সোনার দুর্গাবাড়ি নামেই এলাকায় পরিচিত এই বাড়ি। দুর্গাপুজোয় শহর পরিক্রমা করতে বেরিয়ে অনেকেই হয়তো দর্শন করেছেন বেহালার এই দেবীমূর্তিকে। কিন্তু জানেন কি, কীভাবে এক রাতের মধ্যেই শুরু করা হয়েছিল এই পুজো?
এই বাড়িতে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন জগৎরাম মুখোপাধ্যায়। বংশের আদি পুরুষ হলেও তিনি কিন্তু বেহালার আদি বাসিন্দা ছিলেন না। কী করে তিনি এখানে এসে থিতু হলেন, সেই ঘটনাটা প্রায় রহস্যগল্পের মতন।
আরও শুনুন: মা নাকি নাচ দেখতেন তাঁর বাড়িতে, কলকাতায় অকালবোধন করলেন নবকৃষ্ণ দেব
জগৎরামের বাড়ি ছিল বাংলাদেশের যশোরে। বল্লাল সেনের সমসাময়িক শ্রীহর্ষ দেবের বংশধর জগৎরাম। যশোর থেকে এসে মুখোপাধ্যায় পরিবার চাণকে বসবাস শুরু করেন, বর্তমানে যে জায়গার নাম ব্যারাকপুর। সেখানে বিয়ে থা করে দিব্যি সংসারও করছিলেন জগৎরাম। কিন্তু তাঁর বয়স যখন বছর তিরিশ, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একদিন তাঁকে মৃত মনে করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। শোনা যায়, ভাসতে ভাসতে তিনি আদি গঙ্গার তীরে একটি জায়গায় পৌঁছন। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু প্রাণে বাঁচলেও, নিজের বাড়িতে আর ফেরা হল না জগৎরামের। সেকালের নিয়ম ছিল, অন্তর্জলির জন্য একবার যাকে ঘর থেকে বের করা হয়েছে, কখনও কোনও কারণেই আর ঘরে ফেরানো যাবে না তাকে। অতএব, ওই অঞ্চলেই ডেরা বাঁধলেন জগৎরাম। বেহালার বর্ধিষ্ণু পরিবার ছিল হালদার পরিবার। কুলীন ব্রাহ্মণ জগৎরামের সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়ে দিয়ে তাঁকে পাকাপাকিভাবে বেহালায় বাস করালেন অযোধ্যা হালদার। ক্রমে ক্রমে চার ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আবার জমজমাট সংসার পাতলেন জগৎরাম।
আরও শুনুন: দুর্গাপুজোয় চমক দিত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, গয়না-সহ ভাসান হত দেবীর
জগৎরামের কিশোরী কন্যা জগত্তারিণী একবার অষ্টমীতে এসেছে মামার বাড়িতে। দুর্গাপুজোর খিচুড়ি ভোগ খাওয়ার জন্য। চার ভাইয়ের সবচেয়ে ছোট বোন, বাবার একমাত্র মেয়ে জগত্তারিণী। মামার বাড়ির কোনও আচরণ দেখে তার মনে হয়েছিল এ যেন তার প্রতি অবহেলা। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ফিরে এসে বাবার কাছে জেদ ধরল মেয়ে। তাদের বাড়িতেই করতে হবে দুর্গাপুজো, আর তা হবে এই বছরেই।
শুনে নিন বাকি গল্প।