বালির শহর। প্রাচীন সব পিরামিড আর তার ভিতরে গা ছমছমে মমি। মিশরের এই মমিদের যতটা প্রাচীন আপনারা ভাবছেন, জানেন কি তার চেয়েও ঢের বেশি বয়স এদের! হ্যাঁ, তেমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকেরা। অন্তত চার হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশর শিখে গিয়েছিল মমি বানানোর প্রক্রিয়া। শুনে নিন মিশরের সবচেয়ে বয়স্ক মমির গল্প।
মৃত্যুর পরেও থেকে যাওয়া। প্রিয়জনকে রেখে দিতে চাওয়া। সেই স্মৃতির টানে একদিন মৃতদেহ সংরক্ষণের উপায় খুঁজে বের করেছিল মানুষ। মৃতদেহের মাথা থেকে জলীয় ঘিলু অংশ ও শরীর থেকে নাড়িভুড়ি, যকৃত, বৃক্কের মতো পচনশীল অংশগুলিকে বের করে শরীরটাকে নুন মাখিয়ে ভাল মতো শুকিয়ে ফেলা হত। এর পর ওষুধ মাখানো কাপড় দিয়ে ভাল করে জড়িয়ে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা হত দেহগুলিকে। সেই সব মমিই আজও সংরক্ষণ করা রয়েছে মিশর-সহ পৃথিবীর আনাচে কানাচে।
আরও শুনুন: হ্রদের বরফ গলে যেতেই হাড় হিম করা দৃশ্য… কী দেখা গেল সেখানে?
আজ থেকে প্রায় ৩ হাজার বছর আগে মিশরের প্রথম মমিটি পাওয়া যায় বলে এতদিন মনে করা হত। পরে চিনচরো মমিকেই সুপ্রাচীন মমি বলে জানান নৃতত্ত্ববিদেরা। সেগুলো প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব পাঁচ হাজার সালের সময়কার নিদর্শন। প্রথম প্রাকৃতিক ভাবে মমি হয়ে যাওয়া মৃতদেহটি মেলে খ্রিস্টপূর্ব সাত হাজার সালেরও আগে। আটাকামা মরুভূমি থেকে উদ্ধার হয়েছিল সেটি।
মিশরীয়রা যবে থেকে মমি বানানোর পদ্ধতি শেখে, তার চেয়ে প্রায় এক হাজার বছর আগে থেকেই মিশরে মৃতদেহকে মমি বানিয়ে রাখার চল ছিল। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন একদল গবেষক।
সম্প্রতি খুয়ি নামে এক ব্যক্তির মমি খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। মনে করা হচ্ছে খ্রিস্টপূর্ব আড়াই থেকে দু-হাজার সাল, এই সময়টায় প্রাচীন মিশরে থাকতেন খুয়ি। সমাজের বেশ গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন তিনি। সাক্কারায় প্রায় চার হাজার বছর পুরনো একটি সমাধির উপরে হায়রোগ্লিফিকসে তাঁর পরিচয় খোদাই করাছিল।
আরও শুনুন: মাটির নীচে ঘুমিয়ে ৪৫০০ বছরের প্রাচীন সূর্যমন্দির, অবশেষে মিলল খোঁজ
তার মমিটি তৈরিতে যে ধরনের দামী আঠা এবং উচ্চমানের ব্যান্ডেজ ও প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে, তা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন গবেষকেরা। এতদিনের প্রামাণ্য তথ্য তো বলত, খুয়ির আমলের অন্তত এক হাজার বছর পরে সেসব জিনিস ও প্রযুক্তির আবিষ্কার হয়েছে।
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ইজিপ্টোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সালিমা ইকরাম জানিয়েছেন, এতদিন মনে করা হত প্রাচীন মিশরে মমি বানানোর প্রক্রিয়া ততটাও উন্নত ছিল না। তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই সহজ, মাথার ভিতরের জলীয় অংশ বা শরীরের ভিতরের পচনশীল অংশগুলি বেশিরভাগ সময়েই বের করে নেওয়া হত না। ফলে সব সময় সফলও হত না মমি বানানোর প্রক্রিয়া। সে সময় মৃতদেহের ভিতরের থেকে বাইরের সাজগোজেই বেশি নজর দেওয়া হত।
বাকি অংশ শুনে নিন।