একদিকে লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের নিরন্তর তাগাদা। অন্যদিকে নিয়মিত অনুষ্ঠানে হাজিরা দেওয়া। জনতার ভিড়, সই আর সেলফি সংগ্রহের হুড়োহুড়ি সামলানো। এসবের মাঝে একটু অবকাশের জন্য হাপিত্যেশ করে থাকেন বলিউডের তারকারা। ব্যস্ত শুটিং শিডিউল থেকে সামান্য ছুটি মিললেই খোলা হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে চান তাঁরা। আর সেই কারণেই পাড়ি জমান দেশবিদেশের বিভিন্ন পছন্দের ডেস্টিনেশনে। কিন্তু অন্যদের চেয়ে একেবারে আলাদা পঙ্কজ ত্রিপাঠী। বিলাসবহুল বিদেশ যাত্রা নয়, নিজের গ্রামের ঘরোয়া পরিবেশই তাঁর ছুটি কাটানোর প্রিয় জায়গা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সম্প্রতি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠীর একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নিজের হাতে বিহারের জনপ্রিয় খাবার লিট্টি চোখা রান্না করছেন অভিনেতা। তাও একেবারে গ্রাম্য কায়দায়। দেখা যাচ্ছে, মাটির উনুন ঘিরে বসে রয়েছেন অনেকেই। তাঁদের সঙ্গেই একেবারে ঘরোয়া ভাবে উবু হয়ে বসে রয়েছেন পঙ্কজ। নিজের হাতেই ওই উনুনে লিট্টি সেঁকে নিচ্ছেন তিনি। গ্রামের জীবনের আনন্দ যে তিনি ভালভাবেই উপভোগ করছেন, ভিডিওতে নিজের মুখেই সে কথা স্বীকার করেছেন অভিনেতা। কেবল নিজে হাতে রান্না করাই নয়, নলকূপের জলে স্নান করতেও যে তিনি সমান উৎসাহী, সে কথাও সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন পঙ্কজ।
আরও শুনুন: ৫ লক্ষ কৃষক দিলেন ২ টাকা করে, তৈরি হল দেশের প্রথম ‘ক্রাউড-ফান্ডেড’ সিনেমা
বিহারের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে আধপেটা খেয়ে বড় হয়েছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী। আর্থিক প্রতিপত্তি বা প্রাচুর্য চোখেই দেখেননি। কিন্তু তিনিই বর্তমানে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের তারকা অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম। ‘ওমকারা’, ‘রাবণ’, ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’, ‘দাবাং-২’, ‘সিঙ্ঘম রিটার্নস’, ‘মিমি’র মতো একাধিক ব্লকবাস্টার সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি। দুর্দান্ত অভিনয়ের গুণে পরিচালক আর দর্শক উভয় পক্ষেরই চোখের মণি এই অভিনেতা। একের পর এক জনপ্রিয় ছবি এবং সিরিজে ডাক পড়ে তাঁর। কিন্তু এই জনপ্রিয়তা, আর্থিক সচ্ছলতা, নাগরিক জীবন- কোনও কিছুই বদলে দিতে পারেনি তাঁর ভেতরের মানুষটাকে। তারকাসুলভ বিলাসবহুল জীবনযাপন যে তাঁকে টানে না, বারবার সে কথা জানিয়েছেন তিনি। বরং ছাপোষা মানুষের মতো জীবন কাটাতেই তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, গ্রামের মানুষদের কাছে তিনি এখনও আগের সেই পঙ্কজ। তিনি নিজেও যে তা-ই চান, সে কথাও স্পষ্ট বলেছিলেন অভিনেতা। আর তাই গ্রামে গেলে সেখানকার অভ্যস্ত জীবনযাত্রাকেই আপন করে নিতে ভালবাসেন তিনি, যাতে অন্যদের চেয়ে তাঁকে আলাদা না মনে হয়। এমনকী গ্রামে গেলে ব্রাশ-পেস্ট নয়, নিমের দাঁতন ব্যবহার করেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও শুনুন: ‘বিয়ের আগে যৌনতা ব্যক্তিগত বিষয়’, আলিয়াকে নিয়ে মশকরার আবহে সপাট দিয়া মির্জা
আসলে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা পঙ্কজ এখনও মনে মনে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাঁর সেই নিজস্বতাকেই। আর সেই কারণেই ব্যস্ত জীবন থেকে একটু ছুটি জোগাড় করে নিতে পারলেই শিকড়ের কাছে পৌঁছে যান এই অভিনেতা। খ্যাতি, যশ, অর্থ সবকিছু পেয়েও যে মাটির কাছাকাছি থাকা যায়, সে কথাই বারবার মনে করিয়ে দেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী।