অভিষেক আর ঐশ্বর্যের বিচ্ছেদের গুঞ্জনে কবে থেকেই মুখর বলিপাড়া। সম্প্রতি সেই গুঞ্জনে নতুন করে আহুতি দিয়েছে তৃতীয় নারী প্রসঙ্গ। কিন্তু বিচ্ছেদের গল্পে অন্য নারীকে কি টানতেই হবে? প্রশ্ন তুলল এই ট্রেন্ড।
অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। বলিউডের সম্পর্ক ভাঙা-গড়ার নিয়মিত ঢেউয়ে এতদিন যাঁরা লাইটহাউসের মতো স্থির দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই তাঁদের সম্পর্কেই নাকি ফাটল। বেশ কিছু দিন ধরেই বলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল সে গুঞ্জন। তাতে ঘি ঢেলেছিল মেয়েকে নিয়ে ঐশ্বর্যের বাড়ি ছেড়ে একা থাকা, কিংবা আম্বানিদের বিয়েবাড়িতে তাঁদের আলাদা আলাদা যাওয়া। কেন দূরত্ব তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল ধন্দ। তার পরই সামনে এল নয়া তথ্য, ছোটা বচ্চনের জীবনে নাকি এখন অন্য নারী। শোনা যাচ্ছে, ‘দসভি’-র সেটে একসঙ্গে কাজের সূত্রেই নিমরত কওরের সঙ্গে মন দেওয়া নেওয়া ঘটে অভিষেকের। আর তারপরেই সংসারের সুখের কাহিনিতে টুইস্ট। সত্যি মিথ্যে কে জানে, তবে এই মর্মেই আপাতত চটুল মিম ঘুরে বেড়াচ্ছে নেটদুনিয়ায়।
প্রশ্নটা এখানেই। সম্পর্কে ভাঙন যদি আসে, তবে সেই ভেঙে যাওয়াটাই তো বড় সত্যি। সেখানে আরও কোনও তৃতীয় ব্যক্তিকে দাঁড় করিয়ে সেই ভাঙনকে আরও জোরালো মাত্রা দিতে হবে, এমন কোনও দায় আছে কি?
অথচ দেখা যায়, সমস্ত চর্চিত ভাঙনে, বা ভাঙনের চর্চাতেই সেই তৃতীয় পক্ষের আনাগোনা। বিশেষ করে পুরুষটির সঙ্গে কোনও অন্য নারীকে দাঁড় না করানো পর্যন্ত যেন বিচ্ছেদের যথাযথ কারণ মেলে না। কোনও তৃতীয় পক্ষের উপর বিচ্ছেদের সব দায় চাপিয়ে দিয়ে তবেই আমাদের সন্তুষ্টি। সেই অন্য নারীকে প্রায় খলনায়িকার চোখে দেখা হয়। যেন ভুলেই যাওয়া হয় যে, পুরুষটি নিজেও প্রাপ্তবয়স্ক। তিনি যে করছেন, তা স্বেচ্ছাতেই করছেন। তাঁকে ভুলিয়ে অন্য কোনও নারী নিজের বশ করছেন এবং আগের সম্পর্ক ভেঙে দিচ্ছেন, এমনটা বলা সেই চেনা পিতৃতান্ত্রিক ছক। যেখানে সবসময় সব দোষের ভাগী করা হয় নারীকেই, আর পুরুষ সোনার আংটি, বাঁকা হলেই বা কী!
অভিষেক-ঐশ্বর্যের বিচ্ছেদের গুঞ্জন চলছিল কবে থেকেই। তবে এতদিনে নিমরতের নাম সামনে আসায় যেন বিচ্ছেদের একটা জোরালো কারণ মিলে গেল। মনে পড়বে, এর আগে আমির খান আর কিরণ রাও-এর বিচ্ছেদের সময় শোনা যাচ্ছিল, ফতিমা সানা শেখের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েই বিয়েতে ইতি টানছেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট। যদিও এখনও পর্যন্ত সে গুঞ্জনে শিলমোহর পড়েনি। আবার নাগা চৈতন্য আর সামান্থা প্রভুর বিচ্ছেদের সময়েও টেনে আনা হয়েছিল শোভিতা ধুলিপালার নাম। কেউ বলতেই পারেন, সে কথা কি একেবারেই গুজব? পরবর্তী ঘটনাক্রম তো তা বলছে না। বরং দেখা যাচ্ছে, সেই শোভিতার সঙ্গেই ফের সাতপাকে বাঁধা পড়ছেন নাগা। কথা হচ্ছে, সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেই না এমন নয়। সেই অনুপ্রবেশে সম্পর্কের আলগা সুতো ছিঁড়ে যেতে পারে, এ কথাও সত্যি। কিন্তু এ কথাও মনে রাখা দরকার, যে, কোনও সম্পর্ক যেমন দুজনকে নিয়েই তৈরি, তেমনই তাতে ভাঙনের সময়ও তা ঘটছে দুজনের মধ্যেই। অন্য কেউ সেখানে আছে কি নেই, তা অবান্তর। সম্পর্কে থাকা দুজন আর একসঙ্গে নেই, সম্পর্কের জন্য এটুকু জানাই কেবল যথেষ্ট। কোনও কারণে সম্পর্কের বাঁধন আলগা হয়েছে বলেই সেই শূন্যতা পূর্ণ করেছেন অন্য কেউ, এমনটা হতে পারে। আবার এও হতে পারে যে, তেমন কোনও স্পষ্ট ফাঁক না থাকলেও কোনও মানসিক বা জৈবিক আকর্ষণ অন্য কারও সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে সম্পর্কে থাকা একজনকে। যাই হোক না কেন, সেই সমস্ত বিষয়টিই তো যৌথ। সম্পর্কের কাহিনি যদি ফুরিয়েই যায়, তবে সেখানে নতুন কোনও টুইস্ট যোগ করে টিআরপি বাড়বে, সম্পর্কের কোনও লাভ হবে কি?