ঘুমপাড়ানি গান। প্রাপ্তবয়স্ক কেউ নিশ্চয়ই সেই গান শুনতে বসবেন না। কিন্তু পঞ্চায়েতের বিধায়কজি শুনেছেন। সিরিজে সেই দৃশ্য সকলেই দেখেছেন। এমনকি ঘুমপাড়ানি সেই গান অনেকে গুনগুন করতেও শুরু করেছেন। ব্যাপারটা কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সিনেমায় পুরনো দিনের গান নতুন করে ব্যবহার হয়েই থাকে। এক্ষেত্রে লোক সঙ্গীতের চাহিদাও কম নয়। এমনই এক গান ব্যবহার করা হয়েছে পঞ্চায়েত সিরিজের তৃতীয় সিজনে। যা অল্প সময়েই দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু জানেন কি এই গান আসলে ঘুমপাড়ানি গান?
আরও শুনুন: ‘পঞ্চায়েতে’ জামাই আদরের ঢল, অথচ সেফ-করিনার পার্টিতে বাসন মাজতে হয় ‘দামাদজি’কে
কথা বলছি, ‘হিন্দ কা সিতারা’ গানটির সম্পর্কে। সিরিজটি যারা দেখেছেন তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন এই গান কোথায় ব্যবহার হয়েছে। একেবারে শুরুর দিকেই, বিধায়কজির বাড়ির মজলিশে এই গান গাওয়া হচ্ছিল। তা বেশ আনন্দ নিয়েই শুনছিলেন বিধায়কজি। তিনি একা নন। সঙ্গ দিচ্ছিলেন আরও কয়েকজন। গানটি ভোজপুরি ভাষায়। কাজেই গানের কথা যে সকলে বুঝতে পারছিলেন তা নয়। বাজিমাত করেছে গানটির সুর। না বুঝেই গানটি গুনগুন করতে শুরু করেছেন অনেকেই, স্রেফ সুরের প্রতি ভালোবাসায়। সিরিজেও এই গানের সুর এমন এমন জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে, যা বেশ বাড়িয়েছে সাসপেন্স। সবমিলিয়ে গানটি যে এই সিরিজের সঙ্গে একেবারে মিশে গিয়েছে তা বলাই যায়। কিন্তু এই গান সিরিজটির জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয়নি। বরং গানটি বেশ পুরনো। মূলত বিহারের এক লোকসঙ্গীত। স্থানীয়দের কাছে যা ‘সোহর’ নামে পরিচিত।
আরও শুনুন: বহিরাগত নায়কের বাজিমাত ‘শোলে’ থেকে ‘স্বদেশ’-এ, খেলা ঘোরাল ‘পঞ্চায়েত’
এবার লোকসঙ্গীত মানেই তার কিছু না কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এই সোহর-ও ব্যতিক্রম নয়। জানা যায়, এই গান গাওয়া হত ছোটদের ঘুমপাড়ানোর জন্য। বাংলায় যেমন ঘুমপাড়ানি গানের চল রয়েছে। এই গানও আদতে সেই কাজেই ব্যবহার করা হত। গানের কথাও সাজানো হত সেই মতো। যেখানে খুদের প্রশংসা করতেন মাসি-পিসিরা। নানাভাবে এটাই বলা হত, বড় হয়ে বড় মানুষ হোক বাড়ির খুদে সদস্য। তার অনেক নাম, যশ, খ্যাতি হবে, এমনই বোঝাত গানের প্রতিটি লাইনের অর্থ। বিহারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও এই সোহর বেশ জনপ্রিয়। এমনকি তুলসীদাস অবধি এই গান গাইতেন বলেই শোনা যায়। তবে পঞ্চায়েতে গানটির ব্যবহার ঘুমপাড়ানি হিসেবে হয়নি। বরং এর কথায় অদলবদল করে রাজনীতির ছাপ রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে গানটির সুর। আর তাতেই সকলের পছন্দের হয়ে উঠেছে এই গান।