বীর সুভাষকে আটকানো যে তাঁদের কম্ম নয়, সে বোধহয় তখন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি ব্রিটিশরা। অবশ্য শুধু তারা কেন, ভারতের ইতিহাসে সুভাষচন্দ্র যে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত এরপর রাখবেন, তার অনুমান তখন প্রায় কেউই করে উঠতে পারেননি।
৩৮/২ এলগিন রোড। এই ঠিকানা আজ সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই পরিচিত। এ বাড়ি নেতাজির। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর। সেদিনও এই বাড়ির উপর নজর ছিল অনেকের। তখনও সুভাষচন্দ্র নেতাজি হননি। এই বাড়িতেই তখন তিনি গৃহবন্দি। ১৯৪০-এর জুলাই মাস থেকেই তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন। নভেম্বর মাস থেকে শুরু করলেন আমরণ অনশন। সাফ জানিয়ে দিলেন, আমি মৃত্যু বরণ করব, যাতে আগামী দিনে আমার দেশ বেঁচে থাকে। আমার দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। এদিকে অনশন চলাকালীন স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল সুভাষচন্দ্রের। ব্রিটিশ শক্তি পড়ল ফাঁপরে। ঠিক করা হল, সুভাষকে মুক্তি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভাবখানা এইরকম যে, একটু সুস্থ হলেই ফের বন্দি করা হবে। কিন্তু বীর সুভাষকে আটকানো যে তাঁদের কম্ম নয়, সে বোধহয় তখন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি ব্রিটিশরা। অবশ্য শুধু তারা কেন, ভারতের ইতিহাসে সুভাষচন্দ্র যে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত এরপর রাখবেন, তার অনুমান তখন প্রায় কেউই করে উঠতে পারেননি।
আরও শুনুন- জরুরি তলব চিত্তরঞ্জনের, এসেছে বিয়ের প্রস্তাব, মিলবে অনুদানও… কী জবাব সুভাষচন্দ্রের?
এলগিন রোডের বাড়ির উপর সর্বক্ষণ নজরদারি চালাত ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। সুভাষ কী খাচ্ছেন সে খবরও পৌঁছে যেত কর্তৃপক্ষের কানে। কিন্তু যা তাঁদের কানে পৌঁছায়নি, তা হল ওই অসুস্থ অবস্থাতেই দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা কষে ফেলেছেন সুভাষ। তবে তার শুরুটা ঠিক কবে? গৃহবন্দি হয়ে থাকার সময়ই কি? নাকি তার অনেক আগে থেকেই। সেই যখন তিনি জেলে বন্দি তখন থেকেই কি একটু একটু করে পরিকল্পনা ছকার কাজ চলছিল? হয়তো তাই-ই। এমন তথ্যও কিছু কিছু মেলে, যা থেকে বোঝা যায়, এই পরিকল্পনা সুভাষ অনেকদিন আগে থেকেই করছিলেন। গৃহবন্দি থাকার এই সময়টাই যে মোক্ষম সময়, তা একরকম স্থির করে ফেলেছিলেন সুভাষ। একদিন তাই ডাক পড়ল মিঞা আকবর শাহের। পেশোয়ার থেকে এলেন তিনি। ঠিক হল, কলকাতা থেকে সুভাষকে বের করে নিয়ে যাবেন শিশির বসু। আর পেশোয়ার পৌঁছানোর পর বাকি দায়িত্ব আকবরের। কিন্তু এমনি এমনি তো আর তিনি বেরিয়ে যেতে পারবেন না। ব্রিটিশের চোখে ধুলো দিতে চাই ছদ্মবেশ। শোনা যায়, আকবরকে সঙ্গে নিয়েই শিশির বসু কিনে এনেছিলেন ছদ্মবেশের পোশাক-আসাক।
শুনে নিন বাকি অংশ।