সঙ্গমের সময় গীতাপাঠ। ‘ওপেনহাইমার’ ছবিটি দেখুন বা না দেখুন, এই দৃশ্য নিয়ে বিতর্কের চোটে সরগরম গোটা দেশ। আর সেই দৃশ্য নিয়েই এবার মুখ খুললেন খোদ সিনেমার নায়ক। কী বললেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পার্টিতে গিয়ে আলাপ একটি মেয়ের সঙ্গে। কথায় কথায় আলাপ গড়াল বিছানা পর্যন্ত। জিন ট্যাটলক নামের সেই মেয়ের সঙ্গেই যৌনতায় লিপ্ত হলেন বিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহাইমার। আর ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার সেই দৃশ্য নিয়েই বিতর্ক উসকে উঠেছে এ দেশে। না, যৌনতা নয়, আপত্তির কারণ হল যৌনতার সময়ে গীতা পাঠ করা। ছবির ওই দৃশ্যে ভগবদ্গীতার উল্লেখ ও তার ব্যবহার অসম্মানজনক, এই দাবিতেই সরব হয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা। সেই বিতর্কিত দৃশ্য নিয়েই এবার মুখ খুললেন খোদ ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার নায়ক, কিলিয়ান মারফি।
আরও শুনুন: ভারতের জন্য বদল ‘ওপেনহাইমারে’র নগ্ন দৃশ্যে! খাজুরাহোর দেশেই ছুঁতমার্গ কেন, উঠছে প্রশ্ন
ছবির একটি দৃশ্যে দেখা যায়, সঙ্গমের পরই বিছানা থেকে উঠে পড়ে জিন। ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে ওপেনহাইমারের বইয়ের আলমারি। সেখান থেকেই একটি বই টেনে নেয় সে। ওপেনহাইমার জানান, বইটি সংস্কৃতে লেখা মূল গীতা। সেই বই খুলেই ওপেনহাইমারকে পাঠ করার নির্দেশ দেয় জিন। আর সেই সময়েই ফের পুরুষটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয় সে। সেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তেই ওপেনহাইমারের মুখে শোনা যায় ভগবদ্গীতার একাদশ অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোক, যার অর্থ, “আমিই মৃত্যু হয়ে উঠেছি। আমিই পৃথিবীর ধ্বংসের কারণ।” পরবর্তী পৃথিবী ওপেনহাইমারকে চিনবে পরমাণু বোমার জনক হিসেবেই, যে পরমাণু বোমা সত্যি সত্যিই এই পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। হিরোশিমা নাগাসাকিতে অ্যাটম বোমা যে ভয়াবহ ধ্বংসলীলা ঘটিয়েছিল, সেই স্মৃতি এত বছর পরেও একইরকম দগদগে। এই প্রেক্ষিতে ওপেনহাইমারের মুখে ওই শ্লোককে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন সিনেপ্রেমীরা। কিন্তু খোদ পর্দার ওপেনহাইমার কী মনে করছেন এই প্রসঙ্গে?
আরও শুনুন: রাতভর বৃষ্টিতে ভিজে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়, অঝোরে কেঁদেছিলেন স্মিতা পাতিল
কিলিয়ান মারফি-র সাফ জবাব, সিনেমাটির জন্য এই দৃশ্যের প্রয়োজন ছিল। না, যৌন দৃশ্যে অভিনয় করতে তিনি মোটেই খুব একটা স্বচ্ছন্দ নন বলে দাবি এই অভিনেতার। আর শুধু তিনিই নন, এ জাতীয় দৃশ্যগুলি সব অভিনেতা অভিনেত্রীদের কাছেই অস্বস্তিকর বলে মত তাঁর। কিন্তু ছবির প্রয়োজনে কখনও কখনও তাকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না, সাফ জানিয়েছেন মারফি। যেমন এই ছবিতে। তাঁর মতে, ব্যক্তি ওপেনহাইমারের চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য, তাঁর অন্তরমহলের ভাঙচুর দেখানোর জন্য এই দৃশ্যের প্রয়োজন ছিল। যিনি একইসঙ্গে প্রতিভাবান বিজ্ঞানী, একাধিক ভাষা জানেন, আবার খানিক অন্তর্মুখী, মেয়েদের কাছে তাঁর আকর্ষণ ঠিক কেমন হবে, সে কথাই ফুটে উঠেছে এই দৃশ্যে। বিশেষ করে জিন ট্যাটলক ওপেনহাইমারের গোটা জীবনেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা জুড়ে আছেন। নায়ক হয়ে ওঠার পরেও ওপেনহাইমারের যে পতন হয়, পরোক্ষে সে ঘটনার অন্যতম নিয়ন্তা ছিলেন ওই তরুণী। তাই তাঁর সঙ্গে ওপেনহাইমারের সম্পর্ক ঠিক কেমন ছিল, তা না বুঝলে ওপেনহাইমারও অনেকখানি না-বোঝা হয়েই থেকে যান। এই প্রেক্ষিতে ওই যৌনদৃশ্যটিকে সিনেমার জন্য জরুরি বলেই জানালেন পর্দার ওপেনহাইমার।