বহুদিন পর্যন্ত এ গানের অর্থ নিজেদের মতো করেই ভেবে নিয়েছিলেন বিশ্বের সঙ্গীতরসিকরা। সেই ১৯৮৫ সালের জুনে গানটি মুক্তি পেয়েছিল। তারপর থেকে গানের ‘অন্য’ মানে নিয়ে কেউই খুব বেশি মাথা ঘামাননি। খোদ ব্রায়ান অ্যাডামসই মিথ ভেঙে বলেছিলেন, গানের শরীরে নিহিত আছে যৌনতার আভাস।
কলেজ ফেস্ট হোক বা বন্ধুদের সমাবেশ; ক্যান্টিন থেকে কমনরুম; তরুণ মনে এখনও ঝড় তোলে ‘Summer of 69’। কিংবদন্তি ব্রায়ান অ্যাডামসের অনেক গানই এক প্রজন্মের বাঙালির মুখস্থ। তবে ‘Summer of 69’ বোধহয় সবথেকে জনপ্রিয়। জীবনের রঙিন দিনগুলোর কথা যে আড্ডায় ফিরে ফিরে আসে সেখানে এই গান প্রায় অপ্রতিদ্বিন্দ্বীই বটে। তবে, শুধু বাঙালিদের কাছে নয়, ২০০৬-এর এক সমীক্ষা জানান দিচ্ছে, ড্রাইভ করার সময় এই গানটিই সবথেকে বেশি শোনেন কানাডাবাসী। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, ভাষা ফরাসি হোক বা ইংরেজি, সবার কাছেই সবথেকে প্রিয় ব্রায়ান অ্যাডামস।
বহুদিন পর্যন্ত এ গানের অর্থ নিজেদের মতো করেই ভেবে নিয়েছিলেন বিশ্বের সঙ্গীতরসিকরা। সেই ১৯৮৫ সালের জুনে গানটি মুক্তি পেয়েছিল। তারপর থেকে গানের ‘অন্য’ মানে নিয়ে কেউই খুব বেশি মাথা ঘামাননি। সালের উল্লেখ ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে গিয়েছে। পিঙ্ক ফ্লয়েডের ‘Summer of 68′-এর সঙ্গেও কোনও ধন্দের জায়গা নেই। ক্রমে ক্রমে গানটি জীবনের এক উষ্ণ সময়ের স্মৃতিচারণ হয়েই বিশ্ববাসীর মনে দাগ কেটেছিল। ভুল ভাঙল অনেক পরে। যখন খোদ ব্রায়ান অ্যাডামসই মিথ ভাঙলেন। বলেছিলেন, গানের কথার আড়ালে আড়ালে অন্য একরকম অর্থও লুকিয়ে আছে। ফেলে আসা স্মৃতির উষ্ণতার ওম্ নিশ্চিতই অনুভব করা যায়। তবে, এর ভিতরই নিহিত আছে যৌনতার আভাস। গানের ’69’ সংখ্যাটিকে শুধু সাল হিসাবে দেখা যায়। আবার ’69’ যৌনতার একটি পজিসন বা মুদ্রাকেও চিহ্নিত করে। ফলে, গানটি দ্বৈত অর্থ বহন করছেও বলা যায়। বহুদিন পর্যন্ত গানের এই অর্থের দিকে সেভাবে ঝোঁকেননি শ্রোতারা। ব্রায়ানের কথায় যেন, নতুন করে চেনা গেল গানটিকে। অর্থাৎ উষ্ণ ঋতুতে ভালোবাসাবাসির শরীরী আভাসও লেগে আছ এই গানের শরীরেও। এক সাক্ষাৎকারে তাই মশকরা করে গানের স্রষ্টা বলেই ফেলেছিলেন, সকালের জলখাবারের টেবিলে এই গান একটু বেশিই যৌন আবেদন বয়ে আনবে না কি!
তবে শুধু সঙ্গীতে সাক্ষাৎ নয়, ব্র্যায়ান অ্যাডামস নিজে এই দেশে এসেছেন একাধিকবার।এই নিয়ে ষষ্ঠবার ভারতে অনুষ্ঠান করছেন তিনি। ভারতীয় সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে তাই ব্রায়ানের শোয়ের স্মৃতিও বেশ উষ্ণ এবং মেদুর। একবার নাকি তাঁর শোয়ের সময়, যখন সাউন্ডচেক চলছ তখন একটি গরুর দেখা মেলে সেখানে। উদ্যোক্তারা তৎপর হয়ে সবকিছু সামলে নেন। তবে, সেদিনের স্মৃতি ভোলেননি অ্যাডামস। পরে ভারতের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে এই মুহূর্তের কথা তাঁর মনে ফিরে এসেছে। আর এই দেশের সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে ফিরে এসেছে তাঁর ঝড় তোলা পারফরমেন্স, মাতিয়ে তোলা মঞ্চ। খুব কম শিল্পীই পারেন, একটি গানকে অনেকগুলো প্রজন্মের অনেক মানুষের জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে। ব্রায়ান অ্যাডামস পেরেছেন, তাঁর ‘Summer of 69’-কে অনেকের জীবনের গান করে তুলতে।