সম্প্রতি লাহোরে দাঁড়িয়েই ২৬/১১ ইস্যুতে পাকিস্তানকে তোপ দেগেছেন বর্ষীয়ান গীতিকার জাভেদ আখতার। আর সেই কারণেই এবার তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। কিন্তু তাঁর প্রশংসায় গুরুত্ব দেওয়া দূরে থাক, কার্যত অভিনেত্রীর কথাকে উড়িয়েই দিলেন জাভেদ আখতার। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মুম্বইয়ের বাসিন্দা হিসেবে ২৬/১১-এর সেই ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা কাছ থেকে দেখেছেন তিনিও। সম্প্রতি পাকিস্তানে গিয়ে সেই ইস্যুতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার। আর তারপরেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। এই ঘটনাকে তিনি তুলনা করেছেন শত্রুর ঘরে ঢুকে তাকে আঘাত করার সঙ্গে। যদিও ঘোষিত ভাবেই তাঁদের রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা, কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বর্ষীয়ান শিল্পীর মন্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন কঙ্গনা। কিন্তু এই প্রশংসাকে কীভাবে দেখছেন জাভেদ আখতার নিজে? সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সে কথা খোলসা করলেন তিনি।
আরও শুনুন: লতা মঙ্গেশকরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, সৌজন্যের প্রশ্নে পাকিস্তানকে তুলোধোনা জাভেদ আখতারের
প্রখ্যাত উর্দু কবি ফৈজ আহমেদ ফৈজ-এর স্মৃতিতে আয়োজিত ফৈজ ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে কিছুদিন আগেই লাহোরে গিয়েছিলেন জাভেদ আখতার সহ ভারতীয় সংস্কৃতি জগতের কেউ কেউ। জানা গিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে দর্শকরা তাঁকে বলেন, পাকিস্তান ভারতের দিকে কেবল বোমা ছোড়ে না, ফুলের মালাও এগিয়ে দেয়, আর ভারতের সে কথা জানা উচিত। এই প্রেক্ষিতেই জাভেদ আখতার বলেন, কেউ কাউকে দোষারোপ করলে সমস্যার সমাধান হবে না। ভারত যেমন পাকিস্তানের শিল্পীদের প্রাপ্য সমাদর দিয়েছে, তাঁদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, পাকিস্তান কিন্তু ভারতীয় শিল্পীদের জন্য তেমন উদ্যোগ নেয়নি কখনোই। আর এরপরেই ২৬/১১ ইস্যু টেনে বর্ষীয়ান গীতিকার বলেন, নরওয়ে বা মিশর থেকে কেউ এসে এই হামলা ঘটায়নি, তা ঘটিয়েছিল পাক সন্ত্রাসবাদীরাই। কিন্তু সেইরকম সন্ত্রাসবাদীরা পাকিস্তানে এখনও অবাধে ঘুরে বেড়ানোর সাহস পাচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাভেদ আখতার। আর এই মন্তব্যেরই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কঙ্গনা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনার প্রশংসা নিয়ে জাভেদ আখতারকে প্রশ্ন করা হয়। প্রথমে বিষয়টি এড়িয়েই যান শিল্পী। কিন্তু সঞ্চালক ফের একই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, কঙ্গনা একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। এর উত্তরে আপনি কী বলবেন? তার জবাবে জাভেদ সাফ জানিয়ে দেন, খোদ কঙ্গনা রানাউতকেই গুরুত্ব দেন না তিনি, তাহলে তাঁর কথা কী করে গুরুত্বপূর্ণ হবে? এরপরেই সঞ্চালকের থেকে পরবর্তী প্রশ্ন জানতে চান তিনি।
আরও শুনুন: মুসলিম তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেললেই মিলবে চাকরি, হিন্দুত্ববাদী নেতার নিদানে তুঙ্গে বিতর্ক
নিজের কাজে এবং কথায় কঙ্গনা বারেবারেই বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি গেরুয়া শিবির ঘেঁষা। পাকিস্তান এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তাঁকে আক্রমণ শানাতে শোনা গিয়েছে একাধিকবার। কিন্তু জাভেদ আখতার বরাবরই মুক্তমনা বলেই পরিচিত। সাম্প্রতিক অতীতে আইনি লড়াইতেও জড়িয়েছিলেন দুজনে। তাই কঙ্গনা যাই বলুন না কেন, তার কোনও প্রভাব স্বীকার করেননি বর্ষীয়ান শিল্পী। পাকিস্তানের প্রতি বিদ্বেষের প্রোপাগান্ডা থেকে যে তিনি ওই মন্তব্য করেননি, কঙ্গনার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে তা বুঝিয়ে দিলেন জাভেদ আখতার।