আমিষ-নিরামিষের দ্বন্দ্বটা আজকের নয়। বাড়িতে মা-ঠাকুমারা প্রায়শই বলে থাকেন, একটু নিরামিষ খাওয়া ভাল। যদিও তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশই ছোটে মাছ-মাংসের টানে। অন্তত কলকাতায় তো বটেই। কথাতেই আছে মাছে-ভাতে বাঙালি! তবে দুনিয়া জুড়ে নতুন ট্রেন্ড বলছে ভেগান হওয়ার কথা। বাঙালির পাতের মাছ মাংস ডিমের মতো প্রাণীজ প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের কথা। সেলেব থেকে খেলোয়াড়, অনেকেই ঝুঁকছেন ভেগান-ভোজের দিকে। কতটা সুফল এই ভেগান খাওয়াদাওয়ার, অসুবিধাই বা কী কী? আসুন, শুনে নিন।
বৈচিত্র্যের দেশ ভারতবর্ষ। এখানে প্রতিটা শহরে, প্রতিটা রাজ্যে এমন কি প্রতিটা বাড়ি ভেদে আলাদা হয়ে যায় জীবন, যাপন, বেশভুষা, খাওয়া-দাওয়া। এখানে নিরামিষ আহারের যেমন চল, তেমনই আমিষ খাওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে যথেষ্ট স্বাধীনতা। তবে ইদানিং প্রাণীজ প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে অনেকেই বেছে নিয়েছেন উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। প্রশ্ন উঠছে, মাছ মাংসের বিকল্প কি সত্যিই হয়ে উঠতে পারে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন?
আরও শুনুন: Soybean : মাছ-মাংসের বদলে কতটা পরিমাণ সয়াবিন মেটাতে পারে প্রোটিনের চাহিদা?
মাছ, মাংস-ডিমের বদলে, ভেগান প্লেটে উঠে আসছে সয়া চাপ, মাশরুম, টোফু, গমজাত বা গ্লুটন থেকে পাওয়া ‘মক মিট’। একই রকম গড়ন, স্বাদেও কাছাকাছি। এখন তো এই ধরনের ভেগান মাংস মিলছে রেস্তরাঁতেও। এ ছাড়া পিৎজা, বার্গার থেকে শুরু করে ট্র্যাডিশনাল খানাপিনা তো আছেই। শুধু যে মাছ-মাংস বাদ দেওয়া তা কিন্তু নয়, ভেগান মানে তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে প্রাণীজাত যা কিছু সবই। তার মধ্যে রয়েছে দুধ, ছানা, পনির, সন্দেশ-রসোগোল্লা থেকে শুরু করে মধুও।
আরও শুনুন: ওজন বাড়ার ভয়ে ঘি খাচ্ছেন না! হিতে বিপরীত হচ্ছে না তো?
তথ্য বলছে, মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই মিশ্র খাওয়াদাওয়ায় অভ্যস্ত। রোজের পাতে নিরামিষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে থাকে মাছ-মাংস-ডিম। তবে বিশ্বের নিরিখে ভারতে মাংস খাওয়ার হার কিন্তু বেশ নিচের দিকেই। জীবনযাপন, শরীর বা কোনও সময় ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেও অনেকে আমিষ ছাড়েন। তবে অতিমারি ও লকডাউন পর্বে অনেকেই বিভিন্ন কারণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের দিকে ঝুঁকেছেন। কেউ কেউ শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য, কেউ বা আবার বাজারে জিনিসপত্র অমিল হওয়ার কারণেও। এর পাশাপাশি মনে রাখা দরকার, ভারতের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই ভুগছেন প্রোটিনের অভাবে। আর প্রতিদিনের ডায়েটে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা বিন্দুমাত্র ভাবিতও নয় ৯৩ শতাংশ। এ নিয়ে বিস্তর প্রচার চললেও লাভ সেরকম হয় না। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে বেছে নেওয়ার এটাও একটা বড় কারণ। এর ফলে নিরামিশাষীদের শরীরেও প্রোটিনের ঘাটতি কমবে। বিকল্প প্রোটিন ও খাবারের সন্ধান চালাচ্ছে ইদানীং বহু দেশই। পরিবেশকে বাঁচাতে হাতে উঠে আসছে বিভিন্ন বিকল্প ব্যবস্থা। পাল্লা দিয়ে উন্নতি করছে ফুড টেকনোলজি। ফলে অনেক ধরনেরই নতুন খাবার খাতা খুলছে আমজনতার প্লেটে।
বাকি অংশ শুনে নিন।