আকস্মিক চলে গিয়েছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। সেদিন যেন কথা হারিয়েছিল মায়ানগরী। আবার সেই একই অনুভূতি ফিরে এল অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার আকস্মিক প্রয়াণে। শুধু বলিপাড়াই নয়, এমন অসময়ে সিদ্ধার্থর চলে যাওয়া যেন কাঁপিয়ে দিয়েছে তাঁর অসংখ্য অনুরাগীকে।
জীবন কত নশ্বর! সেই কথাটিই যেন নতুন করে মনে করিয়ে দিল। সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ কথাই বলেছেন বীরেন্দ্র সেহবাগ। অনেকের মনের কথাটিই যেন এক কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। করোনাকালে একের পর এক প্রিয় মানুষের মৃত্যু আমাদের নির্বাক করে দিয়েছে। গত দু-বছর ধরেই আমরা তার সাক্ষী থেকেছি। এর মধ্যেই সিদ্ধার্থের মতো এক তরুণ প্রতিভার এমন আকস্মিক চলে যাওয়া। গোটা বলিপাড়া যেন অন্তর থেকে কেঁপে গিয়েছে এই সংবাদে।
আরও শুনুন: ‘নতুন স্ক্রিপ্টটা কতদূর?’, এখনও ঋতুপর্ণের চিত্রনাট্য শোনার অপেক্ষায় ‘দোসর’ প্রসেনজিৎ
ছটফটে তরুণ। ছোট পর্দার অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ। সিদ্ধার্থ শুক্লা। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন মডেল হিসেবে। তারপর ক্রমশ ছোট পর্দার অন্যতম পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। ‘বালিকা বধূ’ ও অন্যান্য বেশ কিছু সিরিয়ালে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আর সিরিয়ালের পরিচিত মুখ যেভাবে দর্শকের ড্রয়িং রুমের একজন হয়ে ওঠেন, তাই-ই যেন হয়ে উঠেছিলেন সিদ্ধার্থ। পাশাপাশি ছিল রিয়ালিটি শো নির্ভর জনপ্রিয়তা। বিগ বস সিজন-১৩ তে যখন তিনি অংশ নিয়েছিলেন, তখন থেকেই তাঁর জনপ্রিয়তা ব্যাপক বাড়তে থাকে। সেই সিজনে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। অনেকে বলেছিলেন, বিচারকরা নাকি কিঞ্চিৎ তাঁর প্রতি বায়াসড ছিলেন। শুনে দুঃখ পেয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমি কোন পথ ধরে হেঁটে এসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, তা তো সকলেই দেখেছেন। এখন এসব কথা শুনলে খারাপই লাগে। তবে সেই খারাপ লাগাকে না প্রশ্রয় দিয়েছেন সিদ্ধার্থ নিজে, না তাঁর ফ্যানরা। এই সেদিনও বিগ বসের নয়া সিজনে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বদ্রিনাথ কি দুলহনিয়া ছবিতে, বরুণ ধাওয়ানের সহ-অভিনেতা হিসেবেও কাজ করেছেন। কেরিয়ার গ্রাফ ছিল উপরের দিকেই। আচমকাই ছন্দপতন। আকস্মিক যেন পূর্ণচ্ছেদ নেমে গেল সবকিছুতেই।
আরও শুনুন: শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার স্মৃতি নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন প্রেমিকা ডিম্পল, শুনে আপ্লুত কিয়ারা
এই পূর্ণচ্ছেদ মানতে পারছেন না বলিপাড়ার বহু বিশিষ্ট মানুষই। এই তো সেদিন সিদ্ধার্থ টুইট করলেন। প্যারালিম্পিক্সের মঞ্চে ভারতের সোনাজয় এবং বিশ্বরেকর্ডে তিনি যে কতটা গর্বিত, সে কথাই জানিয়েছিলেন তরুণ অভিনেতা। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকদের। এরকম একজন তরতাজা মানুষ কী করে রাতারাতি নেই হয়ে যেতে পারে, তাই-ই যেন ভেবে পাচ্ছে না বলিপাড়া। হৃদরোগ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে সিদ্ধার্থকে। পড়ে আছে তাঁর স্বপ্ন। অসমাপ্ত কাজ। আর বলিপাড়ার জন্য থেকে গিয়েছে বিষাদঘন নিস্তবদ্ধতা। সত্যিই, মৃত্যুর তো কোনও বয়স হয় না। তার কাছে কেউ যায় আগে তো কেউ পরে। জীবন এমনই, এতখানি নশ্বর। সিদ্ধার্থ স্মরণে জেগে থাকে শুধু এই উপলব্ধিটুকুই।