সাজ নতুন হলেও, তার উপাদানে কোনও প্রাকৃতিক বস্তু ব্যবহার বা পুনর্ব্যবহার করছেন এই তারকারা। বরাবরই নিত্যনতুন ফ্যাশনের আইকন হয়ে উঠেছেন আলিয়া-সোনমরা। এবার পরিবেশের হাত ধরেই ফের নতুন সাজের সংজ্ঞা শেখালেন তাঁরা।
সাজে খামতি নেই। কিন্তু সে সাজ অনুরাগীদের মনেই দাগ কাটুক, পরিবেশের গায়ে যেন দাগ না কাটে। নতুন ধরনের সাজে এমনটাই বার্তা দিচ্ছেন বলিউডের নতুন প্রজন্মের নায়িকারা। সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের গাঁদাফুল দিয়ে রাঙানো শাড়ি পরেই দিওয়ালিতে সেজে উঠছেন আলিয়া ভাট, তো দিওয়ালির সাজে মাটি দিয়ে তৈরি ব্লাউজে মোহময়ী ফ্যাশনিস্তা সোনম কাপুর। কোনও জিনিসকে পুনর্ব্যবহার করলে পরিবেশের রসদে টান পড়ে কম। তাই সাজ নতুন হলেও, তার উপাদানে কোনও প্রাকৃতিক বস্তু ব্যবহার বা পুনর্ব্যবহার করছেন এই তারকারা। বরাবরই নিত্যনতুন ফ্যাশনের আইকন হয়ে উঠেছেন আলিয়া-সোনমরা। এবার পরিবেশের হাত ধরেই ফের নতুন সাজের সংজ্ঞা শেখালেন তাঁরা।
পরিবেশের রসদ সীমিত। নির্বিচার ব্যবহারে তা ফুরোবেই একদিন। অথচ মানুষ সেই কাজটিই করে চলেছে কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে। তার সাজের জন্যই হরিণ থেকে কুমির থেকে ময়ূর, এমন নানা প্রাণীদের চামড়া, শিং, পালকের চাহিদা আকাশছোঁয়া। ফ্যাশন বাজারে চড়া দামে বিকোয় বলেই চোরাশিকার বেড়েছে হুহু করে। মানুষকে সাজাতে গিয়েই বহু পশুপাখি বিপন্ন, এমনকি বিলুপ্তও হয়ে গিয়েছে। সেখানে রেশম, পশম, সিল্কের বদলে প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে বানানো পোশাক পরিবেশ সচেতনতার বার্তাই দিচ্ছে। পুরনো পোশাককেই আবার নতুন মোড়কে পরার চলও ইদানীং বেড়েছে, যাতে নতুন পোশাকটির জন্য আবার কোনও পশুপাখির প্রাণ না যায়। আলিয়া নিজে সে কাজ একাধিকবারই করেছেন। ইদানীং কালে সারা আলি খান, সোনাক্ষী সিনহা, অনন্যা পান্ডে-রাও সে পথে হেঁটেছেন।
আরও একটি বিষয় জড়িয়ে আছে এখানে। মানুষের কাজকর্ম যেভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে চারদিকে, তাতে পরিবেশের প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ সচেতন হচ্ছেন বইকি। ফলে দূষণ যত বাড়ছে, ততই চল বাড়ছে পরিবেশবান্ধব জিনিসপত্রের। পিছিয়ে নেই ফ্যাশন জগৎও। রকমারি পোশাক তৈরির ক্ষেত্রেই ইদানীং পোশাকশিল্পীরা পরিবেশবান্ধব বিষয়টির কথা মাথায় রেখেই কাজ করতে চাইছেন। কাপড়ের উপাদান থেকে শুরু করে রং, সমস্তটাই প্রকৃতি থেকে তৈরি হলে তাকেই পরিবেশবান্ধব পোশাক বলে। এই ধরনের পোশাক কাচলেও সেই জলে থাকে না কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক। সেই জল পরিবেশ দূষণ বাড়ায় না। পাশাপাশি ত্বকের জন্যও ভালো এই ধরনের পোশাক। সে কথা মাথায় রেখেই নতুন ধরনের পোশাক বানানোর দিকে নজর দিচ্ছেন শিল্পীরা। যেমন, আবু জানি – সন্দীপ খোসলার খাদি লেহঙ্গার সঙ্গে কর্নাটকের লাল মাটি ও মুলতানি মাটি দিয়ে বানানো ব্লাউজ দেখা গিয়েছে সোনমের গায়ে। আলিয়ার শাড়িটি অর্গ্যাঞ্জা, তবে তা ডাই করা হয়েছে প্রাকৃতিক রঙে। সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের গাঁদাফুল ব্যবহার করা হয়েছে এই কাজে। মন্দিরের বিপুল পরিমাণে ফুল যে এইভাবে পুনর্ব্যবহার করার পথ পাওয়া গেল, তাও তো কম কথা নয়। ফ্যাশনের পথে হেঁটে এভাবেই পরিবেশকে ভালো রাখার বার্তা দিচ্ছেন আলিয়া-সোনমরা।