রামায়ণের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এতটাই যে, ‘আদিপুরুষ’-এর সংলাপ লেখার সময় নাকি জুতো খুলে বসতেন তিনি। এমনটাই দাবি করেছিলেন মনোজ মুনতাসির। কিন্তু ছবির সংলাপে সেই শ্রদ্ধা আদৌ প্রকাশ পায়নি বলেই দাবি দর্শকদের। এই পরিস্থিতিতে এবার ক্ষমা চাইলেন ‘আদিপুরুষ’-এর সংলাপ রচয়িতা। কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘আদিপুরুষ’ ছবি নিয়ে গোড়ায় যতই উন্মাদনা থাকুক, সিনেমার প্রথম ট্রেলার রিলিজের পর থেকে ছবি মুক্তি পর্যন্ত বিতর্ক পিছু ছাড়েনি এ ছবির। বিশেষ করে ছবির সংলাপ নিয়ে উঠেছে আপত্তি। বিতর্কের জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। সেখানেও সহ-কাহিনিকার মনোজ মুনতাসির শুক্লাকে মামলায় পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাই কোর্ট। সিনেমাটির একাধিক দৃশ্য ও সংলাপ হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলেই মত আদালতের। সব বিতর্ক সত্ত্বেও এতদিন নিজের অবস্থানেই অনড় ছিলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত মনোজ মুনতাসির। কিন্তু এবার জোড় হাতে ক্ষমা চাইলেন তিনিই।
আরও শুনুন: ‘কোরান নিয়ে এমন সিনেমা বানিয়ে দেখান!’ ভাবাবেগের প্রশ্নে ‘আদিপুরুষ’ নির্মাতাদের ‘তোপ’ বিচারপতির
দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে মনোজ বলেছেন, “আমি মেনে নিচ্ছি যে আদিপুরুষ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। তার জন্য আমি হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছি।” এরপরে বজরংবলীর কাছে প্রার্থনাও করেছেন মনোজ। সনাতন ধর্ম এবং মহান জাতির সেবা করার জন্য শক্তি দিন বজরংবলী, এমনটাই প্রার্থনা তাঁর।
‘আদিপুরুষ’ ছবিতে হনুমান-সহ রামায়ণের পৌরাণিক চরিত্রগুলির মুখে যে সংলাপ দেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত কুরুচিকর বলেই দাবি করছিলেন দর্শকদের একটা বড় অংশ। লঙ্কাদহনের একটি দৃশ্যে হনুমানের সংলাপ ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল রীতিমতো। সেখানে ইন্দ্রজিৎকে রীতিমতো বাবার নাম টেনে এনে চলতি ধাঁচে কুকথা বলছেন হনুমান, এমনটা মেনে নিতে পারেননি দর্শকরা। বিশেষ করে এর নিন্দায় সরব হয়েছিল হিন্দু সংগঠনগুলি। যদিও এই সমালোচনায় তিনি আহত হয়েছেন বলেই দাবি করেছিলেন মনোজ। পালটা তিনি বারবার বলেছিলেন, রামায়ণের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধায় কোনও ঘাটতি নেই। সেই কারণেই এ ছবির কাজ করার সময় নিজের সেরাটা দিয়েছেন তিনি। এমনকি ছবির সংলাপ লেখার সময় তিনি জুতো খুলে বসতেন বলেও দাবি করেছিলেন মনোজ মুনতাসির। কিন্তু তাঁর এসব কথায় যে কোনও কাজ হয়নি, বিতর্কের আঁচ তাই বুঝিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চেয়ে নিলেন ‘আদিপুরুষ’ ছবির সহ-কাহিনিকার।