৯৩ বছরে পা রাখল পাথুরিয়াঘাটার কালীপূজা। চলতি বছরেই এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় জাদুঘর। মিনিস্ট্রি অফ ট্যুরিজম-এর ‘ইনক্রেডেবল ইন্ডিয়া’ প্রজেক্টেও উঠে এসেছে কলকাতার এই পুরোনো পুজোর কথা। ইতিহাসের পাতায় কেন গুরুত্বপূর্ণ একটি কালীপুজো? শোনালেন অর্পণ গুপ্ত।
একটি পুজো যখন ইতিহাসের অংশ হয়ে ওঠে, তখন সামগ্রিক ভাবেই সেই ঐতিহ্যের দিকে ফিরে তাকাতে হয়। এমন গুরুত্বই দাবি করে পাথুরিয়াঘাটার বড়কালীর পুজো। কেননা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের স্রোতও মিশেছে এই পুজোতেই।
আরও শুনুন: শক্তিপীঠের অন্যতম হিমাচলের জ্বালামুখী মন্দির, সাতটি শিখা এখানে নেভে না কখনও
এই ইতিহাস পরিক্রমায় আমাদের ফিরতে হবে অনেকটা পিছনে। ১৯০৮ সাল। বঙ্গভঙ্গের রেশ তখনও কাটেনি। তার মধ্যেই বাংলায় চলছে স্বদেশী আন্দোলন নিয়ে চাপানউতোর। ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে বিপ্লবীদের চোরাগোপ্তা লড়াই চলছেই। এই আবহেই উত্তর কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হল পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতি। উদ্যোক্তা অতুলকৃষ্ণ ঘোষ ও যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, অর্থাৎ বাঘা যতীন। আর জন্মলগ্ন থেকেই বিপ্লবী সংগঠনগুলির প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এই সমিতি।
এদিকে ১৯০৮ সালেই শুরু হল মুরারিপুকুর অস্ত্রাগার মামলা। আটক হলেন একাধিক বিপ্লবী। নিষিদ্ধ ঘোষণা হল অনুশীলন সমিতিও। বারীন্দ্রকুমার ঘোষের নেতৃত্বে যে সমিতি তখন বিপ্লবীদের আঁতুড়ঘর। শুধু অনুশীলন সমিতি নয়, বিপ্লবীদের সহায়ক অন্যান্য সমিতিগুলিকেও নজরবন্দি করে পুলিশ। ফলে পাথুরিঘাটা ব্যায়াম সমিতির কার্যকলাপও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও শুনুন: EXCLUSIVE: তেনারা এলেন, দেখলেন, হেসেও উঠলেন… শুনে নিন ভূতের হাসি
১৯২৪ সালে ক্লাবের কিছু তরুণ সদস্য পুনরায় শুরু করলেন কাজ। পুনঃপ্রতিষ্ঠা হল ক্লাবের। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় ফের নতুন লড়াই। আর এই আবহেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শক্তির আরাধনা করার উদ্যোগ নিল পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতি। ১৯২৮ সালে ক্লাবের সভ্যদের উদ্যোগে শুরু হল পুজো। দু’বছর পর, ১৯৩০ সালে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন কলকাতার তৎকালীন মেয়র নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর আমলে আরও জাঁকজমক করে শুরু হল পুজোর মহড়া। তিনের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করে সমকালীন বাংলার অভিজাত মহল। লালগোলার মহারাজা, নাটোরের মহারাজ, বাবু মন্মথ নাথ ঘোষ- সকলেই হয়ে উঠলেন পুজোর পৃষ্ঠপোষক।
শুনে নিন বাকি অংশ।