সুস্মিতা সেন, লারা দত্তের পরে হরনাজ সান্ধু। মাঝখানে কেটে গিয়েছে একুশটা বছর। এতগুলো বছর পরে ফের ভারতে ফিরল মিস ইউনিভার্সের খেতাব। ৭০তম মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে এ বার সেরা সম্মান জিতে নিয়েছেন এই পঞ্জাব-কন্যা। বিউটি উইদ ব্রেইনস হ্যাশট্যাগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে তাঁরই ছবি, তাঁরই গল্প। বিশ্বসুন্দরী মানেই তো গ্ল্যামার জগতের হাতছানি। তবে শুধুই কি সম্মান, নাকি মিস ইউনিভার্সের জন্য রাখা থাকে অন্যান্য উপহারের সম্ভারও? নিশ্চয়ই আপনাদের জানতে ইচ্ছা করছে, মিস ইউনিভার্সের মঞ্চ থেকে আর কী কী উপহার পেলেন হরনাজ? আসুন, শুনে নিই সেসবই।
এ বছর মিস ইউনিভার্সের আসর বসেছিল ইজরায়েলের এইলাটে। দেখতে দেখতে সত্তরে পা দিল এই সুন্দরী প্রতিযোগীতা। একুশ বছর পর ভারতে ফিরল মিস ইউনিভার্সের সম্মান। ২০২১ সালে মিস ইউনিভার্স হলেন পঞ্জাবের মেয়ে একুশ বছরের হরনাজ সান্ধু। অদ্ভুত একুশের সমাপতন যেন।
১৯৯৪ সালে সুস্মিতা সেন, ২০০০ সালে লারা দত্ত। তার পরে এই সম্মানের মুখ দেখেনি ভারত। ৭৯টি দেশের বাঘাবাঘা সুন্দরীদের পিছনে ফেলে এ বছর এই বিশেষ সম্মান জিতে নিয়েছেন হরনাজ। গত রবিবার হরনাজকে সেরার মুকুট পরিয়ে দিলেন ২০২০ সালের মিস ইউনিভার্স আন্দ্রে মেজা।
তো ব্রহ্মাণ্ডের সেরা সুন্দরীর মঞ্চে শুধু কি ওই মুকুটটুকুই পেলেন হরনাজ। নাকি তার সঙ্গে রয়েছে আরও কোনও উপহার?
আরও শুনুন: মাতিয়েছিলেন মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চ, হয়েছেন আইএএস অফিসারও… চেনেন এই সুন্দরীকে?
আগেই বলে দিচ্ছি, ওই মুকুটটিকে যেমনতেমন ভাবলে কিন্তু ভুল করবেন। আচ্ছা! কত দাম হতে পারে বলুন তো ওই বিশ্বসুন্দরীর মুকুটের?
আজ্ঞে হ্যাঁ। খুব কম করে হলেও ওই মুকুটটুকুরই দাম হবে ৩৭ কোটি টাকা। তা মিস ইউনিভার্সের মুকুট বলে কথা। প্রকৃতি, সৌন্দর্য, নারীত্ব, শক্তি ও একতার চিহ্ন বহন করছে ওই মুকুট। ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়ে তৈরি ওই মুকুটে রয়েছে গুনে গুনে ১৭৭০টি হিরে। আর মধ্যিখানে বড় মনির মতো যে হিরেটি রয়েছে, বলাই বাহুল্য সেটি মহামূল্য। ৬২.৮৩ ক্যারেট ওজন শুধু সেটিরই। দামে তো বটেই, সৌন্দর্যের দিক থেকেও অমূল্য ওই মুকুট।
কী ভাবছেন, মুকুটেই শেষ! মোটেও না। এরই সঙ্গে বড়সড় অঙ্কের আর্থিক পুরষ্কারও পাবেন হরনাজ। টাকার অঙ্কটা ঠিকঠাক জানা না-গেলেও সেটা যে বেশ আকর্ষনীয়, তা বলাই যায়।
এরই সঙ্গে এক বছর নিউ ইয়র্কের মিস ইউনিভার্স অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে পারবেন হরনাজ। তবে সেই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টটি মিস ইউএসএ-র সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে হরনাজকে। মুদির খরচ থেকে জামাকাপড়, যাবতীয় খরচের ভারই ওঠাবে মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন।
এখানেই শেষ নয়। প্রায় এক বছরের জন্য প্রফেশনাল মেক-আপ আর্টিস্ট ও ফ্যাশন ডিজাইনারের একটি দল বরাদ্দ করা হবে হরনাজের জন্য। মেকআপ থেকে জামাকাপড়, গয়না থেকে জুতো এমনকি ত্বকের যত্নে কী কী মাখবেন হরনাজ, তা-ও ঠিক করে দেবে সেই বিশেষজ্ঞ দল।
আরও শুনুন: অনুপ্রেরণা ‘রামায়ণ’, করণের ‘কভি খুশি কভি গম’ ধরে রেখেছে আধুনিক রাম-লক্ষ্মণকে
হরনাজের মডেলিং পোর্টফোলিও বানাতে সাহায্য করবেন বিশ্বের সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ ফোটোগ্রাফার। ফ্যাশন থেকে শুরু করে ত্বক, দাঁত এমনকি খুটিনাটি চিকিৎসার দায়িত্বও সামলাবে মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন। এর সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, পার্টি, ছবির প্রিমিয়ার, স্ক্রিনিংয়ে কোনও রকম পাস ছাড়াই ঢুকতে পারবেন হরনাজ। বেড়াতে যাওয়া থেকে হোটেলের খরচ, সবটাই বইবে মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন। এমনকি তাদের টাকাতেই সেরে আসতে পারেন বিশ্বভ্রমণও। তবে এ সব সুবিধাই হরনাজ পাবেন মাত্র এক বছরের জন্য।
কী ভাবছেন, এলাহি ব্যবস্থা! তবে শুধু বিলাসবহুল জীবনই নয়। মিস ইউনিভার্স হিসেবে তাঁর কাঁধে রয়েছে বড়সড় দায়িত্বও। মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশনের প্রধান অ্যাম্বাসাডার হিসেবে সমস্ত অনুষ্ঠানে হাজিরা দিতে হবে হরনাজকে। সে পার্টি হোক বা চ্যারিটি শো- মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশনের আয়োজন করা সবকটি অনুষ্ঠানে থাকতেই হবে তাঁকে। তখন কিন্তু কোনও অজুহাতই শোনা হবে না। এমনটাই নাকি রীতি।