ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন এক মহিলা, ভিনদেশে। ফিরলেন দোকা হয়ে। না না, বিয়ে-থা করেননি। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন এক অতিথিকে। সেই অতিথি পেরিয়ে এসেছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কিলোমিটার পথ। তবে বিমানে কিন্তু ভাড়া দিতে হল একজনেরই। কী করে সবার চোখ এড়িয়ে ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই অন্য দেশে এসে পড়লেন সেই নতুন অতিথি? কে সেই অতিথি? কীভাবেই বা তিনি এসে পড়লেন নতুন দেশে? শুনে নিন।
ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের হোয়াইট বে শহরের বাসিন্দা রাচেল বন্ড। রোদ্দুর ঝলমলে দারুণ ছুটির দিনগুলো আমেরিকায় কাটিয়ে অবশেষে বাড়ি ফেরার দিন ঘনিয়ে এল। ইংল্যান্ডে আপাতত শীত এসে গিয়েছে। সময় মতো উড়ানে চেপে দেশে ফিরলেন বছর পঞ্চাশের রাচেল। তখনও জানতেন না সঙ্গে করে আরেক জনকে এই দেশে নিয়ে এসেছেন তিনি। তাও আবার বিনা ভিসায়, বিনা পাসপোর্টে।
আরও শুনুন: বিশ্ব উষ্ণায়নে উষ্ণতা হারাচ্ছে সম্পর্ক, ডিভোর্সের পথে হাঁটছে সামুদ্রিক আলবাট্রস-রাও
শেষমেশ জানতে পারলেন তাঁর মায়ের চিৎকারে। ৮৪ পেরিয়েছেন তিনি। রাচেল তো প্রথমে ভেবেছিলেন, মায়ের বয়স হয়েছ, কী দেখতে কী দেখেছেন! চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন হল ঘরের মেঝেতে অতিথিকে ঘুরে বেড়াতে দেখে। অতিথি আর কেউ নয়, একটি সবুজ টিকটিকি। অবশ্য এই প্রাণীটিকে আমেরিকার গিরগিটিও বলে থাকেন অনেকে। উজ্জ্বল সবুজ রং, গলার কাছটা লালচে। সে এল কোথা থেকে?
না, রাচেলের স্যুটকেসে চেপেই সে এসে পড়েছে ইংল্যান্ড। কী ভাবে সেটি স্যুটকেসে ঢুকল, কীভাবেই বা এতটা দীর্ঘ পথ ওই স্যুটকেসে বেঁচে রইল ছোট্ট প্রাণীটি? ৭ হাজার ২৫০ কিলোমিটার পথ। মুখের কথা নাকি! এইসবই সাত পাঁচ ভেবে অবাক হচ্ছেন রাচেল।
আরও শুনুন: মায়ের খুনের বদলা, ছোট্ট প্রাণীটি কী করেছিল জানেন?
টিকটিকিটির জন্য অবশ্য একটু দুঃখও হচ্ছে রাচেলের। বেচারা ফ্লোরিডার অমন রোদ্দুর ঝলমলে আবহাওয়া থেকে দুম করে এসে পড়েছে ইংল্যান্ডের ঠান্ডায়! তবে টিকটিকি বাবাজির কিন্তু তাতে তেমন হেলদোল নেই। তড়াক করে লাফিয়ে একবার বালিশের তলায় লুকিয়ে পড়ছে তো একবার তরতরিয়ে উঠছে ঘরের দেওয়ালে। ‘রয়াল সোসাইটি ফর দ্য ক্রুয়েলিটি টু অ্যানিমেলস’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে ইংল্যান্ডে। তাদেরকে খবর দিয়েছেন রাচেল। তাঁরাই এসে টিকটিকিটিকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছেন। তবে সেটাকে আমেরিকাতে ফেরানোর সম্ভাবনা কম। বরং ইংল্যান্ডেরই কোনও চিড়িয়াখানায় রাখা হবে সবুজ-রঙা ওই টিকটিকিটিকে।