মুসলিম যুবককে বিয়ে করেও ধর্ম পরিবর্তন করেননি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এই ঘটনা হয়তো বিরল। কিন্তু প্রায় বছর ৪০ আগে জনপ্রিয় বলিউড দম্পতি এমনটা সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন। নাসিরুদ্দিন শাহ্ কে বিয়ের পরও ধর্মান্তরিত হননি জনপ্রিয় অভিনেত্রী রত্না পাঠক। সম্প্রতি এক ‘খোলা চিঠি’-তে পুরনো দিনের সেই সব কথা মনে করালেন নাসিরুদ্দিন। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভিন ধর্মের বিয়ে। অনেকের কাছেই এই অবস্থার নতুন পরিচয় ‘লাভ জিহাদ’। বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের প্ররোচনায়, প্রায়শই এই ইস্যুতে উত্তাল হয় দেশ। কিন্তু সব ক্ষেত্রে ভিন ধর্মের বিয়ে মানেই যে ‘জিহাদ’ নয়, সম্প্রতি সে কথা মনে করালেন জনপ্রিয় অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ্।
আরও শুনুন: পৃথিবী নাকি ঘুরছে না! পাক যুবকের আজব দাবিতে হাসির রোল নেটপাড়ায়
শুধু তুখোড় অভিনেতাই তিনি নন, নাসিরুদ্দিন শাহ্ রাজনৈতিক ভাবেও যথেষ্ট সচেতন থাকেন সবসময়। ধর্মসূত্রে দেশ জুড়ে ঘৃণা ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বহুবারই মুখ খুলেছেন তিনি। তা নিয়ে বিদ্ধ হয়েছেন সমালোচনাতেও। কিন্তু একজন সচেতন সৃষ্টিশীল মানুষ হিসাবে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ না করে তিনি পারেননি। আর সেই নিরিখেই তিনি আবারও সমাজের এক নতুন ‘ব্যাধি’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। সম্প্রতি নিজের জীবনের কথা বলতে গিয়ে তিনি ‘লাভ জিহাদ’-র প্রসঙ্গ টানেন। মুসলিম হয়েও তিনি বিয়ে করেছিলেন এক হিন্দু মহিলাকে। আর তাঁকে কোনওদিন ধর্মপরিবর্তন করতে হয়নি। যদিও বলিউডে এমন ভিন ধর্মের বিয়ের উদাহরণ রয়েছে আরও। শর্মিলা ঠাকুর কিংবা গৌরী খান, এঁদের সকলেরই বিয়ে হয়েছে অন্য ধর্মে। তবে রত্না পাঠক এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কারণ বিয়ের পর শর্মিলা ঠাকুর হয়েছিলেন বেগম আয়েশা সুলতানা। গৌরী অবশ্য ধর্ম পরিবর্তন করেননি। তবে তাঁর থেকে বহু বছর আগেই এ কাজ করেছেন রত্না পাঠক। নাসিরুদ্দিন শাহ্-কে বিয়ে করলেও নিজের ধর্ম পরিবর্তন করাননি রত্না। আর এ ব্যাপারে কোনওদিন নাসিরুদ্দিনের পরিবারের তরফে চাপ দেওয়া হয়নি তাঁকে।
আরও শুনুন: হঠাৎ দেখা! বিয়ের আসরে প্রেমিককে দেখেই গাঁটছড়া বাঁধতে নারাজ কনে
আসলে এতে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই বলেই মনে করেন নাসিরুদ্দিন। অভিনেতার কথায়, ৩৮ বছরের বিবাহিত জীবন তাঁদের। এতদিনে বহু ঝড় সামলেছেন দুজনে, কিন্তু কখনও দুজনের মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে মতবিরোধ হয়নি। স্মৃতিচারণায় নিজের মায়ের কথাও উল্লেখ করেন নাসিরুদ্দিন। হিন্দু মেয়েকে বিয়ের সিদ্ধান্ত জানানোর পর তিনি একবারেই রাজি হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁর স্ত্রী ধর্ম পরিবর্তন করবেন না এ কথাও নাসিরুদ্দিন মাকে জানিয়েছিলেন। তাতেও কোনওরূপ আপত্তি করেননি বৃদ্ধা। বরং বলেছিলেন, কারও ধর্মীয় বিশ্বাস কীভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব! নিজের জীবনের এইসব অভিজ্ঞতার কথা বলেই তিনি যেন বর্তমান সমাজকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন অনেককিছু।