দেশের প্রথম মোবাইল কলটি বাস্তব করে তোলার নেপথ্যের কাণ্ডারি ছিলেন বি কে মোদি। জানা যায়, ১৯৯৪ সালে জ্যোতিবাবু তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন যে, দেশের প্রথম মোবাইল কলটি যেন কলকাতা থেকেই হয়। বছর গড়িয়ে তা সত্যি হয়েছিল।
নিউ ইয়ার মানেই মোবাইলের ডাকঘরে চলে আসা অযুত শুভেচ্ছাবার্তা। ইন্টারনেটের দৌলতে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে থাকা বন্ধুর সঙ্গে একযোগে চলছে নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন। ফোন করে জানানো হচ্ছে শুভেচ্ছা। আর এই মোবাইল কলের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে বাংলার নাম। কেননা দেশের প্রথম মোবাইল কল এই বাংলা থেকেই।
প্রায় তিন দশক আগের কথা। মোবাইল যে তখন জীবনে এমন অপরিহার্য হয়ে উঠবে আঁচ করা যায়নি। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব আসন্ন হয়ে উঠেছিল। গোটা বিশ্বের নিরিখেই সে কথা বলা যায়। আর তার আঁচ এসে পড়ছিল এই দেশেও। সারা দেশ তখন মোবাইল প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর বেশ আশ্চর্যজনক ভাবেই সেই ইতিহাসের মাইলফলকে থেকে গিয়েছে বাংলার নাম। এমনিতে, এক কালে বলা হত, বাংলা আজ যা ভাবে, গোটা দেশ তা ভাবে আগামিকাল। শিক্ষা-সংস্কৃতি, জাগরণে বাংলার অগ্রণি ভূমিকার সাক্ষী থেকেছে দেশের ইতিহাস। কালে কালে গঙ্গা-যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। তবে, শেষ পর্যন্ত মোবাইল রেভলিউশনেও কিন্তু এগিয়ে বাংলাই। কেননা, দেশের প্রথম মোবাইল কলটি করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ থেকে, করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু।
দেশের প্রথম মোবাইল কলটি বাস্তব করে তোলার নেপথ্যের কাণ্ডারি ছিলেন বি কে মোদি। জানা যায়, ১৯৯৪ সালে জ্যোতিবাবু তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন যে, দেশের প্রথম মোবাইল কলটি যেন কলকাতা থেকেই হয়। বছর গড়িয়ে তা সত্যি হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের ৩১ জুলাই। রাইটার্স বিলিডিং থেকে দেশের প্রথম মোবাইল কল করলেন জ্যোতি বসু, তৎকালীন কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রীকে। অর্থাৎ কলকাতা থেকে দিল্লিতে গিয়েছিল সেই কল। সেই সময় ইনকামিং আর আউটগোয়িং, দুই ক্ষেত্রেই প্রতি মিনিটে কলের মূল্য ছিল প্রায় ৮.৪০ টাকা। ব্যস্ত সময় বা পিক আওয়ারে হলে এই মূল্য বেড়ে দ্বিগুণ হত প্রায়। সেদিনের সেই ঐতিহাসিক কলেই দেশের মোবাইল বিপ্লবের সূচনা বলা যায়।
তিন দশক পেরিয়ে শুধু কথা বলা নয়, মোবাইল প্রযুক্তি প্রায় আমাদের অগ্রগতির চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোবাইল বাদ দিয়ে দৈনন্দিন জীবন ভাবা সম্ভবই নয়। দিনে দিনে প্রযুক্তি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে মোবাইলের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক অন্য খাতে গড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর সেই ঐতিহাসিক পথচলার সূচনাফলকটি থেকে গিয়েছে এই বাংলাতেই।