুতি। আর সে পরিবর্তনের সুবিধা নিয়েও যে সেই লড়াইকে ছোট করেন কোনও কোনও নারী, সে কথা মনে করিয়েই নোরার মন্তব্যের মোক্ষম জবাব দিলেন রিচা।