দেশজোড়া খ্যাতি, তবু মনখানা ছিল শিশুর মতো। ঠাট্টা-মজায় ভরিয়ে তুলতেন স্টুডিয়ো। কেমন ছিল আপনার প্রিয় গায়কের ছোটবেলা?
এ যেন সেই সত্যিগানের গুপী গাইন! যে গান ধরলে একদিন নাকি গ্রামশুদ্ধ লোক রে রে করে তেড়ে আসত। আর সেই গুপীটি কে জানেন? আভাস কুমার গাঙ্গুলি, অর্থাৎ কিশোর কুমার। শুনতে আশ্চর্য হলেও সত্যি, যে, একদিন নাকি আভাসের হেড়ে গলার গান শুনে কানের পর্দা ফাটার উপক্রম হত বাড়ির লোকের। কেউ আবার ছোট্ট সেই ছেলেটির পিছনে তেড়ে যেত গান বন্ধ করানোর জন্য। কেউ আবার সেই গানের গুঁতো থেকে বাঁচতে পালিয়ে রেহাই পেতেন।
ছেলেটি কিন্তু নাছোড়বান্দা। গান সে গাইবেই।
এসব গল্প যখনকার, খান্ডওয়ারের বাড়িতে কিশোর কুমার তখন নেহাত শিশু। তাঁর দুষ্টুমিতে নাজেহাল হয়ে উঠত পাড়া, বাড়ির লোকেরাও। ভারতীয় সংগীতের কিংবদন্তির ছোটবেলা জুড়ে এরকম অসংখ্য মজার কিস্সা। তখন কিশোর কুমার ক্লাস ফাইভের ছাত্র। স্কুলে চলছে অঙ্ক পরীক্ষা। কিন্তু সে পরীক্ষায় একটাও উত্তর দিতে পারছিলেন না তিনি। এমন হাল হলে সাধারণত অন্য ছেলেমেয়রা কী করে? দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কিন্তু কিশোর তো কিশোর-ই। গোটা খাতা জুড়ে লিখে ফেললেন নানা মজার লেখাপত্তর, কবিতা। হিজিবিজি নকশাও চলল, আর সেই সঙ্গে আঁকলেন মাস্টারমশাইয়ের একটি কার্টুন।
আরও শুনুন: হার মেনেছে শাসকের রক্তচক্ষু, জনতার ভালবাসায় চিরকালীন কিশোরের গান
বড় হয়েও ছোটবেলার এই মনটি হারাননি কিশোর কুমার। যথেষ্ট খ্যাতনামা হয়ে উঠলেও যেন তাঁর ছেলেমানুষি ছেড়ে যায়নি তাঁকে। তাই মুম্বইয়ে নিজের ফ্ল্যাটের নেমপ্লেটে নিজের নামের বদলে তিনি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন ‘মেন্টাল হসপিট্যাল’ লেখা সাইনবোর্ড। শুধু তাই নয়, গান রেকর্ড করার সময়েও তাঁর দুষ্টু বুদ্ধিতে নাস্তানাবুদ হতেন তাঁর সহগায়করা। কিশোর কুমারের নানা অঙ্গভঙ্গি এবং রসিকতায় হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরতেন লতা মঙ্গেশকরের মতো মানুষও।
আরও শুনুন: আইসক্রিম খেতেই দাঁত শিরশির! গরম করে দেওয়া হোক, দাবি ছোট্ট সত্যজিতের
কিশোর কুমারের হাসিঠাট্টার প্রাণবন্ত জীবনের গল্পই যেন বলে দেয়, নিজের ভিতরের ছেলেমানুষিকে আজীবন আগলে রাখা চাই। সমস্যা যাই হোক না কেন, তা থেকে পরিত্রাণের উপায় বাতলাবে আপনার শিশুমনই। তাই শিশুদিবসে শুধু বাড়ির খুদেটির নয়, সেলিব্রেশন হোক আপনার মধ্যে লুকিয়ে থাকা শিশুসুলভ মনটিরও।