কার্গিল যুদ্ধের অমর শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা। কিন্তু কেমন আছেন তাঁর প্রেমিকা ডিম্পল? চার বছরের প্রেমের স্মৃতিই কি তাঁকে রসদ জোগায় বেঁচে থাকার?
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে বিষ্ণু বর্ধন পরিচালিত হিন্দি ছবি ‘শেরশাহ’। আর সেই সূত্রে মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা এবং ডিম্পল চিমা-র নাম। ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার সাহস ও বীরত্বের গল্পে সবাই যতটা মুগ্ধ, তেমনই সকলের মন ছুঁয়ে গিয়েছে বিক্রম ও ডিম্পলের সহজ সরল মিষ্টি প্রেমের টুকরো টুকরো ছবি। এমনকী এই প্রেমের কাহিনি শুনে আপ্লুত স্বয়ং ছবির নায়িকা, কিয়ারা আদবানিও।
কেমন ছিল বিক্রম আর ডিম্পলের প্রেম?
আরও শুনুন: ক্যামেরার সামনে নগ্ন হয়েছেন সাত বার, পর্ন দেখা নিয়েও সাহসী Kubbra Sait
রূপকথার মতো প্রেমটা শুরু হয়েছিল চণ্ডীগড়ে। সেটা গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক। সময়টাও আলাদা, সমাজটাও। পথেঘাটে একটা ছেলে আর একটা মেয়ের প্রেম-প্রেম আচরণ দেখলে অনেকেই তখন বাঁকা চোখে তাকাত। আর রক্ষণশীল পরিবার হলে তো কথাই নেই। সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকা, এই বুঝি কেউ দেখে ফ্যালে! এর মধ্যে দুটো মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়ের প্রেম যেমন চলে তেমনই চলত। কিন্তু তাতে বাড়তি রং ছিটিয়ে দিত বিক্রমের নাটকীয় আচরণ। সিনেমাটা যাঁরা দেখে ফেলেছেন তাঁরা আঁচ পেয়েছেন তার। গাছ থেকে ফুল পেড়ে মাঝরাস্তায় বসে প্রোপোজ করা, কিংবা গুরুদ্বারে প্রেমিকার ওড়না মুঠোয় চেপে সাত পাক ঘুরে ফেলা, কিংবা কার্গিলে যাওয়ার আগে আঙুল কেটে রক্ত দিয়ে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া, বাস্তব জীবনে এমনটাই ছিলেন ছটফটে বিক্রম। যুদ্ধক্ষেত্রের অকুতোভয় সৈনিক, আবার ব্যক্তিগত জীবনে চূড়ান্ত রোমান্টিক প্রেমিক। ‘টু রিল টু বি রিয়াল’- এই সম্পর্ক সম্বন্ধে এমনটাই অভিমত কিয়ারার। সত্যিই, রুপোলি পর্দার বাইরে বাস্তবে যে এমনও হতে পারে প্রেম, তা যেন চট করে বিশ্বাসই হতে চায় না।
আরও শুনুন: যৌনদাসীর জন্য কফিনবন্দি করে মেয়েদের পাচার করছে তালিবান
চণ্ডীগড়ে শুট চলাকালীন ডিম্পলের সঙ্গে কিয়ারার দেখা করিয়ে দিয়েছিলেন বিক্রম বাত্রার যমজ ভাই বিশাল। ডিম্পল বলছিলেন, সেই দিনগুলো কেমন ছিল। আইএমএ থেকে পাশ করার পর কাশ্মীরে পোস্টিং হয় বিক্রমের। মাঝে মাঝে চিঠি আর কখনও সখনও ট্রাঙ্ক কল, এইভাবেই একে অন্যকে ছুঁয়ে থাকতেন তাঁরা। তারপর সেই অভিশপ্ত কার্গিল যুদ্ধ। যেখান থেকে আর ফিরলেন না ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা। ১৯৯৯ সালের সেই ভয়াবহ যুদ্ধ সব রং কেড়ে নিল ডিম্পলের জীবন থেকেও। বিক্রম বাত্রার বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁরাও খুব পছন্দ করেন ছেলের মনোনীত মেয়েটিকে। বিক্রম এবং ডিম্পল, দুজনের মা-বাবাই বিক্রমের মৃত্যুর পর ডিম্পলকে বারবার বিয়ে করতে অনুরোধ করেছেন। বলেছেন জীবনটাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে। সে কথা কানে তোলেননি ডিম্পল। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে বাবা আপত্তি করায় একদিন বলেছিলেন বিক্রম ছাড়া কাউকে বিয়ে করবেন না। নিজের কাছেই সেই প্রতিশ্রুতি এখনও পালন করে চলেছেন ডিম্পল। মাত্র চার বছর সম্পর্কে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন তাঁরা। তার মধ্যেও কবার তাঁদের মুখোমুখি দেখা হয়েছে, সে কথা হাতে গুনে বলা যায়। সেই কদিনের স্মৃতি বুকে আঁকড়েই বেঁচে আছেন ডিম্পল চিমা।