গদির লড়াই চলুক যেখানে চলে। কিন্তু সে লড়াইয়ের ছাপ মনে পড়বে কেন! তাই বর্ষীয়ান বিরোধীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ চাইতেও দ্বিধা করেননি অমিতাভ বচ্চন। কবে ঘটেছিল এমন ঘটনা? শুনে নেওয়া যাক।
রাজনীতির টানাপোড়েনে অনেকসময়ই পিছনের বেঞ্চে গিয়ে বসে সৌজন্য। বয়স, সম্পর্ক, পদমর্যাদা সবকিছু ভুলে জেগে থাকে কেবল রাজনৈতিক বিরোধিতা। সে বিরোধিতা কেবল যুক্তি তর্কে শানায় না, একে অপরকে দাঁত নখ বের করে আক্রমণ করে সে জিততে চায়। সাম্প্রতিক কালে রাজনীতির ময়দানে নেতানেত্রীদের ঘৃণাভাষণে সেই কুৎসিত লড়াইটাই যেন দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সেটাই যে একমাত্র সত্যি নয়, কোনও কোনও ঘটনা সে কথাও বুঝিয়ে দেয় বইকি। আর সে কথা বোঝার জন্যই আমাদের ফিরে দেখতে হয় ইতিহাসকেও।
আরও শুনুন:
‘আঙুল ঠিক জায়গায় দিন’, অভিনেত্রীর হস্তমৈথুনের দৃশ্য ঘুরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচনী প্রচারও
রাজনীতির সেই পুরনো পাতাতেই ভেসে আসে অমিতাভ বচ্চনের ভোটযুদ্ধের কাহিনি। ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন বটে, কিন্তু সেখানেও তিনি শাহেনশাহ। যাঁর বিরুদ্ধে লড়াই, সেই বিরোধী প্রার্থীকে যেন তেন প্রকারেণ দুরমুশ করে দিতে চাওয়াই তো অধিকাংশ রাজনীতিবিদের লক্ষ্য থাকে। কিন্তু অমিতাভ সে পথে হাঁটেননি। বরং, খোদ বিরোধীর পায়ে হাত দিয়েই প্রণাম করেছিলেন তিনি।
সেটা ১৯৮৪ সাল। অমিতাভকে ঘিরে উত্তেজনায় ভেসেছিল এলাহাবাদ শহর। লোকসভার লড়াইয়ে এই আসন বরাবরই হেভিওয়েট তকমা পেয়ে এসেছে। বন্ধু রাজীব গান্ধীর অনুরোধে সেবার এলাহাবাদে কংগ্রেসের মুখ রাখতে নেমেছিলেন বলিউডের নায়ক অমিতাভ। তাঁর বিপরীতে ছিলেন হেমবতী নন্দন বহুগুণা। অমিতাভের ‘ডন’-এর সেই বিখ্যাত সংলাপ তখন তাঁকেই মানাত। রাজনীতির চত্বর বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল, বহুগুণাকে হারানো কেবল মুশকিলই নয়, না-মুমকিনও। তবে এলাহাবাদ দেখেছিল, কীভাবে নতুন রাজনীতিকের প্রচার মিছিলেও ভেঙে পড়ছে ভিড়। অমিতাভকে একবার দেখার জন্যই জনতা উদ্বেল। এমন সময়েই একদিন দুই প্রার্থীর কনভয় মুখোমুখি এসে পড়ে। সেসময় নিজের প্রচার গাড়ি থেকে নেমে পড়েন অমিতাভ। সোজা বহুগুণার পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। আশীর্বাদও চান।
আরও শুনুন:
সিনেমায় পাকিস্তানের নাম কেন? প্রশ্ন আমিরদের, বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন আদবানি
সৌজন্যের লড়াইটাতে সেদিনই জিতে গিয়েছিলেন অমিতাভ। তারপর অবশ্য সেবারের ভোটেও রেকর্ড মার্জিনে জেতেন তিনি। ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ভোট মিলেছিল তাঁর ঝুলিতে। ঘটনাচক্রে, সেই শেষবারই ওই আসন জিতেছিল হাত শিবির। তবে কংগ্রেসকে ভোট না দিক, কংগ্রেস প্রার্থী অমিতাভের এই সৌজন্যের কথা কিন্তু এখনও মনে রেখেছে এলাহাবাদ শহর।