লগান তৈরির আগে আমিরকে সতর্ক করেছিলেন অমিতাভ। বলেছিলেন, এই সিনেমা ফ্লপ হবেই। তিনি একা নন, এই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন জাভেদ আখতারও। কিন্তু কেন? যে সিনেমা আন্তর্জাতিক মঞ্চে এমন খ্যাতি পেয়েছে, তা তৈরির হওয়ার আগে এমন কথা কেন বলেছিলেন অমিতাভরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভুবন আর তার দলবল সেই যে ইংরেজদের হারিয়ে দিল তাদেরই খেলায়, তারপর থেকে সিনেমাটি আর নেহাত ছায়াছবি হয়ে থাকল না। আমির খানের ‘লগান’ যেন একরকম আধুনিক ভারতের উপকথা হয়ে উঠল। হোক না সিনেমার পর্দায়, তবু ব্রিটিশ ঔদ্ধত্যের ওই পতনের ইতিবৃত্তকে ভারী আপন করে নিয়েছেন ভারতীয়রা। অথচ এই সিনেমা তৈরির আগে রীতিমতো আশঙ্কায় ভুগেছিলেন অমিতাভ বচ্চন কিংবা জাভেদ আখতারের মতো কিংবদন্তি শিল্পীরা। ভেবেছিলেন, এই সিনেমা কোনওমতে হিট হতে পারবে না।
:আরও শুনুন:
‘লগান’ ছবির সিক্যুয়েলে এবার ভুবন হবেন বিরাট কোহলি! ব্যাপারটা কী?
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। উত্তেজনায় ফুটছে ভারত। ভিনদেশে জোরকদমে প্রস্তুতি চালাচ্ছেন বিরাট-রহিত-শুভমনরা। কোনওভাবেই ফ্যানদের হতাশ করতে তাঁরা নারাজ। যদিও জানা যাচ্ছে, সামান্য চোট পেয়েছেন কোহলি। তা নিয়ে খানিক দুশ্চিন্তার মেঘ ভারতীয় শিবিরে। তবে মাঠের লড়াইয়ের আগে ইন্টারনেটে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে লগান নিয়ে। এমনটা অবশ্য নতুন নয়। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের ম্যাচ থাকলেও একইভাবে ‘লগান’ প্রসঙ্গ ফিরে ফিরে আসে। এবার সে বালাই নেই, তবে লগান চর্চায় ফিরেছে অন্য কারণে। নেপথ্যে খোদ আমির খান!
:আরও শুনুন:
অস্কারে ‘আমির লবি’! ভারতের আশা ‘লাপাতা’ হতেই বিতর্ক, তাতে লাভ কার?
সম্প্রতি ক্যারিয়ারের অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা নিয়ে বেশ কিছু পুরনো কথা জানিয়েছেন আমির। সেই সময় বক্স অফিসে আজকের মতো সফল ছিলেন না আমির। কাজেই কোনও সিনেমা শুরুর আগে সাতপাঁচ ভাবতেই হতো। আর তাতেই জাভেদ আখতারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। নতুন সিনেমা ঠিক কেমন প্রভাব ফেলতে পারে বক্স অফিসে, এই ছিল আলোচনার মূল বিষয়। তবে সেদিন, এতটুকু আশার আলো দেখাননি জাভেদ। বরং সবদিক দিয়ে ‘লগান’ ফ্লপ হবে, এমনটাই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। নেপথ্যে যুক্তিও দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, সেই সময়কার দর্শক ক্রিকেট নিয়ে তৈরি সিনেমা দেখতে এতটুকু আগ্রহী হবে না। তার ওপর ছবিতে কোনও বিদেশের দৃশ্য নেই, গোটা সিনেমা শ্যুট হয়েছে গ্রামে, তাতে কার ভালো লাগবে! এই প্রশ্নই তুলেছিলেন জাভেদ। আরও একটা বিষয় নিয়ে তাঁর ঘোর আপত্তি ছিল। সেটার সঙ্গে জড়িয়ে অমিতাভ বচ্চন। অভিনয়ের পাশাপাশি ভরাট গলার জন্যও জনপ্রিয় ছিলেন অমিতাভ। সেই সুবাদে লগান সিনেমায় ভাষ্যকারের ভূমিকায় তাঁকেই চেয়েছিলেন আমির। কিন্তু এমনটা হোক, তা চাননি জাভেদ আখতার। আশ্চর্যের বিষয় খোদ অমিতাভও চাননি এই কাজ তাঁকে দেওয়া হোক। তবে কি ব্যক্তিগত শত্রুতা? একেবারেই না। নেপথ্যে কারণটা ভারী অদ্ভুত! সেই সময় ইন্ড্রাস্ট্রির একটা প্রচলিত ধারণা ছিল, অমিতাভ কোনও সিনেমায় ধারাভাষ্যের কাজ করলে তা ফ্লপ হবেই। খোদ বচ্চনসাহেব নিজেও সে কথা মানতেন। তাই আমিরকে ডেকে আগাম সতর্ক করেছিলেন।
যদিও শেষমেশ তাঁকেই দায়িত্ব নিতে হয়। আর বাকীটা ইতিহাস। শুধু হিট নয়, এই সিনেমা এমনই প্রভাব ফেলে দর্শকদের মনে যে এখনও এ প্রসঙ্গে কথা হয়। বিশেষ করে ভারতের ম্যাচ থাকলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের আগে সেই প্রসঙ্গ ধরেই চর্চায় ফিরল লগান।